ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু হচ্ছে আজ
ঘরের মাঠে ওয়ানডে সিরিজে টানা সাত বছর ধরে অপরাজিত ছিল বাংলাদেশ। টাইগারদের সেই রেকর্ড ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। তবে সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডে ম্যাচে জয় তুলে নেওয়ায় টি-টোয়েন্টি সিরিজে বেশ আত্মবিশ্বাসী লাল সবুজের প্রতিনিধিরা।
আজ (৯ মার্চ) বিকেল তিনটায় চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চোধুরী স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ও ইংল্যান্ডের মধ্যকার তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচ শুরু হবে। টি-টোয়েন্টিতে কি আধিপত্ত্ব ধরে রেখে শুভসূচনা করে ইংলিশদের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে পারবে বাংলাদেশ?
বাংলাদেশ শিবিরে সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ দিক হচ্ছে সাকিব আল হাসানের ফর্মে ফেরা। ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচে ব্যাট এবং বল উভয় বিভাগেই ইংলিশদের কাঁপিয়ে দিয়েছেন বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার। সেই সঙ্গে টি-টোয়েন্টির নেতৃত্বেও রয়েছেন সাকিব। ফলে সিরিজে এক পা এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে তার পারফরম্যান্স ইংল্যান্ডের জন্য উদ্বেগের কারণ হতে পারে।
বাংলাদেশের জন্য বাঁহাতি পেসার মোস্তাফিজুর রহমান বোলিংয়ে ছন্দে নেই। টি-টোয়েন্টিতে অনেকটাই ফিজের ওপর নির্ভর করলেও সাম্প্রতিক সময়ে এখনও শীর্ষ ফর্মে পৌঁছাতে পারেননি তিনি। তা সত্ত্বেও, ইংল্যান্ডের ব্যাটাররা এই ধীরগতির পিচে পুরোপুরি মানিয়ে নিতে পারেনি। ওয়ানডে সিরিজে ডেভিড মালান, জেসন রয় এবং জস বাটলার ব্যাট হাতে কিছুটা পারফর্ম করেছেন, কিন্তু এই সফরে এখনও টিম একত্রিত হতে পারেনি।
তবে বিশ ওভারের সংক্ষিপ্ত এই ফরম্যাটে অনেক পিছিয়ে বাংলাদেশ। আইসিসির টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ে ৯ নম্বরে রয়েছে সাকিবের দল। শুধু তাই নয়, এই ফরম্যাটে বাংলাদেশ তুলনামূলক অনেক দুর্বলও বটে। কিন্তু সদ্য শেষ হওয়া বিপিএলে আলো ছড়ানো বেশ কয়েকজন ডাক পেয়েছেন এই সিরিজের স্কোয়াডে। ফলে বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি দলের চেহারা নতুন রূপ পেয়েছে।
এই সিরিজেই অভিষেক হতে পারে তৌহিদ হৃদয়, তানভির ইসলাম কিংবা রেজাউর রহমান রাজার মতো তরুণ ক্রিকেটারদের। সেই সঙ্গে দীর্ঘ ৮ বছর পর জাতীয় দলে ফিরেছেন ওপেনার রনি তালুকদার। এ ছাড়া অভিষেকের পর কিছুদিন খেলার অভিজ্ঞতাও হয়েছে হাসান মাহমুদ, নাসুম আহমেদ, শামীম হোসেন পাটোয়ারীর মতো তরুণদের।
পঞ্চ পান্ডবের কেবল একজনই রয়েছেন টি-টোয়েন্টির এই দলে। সাকিব আল হাসান। মাশরাফি, তামিম, মুশফিক এই ফরম্যাট থেকে অবসর নিয়েছেন। মাহমুদউল্লাহ অবসরের ঘোষণা না দিলেও তিনি যে আর ২০ ওভারের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সুযোগ পাবেন, তার সম্ভাবনা নেই।
সে কারণে, টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট এখন পুরোপুরিই তারুণ্য নির্ভর। সাকিব আল হাসান ছাড়া এই দলে সিনিয়রদের মধ্যে রয়েছেন কেবল লিটন দাস, নুরুল হাসান সোহান, মোস্তাফিজুর রহমান এবং তাসকিন আহমেদ। সিনিয়র না হলেও বেশ ভালো অভিজ্ঞতা আছে নাজমুল হোসেন শান্ত, মেহেদী হাসান মিরাজ, আফিফ হোসেন ধ্রুব।
দলে থাকা চার তরুণ ক্রিকেটারের মধ্যে যার নামই আজ থাকবে একাদশে, তার সামনেই অবারিত হয়ে যাবে নিজেকে মেলে ধরার সুযোগ। স্কোয়াডে তাদের অন্তর্ভুক্তিতে দল যে নতুন চেহারা পেয়েছে, সেটা শেষ পর্যন্ত উজ্জ্বল থাকে নাকি আঁধারের অন্ধকারে হারিয়ে যায়, সেটাই দেখার বিষয়।
বাংলাদেশের স্কোয়াড : সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), লিটন দাস, নাজমুল হোসেন শান্ত, শামীম হোসেন পাটওয়ারী, আফিফ হোসেন ধ্রুব, নুরুল হাসান সোহান (উইকেটকিপার), মেহেদি হাসান মিরাজ, নাসুম আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ, হাসান মাহমুদ, রনি তালুকদার, তৌহিদ হৃদয়, তানভীর ইসলাম ও রেজাউর রহমান রাজা।
ইংল্যান্ড স্কোয়াড : জস বাটলার (অধিনায়ক-উইকেটকিপার), ফিল সল্ট, ডেভিড মালান, বেন ডাকেট, মঈন আলী, স্যাম কারান, ক্রিস ওকস, জোফরা আর্চার, আদিল রশিদ, মার্ক উড, রিস টপলে, রেহান আহমেদ ও ক্রিস জর্ডান।