জান্তা সরকার হটাতে মিয়ানমারে লড়ছেন এক কবি, গঠন করেছেন বিদ্রোহী সংগঠনও
কলম ছেড়ে হাতে তুলে নিয়েছেন অস্ত্র। কবি থেকে দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য সশস্ত্র বিদ্রোহীদের কমান্ডার হয়েছেন। একসময় যুদ্ধ বিরোধী হলেও এখন জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে নিজেই যুদ্ধে নেমেছেন মিয়ানমারের একসময়ের আলোচিত কবি মাং সাউংখা’র। রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি করেছে মিয়ানমারের সামরিক সরকার। খবর আল জাজিরার।
২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানে অং সান সু চি ক্ষমতা হারানোর পর থেকেই জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে সরব হন মাং সাউংখা। বিভিন্ন বিক্ষোভেও তিনি নেতৃত্ব দেন। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে সামরিক বাহিনীর আগ্রাসনে প্রাণ যায় অন্তত দুই হাজার বিক্ষোভকারীর। আহত আর গ্রেফতার হয় আরও বিপুল মানুষ। রাষ্ট্র বিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে মাং সাউংখার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হলে সীমান্তে পালিয়ে সশস্ত্র প্রতিরোধের সিদ্ধান্ত নেন ৩০ বছর বয়সী এই কবি। সেখানে বিদ্রোহী সংগঠন বামার পিপলস লিবারেশন আর্মি (বিপিএলএ) গঠন করেন তিনি।
এ নিয়ে মাং সাউংখা বলেন, হাতে অস্ত্র তুলে নিয়েছি, কারণ আমাদের আর কোনো উপায় ছিল না। এমন জীবন কেউই চায় না। দুর্ভাগ্যবশত এই পথে যেতে বাধ্য হয়েছি আমরা। তবে এখন যাই ঘটুক না কেনো, আমিসহ আমার দলের আর কারোরই স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাওয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই।
হাতে অস্ত্র তুলে নিলেও কবিতার প্রতি এখনও ভালোবাসা অটুট মাং সাউংখা’র। অবশ্য সময়ের অভাবে কবিতা তেমন লেখার সুযোগ হয় না তার। এখন তার স্বপ্ন, দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা। এরপরই ফের হাতে তুলে নেবেন কলম।
মাং সাউংখা বলেন, সবসময়ই সাথে আমি কবিতার বই রাখি। কিন্তু আজকাল পড়ার খুব একটা সময় পাই না। কবিতা লেখার ইচ্ছে থাকলেও তার জন্য সময় বের করা এখন কঠিন।
২০১৫ সালে বেশ আলোচনায় উঠে আসেন এই কবি। ফেসবুকে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি থেইন সেইনকে নিয়ে ব্যাঙ্গাত্মক কবিতা লিখে ব্যাপক জনপ্রিয়তাও পান। এ ঘটনায় অবশ্য ছয়মাস কারাভোগও করতে হয়েছে তাকে। এরপরই রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে বাড়ে তার অংশগ্রহণ।