ইবিতে মেডিকেল সেন্টার ভাঙচুর ও র্যাগিংয়ের ঘটনায় ৩ জন স্থায়ীসহ বহিষ্কার ৬
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) র্যাগিং ও মেডিকেল সেন্টারে ভাঙচুরের ঘটনায় ৩ জনকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া র্যাগিংয়ের সাথে জড়িত আরও ৩ শিক্ষার্থীকে ১ বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩ অক্টেবর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
মেডিক্যাল ভাঙচুরের ঘটনায় আইন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রেদোয়ান সিদ্দিকী কাব্য এবং র্যাগিংয়ের সাথে জড়িত হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী হিশাম নাজির শুভ ও মিজানুর রহমান ইমনকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া র্যাগিংয়ের সাথে জড়িত আরও ৩ শিক্ষার্থীকে ১ বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। তার হলেন একই বিভাগের একই শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার হাসান পুলক, শেখ সালাউদ্দীন সাকিব, সাদমান সাকিব আকিফ।
এর আগে, গত ১০শে জুলাই রাত সাড়ে ১১টায় মেডিকেল সেন্টারের জরুরি বিভাগে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এতে আইন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের রেজোয়ান সিদ্দিক কাব্যের সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হওয়ায় তাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। তার সাথে থাকা অন্য দুই শিক্ষার্থী সালমান আজিজ, আতিক আরমান কাব্যের সঙ্গে থাকলেও সরাসরি সংশ্লিষ্ট না থাকায় তাদের সতর্ক করা হয়েছে। এর আগে ভাঙচুরের ঘটনায় মেডিকেল কর্তৃপক্ষের লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ১৫ জুলাই ওই তিন ছাত্রকে সাময়িক বহিষ্কার করে তদন্ত কমিটি করে কর্তৃপক্ষ। কমিটিতে ছাত্র-উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শেলীনা নাসরিনকে আহ্বায়ক করা হয়। কমিটির প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে কাব্যকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ। তবে প্রতিবেদনে মেডিকেলে ভাঙচুরের ঘটনায় অন্যদের সংশ্লিষ্টতা না পাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ। তবে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের বিষয়ে তাদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
এছাড়া গত ৯ সেপ্টেম্বর হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের এক নবীন শিক্ষার্থী লিখিতভাবে র্যাগিংয়ের অভিযোগ করেন তারই বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ৫ ছাত্রের বিরুদ্ধে। পরদিন ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলামকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি করে কর্তৃপক্ষ। অভিযুক্তরা হলেন, হিশাম নাজির শুভ, মিজানুর রহমান ইমন, শাহরিয়ার পুলক, শেখ সালাউদ্দীন সাকিব ও সাদমান সাকিব আকিব। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পর্যালোচনা করে ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির সভায় ইমন ও শুভকে স্থায়ী ও অন্য তিনজনকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে র্যাগিংয়ের শিকার হওয়া শিক্ষার্থী তাহমিন ওসমান বলেন, যে দুইজন কে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে তারা অতিরিক্ত খারাপভাবে আমাকে র্যাগিং করেছে। তাদের সঠিক বিচার হয়েছে। এছাড়া বাকি তিনজন কে ১ বছরের জন্য বহিষ্কার করাও উপযুক্ত বিচার হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এ বিচার আমি খুশি।
এ বিষয়ে ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শেলীনা নাসরিন বলেন, মেডিক্যালের ঘটনায় কাব্য স্থায়ী বহিষ্কার, বাকি দুইজনের কোনো সংশ্লিষ্টতা পাইনি তদন্ত কমিটি। এজন্য তাদের বিরুদ্ধে কোনো একশন নেইনি। তবে তাদের সতর্ক করা হয়েছে। র্যাগিংয়ের ঘটনায় ইমন ও শুভকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে। বাকি ৩ জনকে ১ বছরের জন্য সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, বহুল আলোচিত ফুলপরির ঘটনার পরে আমরা র্যাগিং বিষয়ক বিভিন্ন ধরনের সভা করেছি। এছাড়া মাইকিং করিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে কেউ র্যাগিংয়ের সাথে জড়িত থাকলে তার ব্যাপারে কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। এরপরেও এ ধরনের ঘটনা দুঃখজনক।