রনি-লিটনের ঝড়ের পর সাগরিকায় বৃষ্টির হানা

রনি-লিটনের ঝড়ের পর সাগরিকায় বৃষ্টির হানা

বৃষ্টির ঘনঘটা ছিল খেলা শুরুর আগে থেকেই। তবে সেই শঙ্কা মাথায় নিয়ে খেলা শুরুর পরও বেশ কিছুক্ষণ ধরেই পড়ছিল বৃষ্টি। গুড়িগুড়ি বৃষ্টির মাঝেই খেলা হয়েছে এক ওভারের বেশি। তবে এটি টানা চলতে থাকায় খেলা আর চালিয়ে নেওয়া সম্ভব হলো না। বাংলাদেশের ইনিংসের ৪ বল বাকি থাকতে বন্ধ হয়ে গেল খেলা। 

বৃষ্টির হানার আগে লিটন-রনিদের ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে ভর করে ১৯ দশমিক ২ ওভারে ৫ উইকেটের বিনিময়ে ২০৭ রান সংগ্রহ করেছে বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এটি বাংলাদেশের তৃতীয় সর্বোচ্চ সংগ্রহ। টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ২১৫। আর ৯ রান করতে পারলেই সেটি ছাড়িয়ে যাবে তারা। কিন্তু প্রকৃতি বাধায় শেষ পর্যন্ত আর ব্যাটিংয়ে নামতে দেওয়া হবে কি না সেটিই দেখার। 

আজ সোমবার (২৭ মার্চ) তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে টস হেরে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে উড়ন্ত সূচনা পায় বাংলাদেশ। ইনিংসের প্রথম ওভারেই ছক্কা হাঁকিয়ে ঝড় তোলার আভাস দেন লিটন দাস। এরপর বোলারদের ওপর চড়াও হন আরেক ওপেনার রনি তালুকদার। এ দুজনের ব্যাটে পাওয়ারপ্লেতে টাইগারদের হয়ে রেকর্ড রান (৮১) সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। এর আগের সর্বোচ্চ ছিল ৭৬, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২০১৩ সালে।

যদিও দলকে উড়ন্ত সূচনা এনে দিয়ে বেশিক্ষণ থিতু হতে পারেননি লিটন। ক্রেইগ ইয়াংয়ের স্লোয়ার বল মিড অফের মাথার ওপর দিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন তিনি। টাইমিংটা ঠিকঠাক হয়নি, সহজ ক্যাচ তালুবন্দি করেন পল স্টার্লিং। ভাঙে ৪৩ বল স্থায়ী ৯১ রানের জুটি। ২৩ বলে চারটি চার ও তিনটি ছক্কায় ৪৭ রান করেন লিটন।

লিটনের বিদায়ের পরপরই শান্তর সঙ্গে জুটি গড়ে ইনিংস এগিয়ে নেন রনি। দীর্ঘদিন পর দলে ফেরা টাইগার এ ব্যাটার ফিফটি তুলে নিতেও বেশি সময় নিলেন না। ক্যারিয়ারের পঞ্চম ম্যাচে প্রথম ফিফটির জন্য তিনি খেলেছেন স্রেফ ২৪ বল। ৬টি চারের সঙ্গে ২টি ছক্কা মেরেছেন ৩২ বছর বয়সী ওপেনার।

ব্যাটারদের জ্বলে ওঠার দিনে ব্যর্থ হলেন দারুণ ছন্দে থাকা শান্ত। হ্যারি ট্যাক্টরের অফ স্টাম্পের অনেক বাইরে পরপর দুই ওয়াইডে যেন ধৈর্য হারালেন। পরের বলটি ভেতরে ফেলে হালকা টার্ন করালেন ট্যাক্টর। ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে খেলতে গিয়ে ব্যাটে-বলে করতে পারলেন না শান্ত। বাকি কাজ অনায়াসেই সারলেন লরকান টাকার। স্টাম্পিং হয়ে ফিরলেন ১ ছয়ে ১৩ বলে ১৪ রান করা শান্ত। 

একপ্রান্তের সতীর্থদের হারিয়েও অন্য প্রান্তে ঝড় তোলা অব্যাহত রাখছিলেন রনি। সেই সঙ্গে একাদশে সুযোগ পাওয়া শামীম পাটোয়ারীও বাকিদের দেখানো পথেই হাঁটলেন। তবে গ্রাহাম হিউমের ফুললেংথের বলটা যতটা ভেবেছিলেন, ততটা ওঠেনি। পুরোপুরি মিস করে বোল্ড রনি। ৩৮ বলে তার ৬৭ রানের ঝোড়ো ইনিংস থামে সেখানেই। লিটনের সঙ্গে ৯১, শান্তর সঙ্গে ২৭ রানের পর শামীম হোসেনের সঙ্গে ৩৬ রানের জুটির পর থামলেন রনি।

ব্যাটিং পজিশনে উন্নতির দিনে বোলারদের ওপর চড়াও হয়ে রান এগিয়ে নিচ্ছিলেন শামীম। তবে মার্ক অ্যাডায়ারের চমৎকার এক স্লোয়ারে কাটা পড়তে হয় তাকে। অফ স্টাম্পের বাইরে পড়া অফ কাটার ঠিকমতো খেলতে পারেননি শামীম। শরীরের বেশ দূরের বল খেলার চেষ্টায় ক্যাচ তুলে দেন এক্সট্রা-কাভারে। সেখানে কোনো ভুল করেননি পল স্টার্লিং। ২০ বলে এক ছক্কা ও দুই চারে কার্যকরী ৩০ রানের ইনিংস খেলেন শামীম।