প্রেমের বিয়ের এক বছর স্ত্রীকে ভিডিও কলে রেখে স্বামীর আত্মহত্যা

প্রেমের বিয়ের এক বছর  স্ত্রীকে ভিডিও কলে রেখে স্বামীর আত্মহত্যা

বরিশালের উজিরপুর উপজেলায় প্রেম করে বিয়ের এক বছরের মাথায় স্ত্রীকে ভিডিও কলে রেখে আত্মহত্যা করেছেন স্বামী রিফাত জমাদ্দার। 

গতকাল শনিবার দিনগত রাতে উজিরপুর পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ মাদারর্শী গ্রামে হাসপাতালের সামনে ভাড়া টিয়া বাসায় এ ঘটনা ঘটে। 

নিহত রিফাত জামাদ্দার (২২)পিরোজপুরের জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার বাইশ ঘর গ্রামের ফোরকান জোমাদ্দারের ছেলে। সে  বরিশাল নগরীর ইনফ্রা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অষ্টম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার স্ত্রী আসমা বেগম (২০) বরিশাল রহমতপুর কৃষি কলেজের পঞ্চম সেমিস্টারের শিক্ষার্থী। কলেজের হলে থেকেই পড়াশুনা করেন। আসমা ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার আবুল হোসেন হাওলাদারের মেয়ে। 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রিফাতে জামাদ্দারের নানা বাড়ি উজিরপুর পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডে। তার মা- বাবা ঢাকায় থাকেন। সেই সুবাদে নানা বাড়ির পাশেই পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের মাদার্শী গ্রামে হাসপাতালের সামনে মৃত মো. হান্নান খানের বাড়িতে ১ মাস ধরে বাসা ভাড়া নিয়া থাকতেন রিফাত। কিছু দিন ধরে স্ত্রীর সঙ্গে ভালো সম্পর্ক ছিল না বলে জানান রিফাতের পরিবারের লোকজন।

রিফাত জামাদ্দারের স্ত্রী আসমা বেগম বলেন, রিফাতের সঙ্গে ১ বছর আগে প্রেমের সম্পর্ক করে বিয়ে হয়। ‘রিফাত রাত সাড়ে ১০টার দিকে আমার সঙ্গে কথা বলেছে। তখন রিফাত বলে, ‘তোমারে বিয়ের পর বাবা মা কেউ ভালোবাসে না, এখন তুমিও আমাকে ভালোবাসো না’। রিফাত আমাকে সবসময় বোরকা পরে চলাফেরা করতে বলতো। কিন্তু কিছুদিন আগে ফেসবুকে বোরকা ছাড়া ছবি আপলোড দেওয়ায় রাগ করে ৪ দিন ধরে আমার সাথে ঠিক করে কথা বলত না। আমাকে ভিডিওতে কল দিয়ে কথা বলে আত্মহত্যা করেছে। রিফাত আত্মহত্যা করছে তাৎক্ষণিক তার বন্ধু রিয়াদ ও সাওনকে জানাই । রিয়াদ ও সাওন সংবাদ পেয়ে রিফাতের মামা শান্তকে জানায়।

এদিকে রিফাতের মামা খবর পেয়ে লোকজন নিয়ে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত ডা. রাকিব মৃত্যু বলে ঘোষণা করেন। উজিরপুর মডেল থানা পুলিশ মরা দেহ উদ্ধার করে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেন। 

হাসপাতালের উপস্থিত ’উজিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ তদন্ত মো. তৌহিদুজ্জামান সোহাগ বলেন, বছর খানেক আগে প্রেমের সম্পর্কের পর বিয়ে করেন তারা। গত ৪-৫ দিন ধরে আসমা বোরকার পরে মুখ খোলা রেখে ছবি তুলে তা ফেসবুকে দেন। এ নিয়ে অভিমান করে শনিবার রাতে স্ত্রীকে ভিডিও কল দেন। এ সময় স্ত্রীর সঙ্গে কথার কাটাকাটির এক পর্যায়ে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস লাগান। পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে উজিরপুর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে বলেও জানান পুলিশ ।