মাদারীপুরে দূর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে চেয়্যারম্যানের বিরুদ্ধে ৯ ইউপি সদস্যের সংবাদ সম্মেলন
জাহিদ হাসান, মাদারীপুর প্রতিনিধি:
মাদারীপুর সদর উপজেলার রাস্তি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বেল্লার মোল্লার বিরুদ্ধে দূর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে ৯ ইউপি সদস্য অনাস্থা জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে।
শনিবার (২৯ এপ্রিল) বিকেলে সদর উপজেলা রাস্তি ইউনিয়ন পরিষদের সামনে ৯টি ওয়ার্ডের সাধারণ লোকজন ও নয়টি ইউপি সদস্যরা এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন।
এ সময় ইউপি সদস্যদেরা সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ পড়ে শোনান সাংবাদিকদের।
সরকারি ভাবে রাস্তি ইউনিয়ন পরিষদের একজন হিসাব সহকারী কাম-কম্পিউটার অপারেটর রয়েছে। তাকে চেয়ারম্যান বেল্লাল মোল্লা তার নিজস্ব একটি কার্যালয়ে রেখে কাজ করান। যে কারণে ওই কর্মচারীকে ইউনিয়ন কার্যালয়ে পাওয়া যায় না। এতে সাধারণ মানুষ সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এ ছাড়াও নির্বাচনের এক বছর হয়ে গেলেও চেয়ারম্যান এখন পর্যন্ত কোন প্যানেল চেয়ারম্যান নির্বাচিত করে নাই। নির্বাচিত হওয়ার পরে চেয়ারম্যান ইউনিয়ন পরিষদে কখনও আসেন না। তিনি তার একটি অস্থায়ী কার্যারয়ে বসে পরিষদ পরিচালনা করেন। সেখানে বসে চেয়ারম্যান ও তার ভাই বেলায়েত মোল্লা জন্ম নিবন্ধন, ট্রেড লাইসেন্স, ১০ টাকা কেজি মূল্যে চালসহ যাবতীয় কাজ করে থাকেন। বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ করলে সদস্যদের হুমকি-ধমকি দিয়ে হয়রানি করেন চেয়ারম্যান।
ইউপি সদস্য জাফর দেওয়ান বলেন, বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কার্যক্রমের টাকা দূর্নিতীর মাধ্যমে আত্মসাত করেন চেয়ারম্যান। এছাড়া টাকার বিনিময় বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, ভিজিএফসহ বিভিন্ন কার্ড বিতরণসহ বিস্তর আভিযোগ রয়েছে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। গত এক বছরে সদস্যদের সাথে কোন বিষয়ে চেয়ারম্যান আলাপ আলোচনা বা মাসিক কোনো মিটিং করেনা। চেয়্যারম্যান নিজের ইচ্ছা খুশি মত কাজ করে। চেয়ারম্যানের অনিয়ম ও দূনীতির বিরুদ্ধে মাদারীপুর জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে বরাবর লিখিত অভিয়োগও প্রদান করা হয়েছে।
রাস্তি ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. রুহুল আমিন খান বলেন, ‘চেয়ারম্যান তার ইচ্ছেমত সব কাজ করেন। আমরাও যে জনগণের ভোটে মেম্বার হয়েছি তার কোন কর্ণপাত তিনি করেন না। তার ভাইকে দিয়ে সব কাজ করান। এই পরিষদ গঠন হয়েছে এক বছর দুই মাসের বেশি তারপরেও কোন প্যানেল চেয়ারম্যান গঠিত হয়নি। মাত্র একটি মিটিং ছাড়া এ যাবত কালে কোন মিটিং হয়নি পরিষদে। আমরা এর প্রতিকার চাই।’
গোলাম মওলা নামে আরেক ইউপি সদস্য বলেন, ‘ইউপি চেয়ারম্যানের অনিয়মের বিরুদ্ধ গত ১ জানুয়ারি জেলা প্রশাসক ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি আমরা ৯ জন ইউপি সদস্য। কিন্তু কোন প্রতিকার পাইনি।’
চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন রাস্তি ইউনিয়নের নয়টি ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যেরা তারা হলেন- মো. রুহুল আমিন খান, আবুল বশার ব্যাপারী, গোলাম মওলা, জাফর দেওয়ান, হাবিব ব্যাপারী, শাদিক সরদার, মর্জিনা বেগম, মৌসুমী হোসেনসহ নয়টি ওয়ার্ডের সর্বস্তরের সাধারণ মানুষেরা।
এ সম্পর্কে জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘রাস্তি ইউনিয়নের কোন বিষয় নিয়ে আমরা অভিযোগ পাইনি। যদি চেয়ারম্যান ও সদস্যদের মধ্যে কোনো জটিলতা থাকে সেটা তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’