আওয়ামী লীগের শোক দিবসের স্মরণসভায় নেই তোফায়েল আহমেদ
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আজ বিকেল সাড়ে তিনটায় আওয়ামী লীগের উদ্যোগে স্মরণসভার আয়োজন করা হয়। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এই স্মরণসভা এখন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। স্মরণ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত রয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রতিবছরই জাতীয় শোক দিবসের পরদিন আওয়ামী লীগ এই স্মরণসভার আয়োজন করে। তবে এবার স্মরণসভায় ব্যতিক্রম হলো আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ নেতা উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য তোফায়েল আহমেদের অনুপস্থিতি। এর আগে প্রায় সবগুলো স্মরণ সভায় আওয়ামী লীগের এই হেভিওয়েট নেতা উপস্থিত ছিলেন।
তোফায়েল আহমেদ বঙ্গবন্ধুর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ একজন নেতা ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর হাত ধরেই তিনি রাজনীতিতে তারকায় পরিণত হয়েছিলেন। তোফায়েল আহমেদ নিজেই স্বীকার করেছেন, তিনি তোফায়েল আহমেদ হয়েছেন বঙ্গবন্ধুর আশীর্বাদধন্য হয়েই। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে বিশেষ করে গত ১৪ আগস্ট থেকে দলের ভেতরেই তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন তিনি। এই সমালোচনার মুখে আওয়ামী লীগ থেকে তার পদত্যাগেরও গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে। এই গুঞ্জনের মুখে তিনি আজকের অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত থাকলেন।
উল্লেখ্য যে, গত ১৪ আগস্ট আওয়ামী লীগ সভাপতি জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে একটি একটি নিবন্ধ রচনা করেন এবং এই লেখাটি বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় দৈনিকগুলোতে প্রকাশিত হয়। ‘বেদনায় ভরা দিন’ এই শিরোনামে লেখাটিতে তিনি ১৫ আগস্টের ঘটনার আদ্যোপান্ত তুলে ধরেন। গবেষণা গবেষণাধর্মী এই লেখায় তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু যখন আক্রান্ত হয়েছিলেন তখন তিনি আওয়ামী লীগের দুই তরুণ নেতাকে ফোন করেছিলে। এদের একজন আব্দুর রাজ্জাক অন্যজন তোফায়েল আহমেদ। এই লেখার মধ্যে আওয়ামী লীগ সভাপতি তোফায়েল আহমেদ রক্ষীবাহিনীর দায়িত্বে ছিলেন বলেও উল্লেখ করেছেন।
উল্লেখ্য, এর আগেও আওয়ামী লীগ সভাপতি তোফায়েল আহমেদকে টেলিফোন করার কথা বলেছিলেন। কিন্তু তোফায়েল আহমেদ পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধু তাকে টেলিফোন করেছে এই বক্তব্যটি অস্বীকার করেছেন। আবার রক্ষীবাহিনীর দায়িত্বে তোফায়েল আহমেদ ছিলেন—এরকম বক্তব্য বিভিন্ন সময় বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলেও তোফায়েল আহমেদ তার প্রতিবাদ করেছেন এবং এটি সঠিক নয় বলে দাবি করেছেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি দীর্ঘদিন গবেষণা করে যে প্রতিবেদনটি দিয়েছেন তাতে এই দুটি বক্তব্য পুন:উচ্চারিত হয়েছে। বিশেষ করে রক্ষীবাহিনীর দায়িত্বে থাকাটা নতুন ভাবে উপস্থাপিত হয়েছে। এরকম প্রেক্ষিতে তোফায়েল আহমেদকে আওয়ামী লীগের কোনো কর্মকাণ্ডে গত দুইদিন দেখা যায়নি। আজ শোক দিবসের আওয়ামী লীগের আনুষ্ঠানিক স্মরণসভায় তার অনুপস্থিতি নেতাকর্মীদের মধ্যে নতুন প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। তোফায়েল আহমেদ কি অভিমান করেছেন নাকি তিনি পদত্যাগ করবেন জন্যই এই অনুষ্ঠানে আসেননি—এমন প্রশ্ন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মুখে মুখে।