মেট্রোরেলে নিয়ম অমান্য করলে মিলবে যেসব শাস্তি
অবশেষে বহুল প্রতীক্ষিত মেট্রোরেলের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রথম পর্যায়ে এ ট্রেন চলবে উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত। এ পথের দূরত্ব ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার।
উদ্বোধনের দিনই এ দুটি স্টেশন খুলে দেওয়া হয়েছে। শেষ করা হয়েছে সব প্রস্তুতিও। মেট্রোরেলের এ অংশের বাকি সাতটি স্টেশনও পর্যায়ক্রমে খোলা হবে। মেট্রোরেলের শিডিউল নির্ধারণ করা হবে যাত্রীদের চাহিদা বিবেচনা করে।
মেট্রোরেলে যাত্রী যে দূরত্বের জন্য টিকিট কাটবেন, তার চেয়ে বেশি পথ গেলে শাস্তি পেতে হবে। শাস্তি হিসাবে জরিমানা গুনতে হবে, নয়তো জেল খাটতে হবে যাত্রীকে।
মেট্রোরেল আইন ২০১৫-তে বলা আছে, অনুমোদিত দূরত্বের বেশি ভ্রমণ করলে বা ভাড়া এড়ানোর উদ্দেশ্যে অন্য কোনো কৌশল অবলম্বন করলে তা অপরাধ হিসাবে গণ্য হবে। এ জন্য মেট্রোরেলে যাতায়াতের ভাড়ার ১০ গুণ পর্যন্ত অর্থদণ্ড এবং তা অনাদায়ের ক্ষেত্রে অনধিক ছয় মাসের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
মেট্রোরেল আইন ২০১৫-তে যা রয়েছে
টিকেট বা বৈধ পাস ছাড়া ভ্রমণ করলে বা ভাড়া এড়ানোর জন্য অন্য কোনো কৌশল অবলম্বন করলে নির্ধারিত ভাড়ার ১০ গুণ পর্যন্ত অর্থদণ্ড হবে। আর জরিমানার টাকা না দিলে সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদণ্ড হবে।
কোনো ব্যক্তি অননুমোদিতভাবে মেট্রোরেলের টিকেট বা পাস বিক্রি বা জাল করলে ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা এক কোটি টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড হতে পারে।
মেট্রোরেলে পরিদর্শককে দায়িত্ব পালনে বাধা দিলে বা মিথ্যা তথ্য দিলে সেটাও হবে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এরকম ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড হতে পারে।
ট্রেন বা স্টেশনের কিছু এলাকায় প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত। সেসব স্থানে অনুমতি ছাড়া প্রবেশ করলে তা অপরাধ বলে গণ্য হবে। প্রবেশের পর দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির অনুরোধেও ওই এলাকা ত্যাগ না করলে শাস্তির মুখে পড়তে হবে। সেজন্য সর্বোচ্চ এক বছরের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড হতে পারে।
কোনো ব্যক্তির কারণে যদি মেট্রোরেল বা যাত্রীদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় বা বিঘ্নিত হওয়ার ঝুঁকি দেখা দেয়, তাহলে তাকে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড বা ৫০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড দেওয়া হতে পারে।
কেউ যদি মেট্রোরেল আইনে উল্লিখিত কোনো অপরাধের জন্য দণ্ডিত হন এবং দণ্ড ভোগের পর যদি আবারও একই অপরাধ করেন, তাহলে সেই অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ যে দণ্ড, তার দ্বিগুণ শাস্তি হবে।
এছাড়া অনুমতি ছাড়া লাইসেন্স হস্তান্তর করলে ১০ বছর কারাদণ্ড ও এক কোটি টাকা জরিমানা, পরিচালনায় বাধা সৃষ্টি করলে দুই বছর জেল ও ২ লাখ টাকা জরিমানার বিধান আছে আইনে।
মেট্রোরেল নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলে এক বছরের কারাদণ্ড ও ৫ লাখ টাকা জরিমানা, সংরক্ষিত স্থানে কেউ বিনা অনুমতিতে প্রবেশ করলে এক বছরের কারাদণ্ড ও ৫ লাখ টাকা জরিমানা, মেট্রোরেলের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করলে ৫ বছরের কারাদণ্ড ও ৫০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।
কারিগরি মান অনুসরণ না করে মেট্রোরেল নির্মাণ ও রোলিং স্টক স্থাপন, পরিচালনা, রক্ষাবেক্ষণ এবং নিরাপত্তার ব্যবস্থাপনা সম্পাদনা করলে পাঁচ বছরের বা অনধিক ৫০ লাখ টাকা অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।