নির্বাচনে পরাজিত হয়েই সন্ত্রাসী হারিছ বাহিনীর তান্ডব
বরিশালের গৌরনদী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পরাজিত হয়েই রবিবার দিবাগত রাত সাড়ে নয়টার দিকে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী হারিছুর রহমানের নেতৃত্বে তার সন্ত্রাসী বাহিনীর ২/৩শ’ ক্যাডাররা সশস্ত্র অবস্থায় হামলা চালিয়ে ১২টি বসত ঘর ভাঙচুর করেছে।
এসময় নারীদের শ্লীলতাহানীসহ আমিনুল ইসলাম মিরাজ মল্লিক নামের এক যুবককে কুপিয়ে মারাত্মক জখম, প্রতিবন্ধী এক তরুনীসহ ওইসব বাড়ির প্রায় ১০জন নারী-পুরুষকে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে। হামলাকারীরা ১৫টি মোটরসাইকেল, দুইটি মিনি ট্রাক, একটি ট্রলি ভাঙচুর করেছে।
হামলার ঘটনাটি ঘটেছে গৌরনদী পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোঃ ইখতিয়ার হোসেন হাওলাদারের দিয়াশুরস্থ গ্রামের বাড়িতে। একইরাতে হামলাকারীরা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খোকন মল্লিকের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে।
গুরুত্বর আহত আমিনুল ইসলামকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সূত্রমতে, খোকন মল্লিক ও ইখতিয়ার হাওলাদার বিজয়ী উপজেলা চেয়ারম্যান মনির হোসেন মিয়ার একনিষ্ঠ কর্মী ছিলেন। একারণেই পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী হারিছুর রহমান তার সশস্ত্র সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে নারকীয় তান্ডব চালিয়েছে।
একইদিন সন্ধ্যায় আশোকাঠি মোল্লাবাড়ি নামক এলাকায় বসে বিজয়ী চেয়ারম্যান মনির হোসেন মিয়ার ভাইয়ের ছেলে সাবেক পৌর কাউন্সিলর গোলাম আহাদ মিয়া রাসেলকে মারধর করে আহত করেছে হারিছ বাহিনীর প্রধান ক্যাডার দেলোয়ার হাওলাদার ও সজিব হোসেন জিয়া।
অপরদিকে ওইদিন রাতেই পরাজিত নারী ভাইস চেয়ারম্যান শিপ্রা রানীর বাসায় অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। শিপ্রা রানী অভিযোগ করেন, হারিছ বাহিনীর ক্যাডাররা তার বাসায় অগ্নিসংযোগ করেছে।
বিজয়ী চেয়ারম্যান মনির হোসেন মিয়ার নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ইউপি চেয়ারম্যান সৈকত গুহ পিকলু অভিযোগ করেন, তাকে হত্যার জন্য হারিছুর রহমান পাশ্ববর্তী বাবুগঞ্জের ঠাকুরমল্লিক গ্রামের একসময়ের দুর্ষর্ধ সর্বহারা ও জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মালেক সিকদার ও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগি কিলার মাসুমকে (ক্রসফায়ারে নিহত বাবুল সরদারের ছোট ভাই) ভাড়া করেছে।
হামলা ভাঙচুরের খবর পেয়ে রাতেই পৌর কাউন্সিলরের বাড়িতে ছুটে যান নবনির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান মনির হোসেন, সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান সৈয়দা মনিরুন নাহার মেরী, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমানসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা। তারা আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে সন্ত্রাসী হারিছুর রহমানসহ তার ক্যাডারদের গ্রেপ্তারের জন্য প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। অন্যথায় কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলেও হুমকি দিয়েছেন।
বিজয়ী চেয়ারম্যান মনির হোসেন মিয়া বলেন, ভোটে পরাজিত হয়েই হারিছুর রহমান আমার কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা চালিয়ে বসতবাড়িতে লুটপাট, অগ্নিসংযোগ করছে। তাই অনতিবিলম্বে হারিছকে গ্রেপ্তার করা না হলে গৌরনদীর আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত হারিছুর রহমানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তা বন্ধ থাকায় কোন বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
অপরদিকে হামলা ও ভাঙচুরের খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন থানা পুলিশসহ নির্বাচনের টহলে থাকা বিজিবি সদস্যরা।