১ সেপ্টেম্বর থেকে মনোনীত প্রার্থীদের সবুজসঙ্কেত দিবে আওয়ামী লীগ

১ সেপ্টেম্বর থেকে মনোনীত প্রার্থীদের সবুজসঙ্কেত দিবে আওয়ামী লীগ

আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে যারা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হবেন, তাদেরকে সবুজসঙ্কেত দেওয়ার কাজ শুরু হবে আগামী মাস থেকেই। আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২২ তারিখে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যাচ্ছেন ব্রিকস সম্মেলনের জন্য। সেখান থেকে ফিরে এসেই তিনি মনোনয়নের আনুষ্ঠানিকতা শুরু করবেন। ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগ অন্তত ৬টি জরিপ কাজ পরিচালনা করেছে এবং এই সমস্ত জরিপের ভিত্তিতে যারা জনপ্রিয়, তাদেরকেই মনোনয়নের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। 

বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, আওয়ামী লীগ সভাপতির হাতে সবগুলো জরিপ রিপোর্ট এসে পৌঁছেছে এবং জরিপ রিপোর্টগুলোর বিচার-বিশ্লেষণ করে বিভিন্ন স্থানের প্রার্থীদের আনুষ্ঠানিকভাবে সবুজসঙ্কেত দেওয়া হবে; তারা যেন নির্বাচনের মাঠে গিয়ে প্রচারণা করতে পারে। আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেছেন, আগাম মনোনীত প্রার্থীদের সবুজসঙ্কেত দেওয়া হবে এই কারণে যে, তারা যেন দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং বিভক্তি মীমাংসা করার একটা সময় পান। কারণ আওয়ামী লীগে এবার মনোনয়নে ইচ্ছুক প্রার্থীর সংখ্যা অনেক। প্রতিটি আসনেই চার থেকে পাঁচজন নূন্যতম প্রার্থী রয়েছেন। এদের মধ্যে অন্তত, দুই তিন জন সমান জনপ্রিয়। এরকম বাস্তবতায় আওয়ামী লীগ যাদেরকে প্রার্থী দিবে, স্বাভাবিকভাবেই তাদের বিরোধী একটা পক্ষ দাঁড়িয়ে যাবে। আওয়ামী লীগের কৌশলগত অবস্থান হচ্ছে, যদি আওয়ামী লীগ আগে থেকেই প্রার্থীতা ঘোষণা করে, সেক্ষেত্রে যারা বিদ্রোহী এবং যারা দলের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে পারে, তাদেরকে নিষ্ক্রিয় করা সম্ভব হবে। এর ফলে তারাও নির্বাচনের সময় নির্বাচনের মাঠে সক্রিয় থাকবেন। আর এ কারণেই আগামী মাসের শুরু থেকেই যারা মনোনয়ন পাচ্ছেন, তাদেরকে আওয়ামী লীগ সভাপতি নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করার জন্য বার্তা দিবেন। 

তবে কিছু কিছু আসন রয়েছে, যে আসনগুলোতে আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচন করলে মহাজোটের অন্তর্ভুক্ত জাতীয় পার্টি এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দল এবং ১৪ দলভুক্ত শরিকদেরকে দিতে হবে, সেইসব আসনে আওয়ামী লীগ এখন মনোনয়ন দিবে না। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের দু’টি কৌশল রয়েছে। 

প্রথমত, যদি বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে, তাহলে আওয়ামী লীগ আবার মহোজোটগতভাবেই নির্বাচন করবে। যদিও জাতীয় পার্টি বলেছে যে, তারা মহাজোটের অংশীদার হতে চায় না এবং তারা এককভাবেই নির্বাচন করবে। ইতিমধ্যেই জাতীয় পার্টি দুই শতাধিক আসনে তাদের প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে বলে ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের সঙ্গে থাকবে বলেই আওয়ামী লীগের নেতারা আশাবাদী। বিএনপি অংশগ্রহণ করলে আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধভাবেই অংশগ্রহণ করবে এবং ঐক্যবদ্ধভাবে অংশগ্রহণ করলে আওয়ামী লীগ ৫০ থেকে ৬০টি আসন শরিকদেরকে দেবে। এ কারণেই যে সমস্ত আসনগুলোতে তারা শরিকদেরকে দিতে চায়, সে আসনগুলোতে আওয়ামী লীগের কাউকে সবুজসঙ্কেত দেওয়া হবে না। 

দ্বিতীয়ত, যদি বিএনপি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে, তাহলে আওয়ামী লীগ এককভাবে নির্বাচন করবে। আর শরিক অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোকেও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হবে, তারা যেন তাদের অবস্থান থেকে নির্বাচন করে এবং আওয়ামী লীগ সেই নির্বাচনে ৩০০ আসনেই প্রার্থী দিবে। 

আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, যেভাবেই নির্বাচন হোক না কেন, আওয়ামী লীগের যেসব প্রার্থীকেই চূড়ান্ত মনোনয়ন দেওয়া হবে, সেসব প্রার্থীদেরকে আগাম জানিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।