মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন দাবানলে সর্বস্ব হারানো হাওয়াই দ্বীপের বাসিন্দারা
দাবানলে পুড়ে যাওয়া যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই দ্বীপের লাহাইনার ধ্বংসস্তূপে অভিযান চালাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা। দাবানলে সর্বস্ব হারিয়ে হতাশা ও দুশ্চিন্তায় সেখানকার বাসিন্দারা। আগুনের ভয়াবহ স্মৃতি আর পুড়ে যাওয়া বাড়িঘর দেখে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন অনেকেই। তবে দাবানল থেকে পরিবারের সদস্যদের সুরক্ষিত দেখে সান্ত্বনা নিচ্ছেন কেউ কেউ।
দাবানলে পুড়ে ছাই হাওয়াই দ্বীপের লাহাইনা। চারিদিকে এখন শুধুই পুড়ে যাওয়া বাড়িঘর ও গাড়ির ধ্বংসাবশেষ। অথচ এক সপ্তাহ আগেও এখানকার চিত্র ছিল ভিন্ন।
দাবানল ছড়িয়ে পড়লে বাধ্য হয়ে বাড়িঘর ছেড়ে অন্য সরে যেতে হয় বাসিন্দাদের। তবে আগুন নিভে যাওয়ার পর ফিরে এসে নিজেদের বাড়িঘরের এমন চিত্র দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন সেখানকার বাসিন্দারা। আগাম সতর্কতা না পাওয়ায় বাড়ি ছাড়ার জন্য পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নিতে পারেনি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা।
দাবানলে সর্বস্ব হারানো এক বাসিন্দা জানান, সব কিছু হারিয়ে ফেলেছি। তবে আমার পরিবারের সদস্যরা বেঁচে আছে, নিরাপদে আছে সেজন্য স্রষ্টাকে ধন্যবাদ।
আরেক বাসিন্দা জানান, আমরা কোনো সাইরেন শুনিনি। কয়েক মিনিটের মধ্যে দাবানল ছড়িয়ে পড়েছিল। তখন কোনো সতর্কতা ছাড়াই আগুন থেকে বাঁচতে পালিয়েছি।
দাবানলে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে নিহতদের খোঁজে কর্তৃপক্ষের উদ্ধার অভিযান চলছে। এছাড়া হাওয়াই দ্বীপের অনেক এলাকায় এখনো দাবানল নিয়ন্ত্রণে লড়ছেন ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা। তবে তীব্র বাতাসের কারণে এ কাজ কঠিন হয়ে পড়েছে বলে জানান তারা।
কয়েকটি এলাকায় টেলিভিশন, রেডিও আর মোবাইল ফোনে বার্তা পাঠিয়ে বাসিন্দাদের দাবানল সম্পর্কে সতর্ক করছে কর্তৃপক্ষ। তবে আগুনের কারণে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন ও মোবাইল নেটওয়ার্কে সমস্যা দেখা দেয়ায় অনেক এলাকার বাসিন্দাদের কাছে দাবানলের সতর্কতা পৌঁছায়নি বলে জানায় তারা।
ভয়াবহ এ দাবানলে এ পর্যন্ত ৮৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতের সংখ্যা বাড়ার আশঙ্কা করছে কর্তৃপক্ষ। এছাড়া এখনও নিখোঁজ রয়েছে অনেকে। নিখোঁজদের খোঁজে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত বিশেষজ্ঞ উদ্ধারকারীর দল। একইসাথে ধ্বংসস্তুপের নিচে মরদেহ শনাক্তের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে প্রশিক্ষিত কুকুর।
এই দাবানলকে হাওয়াইয়ের সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগ বলে অভিহিত করেছেন সেখানকার গভর্নর। তিনি জানান, এরইমধ্যে ২ হাজার ২০০ ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যার আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৬০০ কোটি ডলার।