স্ত্রী চলে যাওয়ায় ৮ মাসের সন্তানকে নির্যাতন করল বাবা!
নড়াইলের লোহাগড়ায় দ্বিতীয় স্ত্রী চলে যাওয়ায় আম গাছের সঙ্গে বেঁধে উল্টো করে ঝুলিয়ে আট মাসের শিশু আল-হাবিবকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন ও হত্যাচেষ্টা করেছে তার বাবা। এ ঘটনায় অভিযুক্ত বাবাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) লোহাগড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাসির উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) লোহাগড়া উপজেলার শালনগর ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তি লোহাগড়া উপজেলার শালনগর ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামের দাউদ শেখের ছেলে মামুন শেখ (৩৬)।
পুলিশ ও এজাহার সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ১৩ বছর আগে মামুন শেখের সঙ্গে বিয়ে হয় কুলসুম বেগমের (৩০)। বিয়ের পর থেকে তারা সংসার করে আসছিলেন। তাদের ঘরে দুটি ছেলে ও একটি মেয়েসন্তান রয়েছে। এক বছর আগে মামুন প্রথম স্ত্রীর অনুমতি ছাড়া দ্বিতীয় বিয়ে করেন। এরপর থেকে প্রথম স্ত্রী ও ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন।
এদিকে সোমবার দুপুর ২টার দিকে মামুন শেখ, কুলসুম বেগমকে তার বাবার বাড়ি থেকে এক লাখ টাকা যৌতুক আনতে বলেন। কিন্তু বাবা-মা গরিব বিধায় টাকা আনতে অস্বীকার করেন কুলসুম। পরে তাকে এলোপাতাড়ি মারপিট করেন মামুন। এরপর গলা চেপে শ্বাস রোধ করে হত্যা করার চেষ্টা করেন মামুন শেখ। এ সময় মামুন শেখের দ্বিতীয় স্ত্রী মাফুজা আক্তার সাথী (২৫) কুলসুমকে চুল ধরে কিলঘুষি মারেন।
এ ঘটনার পর তার দ্বিতীয় স্ত্রী ও চলে যায়। দ্বিতীয় স্ত্রী চলে যাওয়ায় রাগান্বিত হয়ে মামুন দুধের শিশুকে মারধর করে ও শ্বাস রোধ করে হত্যার চেষ্টা করে। কুলসুম বেগম ও তার শাশুড়ি মামুনের হাত থেকে শিশুকে রক্ষা করতে গেলে তাদের ও মারপিট করে।
এ সময় আকস্মিকভাবে সাংবাদিকরা উপস্থিত হয়ে ঘটনাস্থল থেকে ৮ মাসের শিশুসন্তান ও তার মাকে উদ্ধার করে। পরে কৌশলে তার বাবা মামুনকে ধরে নিয়ে এসে লোহাগড়া থানা পুলিশের হাতে তুলে দেন।
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাসির উদ্দিন বলেন, এ ঘটনায় শিশুর মা কুলসুম বেগম বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। আসামি মামুন শেখকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।