স্বামীর ঘর ছেড়ে প্রেমিকের বাড়িতে তরুণী, আত্মহত্যার হুমকি
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে স্বামীর ঘর ছেড়ে প্রেমিকের বাড়িতে দুই দিন ধরে অবস্থান নিয়েছেন এক তরুণী (২১)। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্কের অভিযোগে প্রেমিক আল-আমিনের (২৩) বাড়িতে এই অবস্থান শুরু করেন তিনি। বিয়ে না করলে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করবেন বলে হুমকি দিচ্ছেন।
গতকাল রোববার বেলা ৩টায় ওই বাড়িতে অবস্থান নেন তরুণী। এদিকে খবর পেয়ে আল-আমিনসহ তাঁর পরিবারের লোকজন ঘরে তালা দিয়ে পালিয়েছেন। ভূঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের বাগবাড়ী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। প্রেমিক আল-আমিন একই গ্রামের বাদশা মিয়ার ছেলে এবং তরুণী পার্শ্ববর্তী রাউৎবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা। তিনি স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় পড়াশোনা করছেন।
আজ সোমবার দুপুরে কথা হয় প্রেমিকের বাড়িতে অনশনরত ওই তরুণীর সঙ্গে। এ সময় তরুণী বলেন, ‘মাদ্রাসায় আসা-যাওয়ার পথে বিভিন্ন সময়ে আল-আমিন আমাকে প্রেমের প্রস্তাব দিত। বিষয়টি আমার পরিবারকে জানালে প্রতিবেশী এক ছেলের সঙ্গে আমার বিয়ে দেয়।
বিয়ের পরেও আল আমিন বিরক্ত করত। একপর্যায়ে আল-আমিনের প্রেমের ফাঁদে পা দেই। ওই সময় থেকে স্বামী বাড়ি না থাকায় আল-আমিন আমার সঙ্গে শারীরিক মেলামেশা করে।’ তরুণী বলেন, ‘সম্প্রতি বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আমাকে আল-আমিন রাতে তার কর্মস্থল জামালপুরে নিয়ে যায়। পরে শেরপুর নিয়ে আসে এবং সেখানে একটি নির্জন বাসায় চার দিন আটকে রেখে শারীরিক মেলামেশা করে। বিয়ের কথা বলে এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে নামিয়ে চলে যায়।
তারপর আল-আমিনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে আমাদের বাড়িতে লোক পাঠাবে বলে জানায়। কিন্তু সে লোক না পাঠালে আমাদের বাড়ির লোকজন তার বাড়ির লোকজনের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হয়নি।
কয়েক দিন আগে জানতে পারি সে বিয়ে করছে। এ খবর পেয়ে বিয়ের দাবিতে অনশন করছি। এখন আমি আমার শ্বশুরবাড়িতে ফিরে যেতে পারব না। আলামিন আমাকে বিয়ে না করলে এখানে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করব।’
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০২০ সালে উপজেলার বাগবাড়ি গ্রামের মো. বেলাল হোসেনের সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় ওই তরুণীর। টাঙ্গাইলে দরজির কাজ করতেন বেলাল। মাঝেমধ্যে বাড়িতে আসতেন। এদিকে বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে সম্পর্ক থাকার সুবাদে আল-আমিন তাঁদের বাড়িতে যাতায়াত করতেন।
যাতায়াতের একপর্যায়ে আল-আমিন এবং ওই তরুণীর মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সম্পর্কের একপর্যায়ে মোবাইল ফোনে কথোপকথনসহ বিভিন্ন জায়গায় বেড়াতে যেতেন তাঁরা। ঘটনা জানাজানির পর এক মাস আগে স্বামী বেলালের সঙ্গে তাঁর বিচ্ছেদ হয়। এরপর রোববার থেকে ওই তরুণী বিয়ের দাবিতে আল-আমিনের বাড়িতে অবস্থান শুরু করেন।
এদিকে বাড়িতে আল-আমিনসহ তাঁর পরিবারের লোকজন পলাতক থাকায় তাঁদের কারও বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি এবং মোবাইল ফোনেও কাউকে পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে গোবিন্দাসী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. দুলাল হোসেন চকদার বলেন, ‘আমি বিষয়টি শুনেছি।’
এ বিষয়ে ভূঞাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ফরিদুল ইসলাম বলেন, ‘বিয়ের দাবিতে এক তরুণী অনশন করছে শুনেছি। বিয়ের দাবি এটা তাঁর একান্তই ব্যক্তিগত ব্যাপার। এ বিষয়ে আমাদের কাছে কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’