ঘটনা ধামাচাপা দিতে খুন করা হয় রাতুলকে।

ঘটনা ধামাচাপা দিতে খুন করা হয় রাতুলকে।

মোঃআরিফুজ্জামান খান রিয়াদ, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার :

একটি বাইসাইকেলের জন্য বাবা-মায়ের কাছে আবদার করেছিল পটুয়াখালী জেলার আউলিয়াপুর হাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী মোঃরাতুল হোসেন (১০)। ছেলের আবদার না মেটানোর সুযোগ নেন প্রতিবেশী আনোয়ার হোসেন মাতব্বর।

দশ বছর বয়সি রাতুলকে ১৪ হাজার টাকায় সাইকেল দিয়ে রাতুলের বাবার ব্যবসায়িক মালামাল চুরির কৌশলে লিপ্ত আনোয়ার ও তার সহযোগী হানিফ হাওলাদার। 

রাতুলের মাধ্যমে তার পরিবারের সদস্যদের চেতনানাশক ওষুধ প্রয়োগ করে মালামাল চুরি করে তারা।পরে চুরির ঘটনা ঢাকতে গিয়ে  রাতুলকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে মাটিতে পুঁতে রাখা হয়।এমন একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পটুয়াখালী জেলা পুলিশ।

পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতরা এমন স্বীকারোক্তি দিয়েছেন পুলিশের কাছে।মঙ্গলবার ২৬/০৯/২০২৩ খ্রিঃ দুপুর ২টায় প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশের এসপি মোঃ সাইদুল ইসলাম এমন তথ্য নিশ্চিত করেন।পটুয়াখালী সদর উপজেলার ছোট আউলিয়াপুরে এমন ঘটনা ঘটেছে। 

ঘটনার বরাত দিয়ে এসপি বলেন বেশ কিছু দিন থেকেই রাতুল তার বাবা-মায়ের কাছে সাইকেল কেনার বায়না করছিল,কিন্তু সঙ্গত কারণে রাতুলকে সাইকেল দেয়নি তার  পরিবার।সাইকেল সংক্রান্ত খবরটি জানতে পারেন  প্রতিবেশী মোঃআনোয়ার হোসেন (৪৫) এবং পরে তার ঘনিষ্ঠ মোঃ হানিফ হাওলাদারের (৪১) সঙ্গে আলোচনা করে রাতুলের বাবার ব্যবসায়িক মালামাল চুরির পরিকল্পনা করে তারা।

এরপর রাতুলকে দামি সাইকেল দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে রাজি করে নেয়।এরপর রাতুলের সঙ্গে আলোচনা করে তাকে রাজি করায় আনোয়ার ও হানিফ। ঘটনায় জড়িত আনোয়ার হোসেন গাছকাটা শ্রমিক এবং হানিফ হাওলাদার নদীতে মাছ ধরে জীবিকা র্নিবাহ করে। রাতুলকে ১৪ হাজার টাকায় সাইকেল কিনে দিয়ে তার বাবা গোলাম রহমান লিটনের অটোরিকশার তিনটি ব্যাটারি খুলে নেওয়ার চুক্তি করেন তারা। 

তারা আরও বলেন, চুক্তি অনুযায়ী গত ১৮/০৯/২০২৩ খ্রিঃ রাতে রাতুলকে দিয়ে তার বাবা গোলাম রহমান লিটন (৪৫) এবং মা মোসা. আছমা বেগম (৩০) এবং রাতুলের বৃদ্ধ দাদি রিজিয়া বেগমকে চেতনানাশক ওষুধ প্রয়োগ করে তারা।পরিবারের ঘুম নিশ্চিত করে গভীর রাতে বসতঘরের পেছনের দরজা দিয়ে ঘরসংলগ্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ঢুকে যায় তারা। চুক্তি অনুযায়ী শুধু অটোরিকশার ব্যাটারি নেওয়ার কথা থাকলেও রাতুলের বাবার ডেকোরেটরের মালামাল এবং সাউন্ড সিস্টেমসহ প্রায় ৮ লাখ টাকার মালামাল লুটে নেয় তারা। 

চুরি হওয়া এসব মালামাল নিয়ে নৌকায় চেপে রওনা দিতে গেলে অপকর্মের স্বাক্ষী হিসেবে ক্ষতিগ্রস্থ গোলাম রহমানের ছেলে রাতুলের বিষয়টি মাথায় চলে আসে তাদের। এরপর তারা পুনরায় ফিরে এসে রাতুলের ঘরে ঢুকে রাতুলকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।পরে ওই রাতেই জয়নাল বিশ্বাসের পরিত্যক্ত ঘরের মাটি খুঁড়ে এবং দুর্গন্ধ এড়াতে রাতুলের গায়ে লবণ মেখে পলিথিনে মুড়িয়ে পুঁতে রাখে রাতুলকে এবং চুরি করা সব মালামাল হানিফ হাওলাদারের বসতঘরের রান্নাঘরের মাটি খুড়ে পুঁতে রাখে যায় তারা।

পটুয়াখালীর জেলা পুলিশ উক্ত মালামাল গুলো উদ্ধার করেছেন।

এঘটনায় রাতুলের বাবা বাদী হয়ে গত ২১/০৯/ ২০২৩ খ্রিঃ একটি মামলা দায়ের  করেছেন।