কালকিনিতে প্রতিবন্ধকতা জয় করে পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছেন শিশু ফারুক

কালকিনিতে প্রতিবন্ধকতা জয় করে পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছেন শিশু ফারুক

মো. জাফরুল হাসান, কালকিনি : নাম ওমর ফারুক বাড়ি মাদারীপুরের কালকিনি পৌর এলাকার উত্তর কৃষ্ণনগর গ্রামে। পরিবারের দেয়া তথ্যমতে বর্তমান বয়স ১২ বছর। উচ্চতা প্রায় দুই ফিট। তাতে কি? শারীরিক প্রতিবন্ধী হয়েও জীবনযুদ্ধে থেমে থাকেননি ওমর ফারুক। স্বপ্ন ছিলো অন্যদের মত বড় হবে সংসারের হাল ধরবে। কিন্তু বিধি বাম জন্ম থেকেই  ফারুক শারীরিক প্রতিবন্ধী, বেশিরভাগ মানুষই তাকে বামন হিসেবে চিনেন। তার বয়স বাড়লেও শরীরের গঠন বৃদ্ধি পায়না। জন্ম নিয়েছে একটি দিন মজুরের ঘরে। বাবা সুজন হাওলাদার পেশায় একজন শ্রমিক। মাতা রহিমা বেগম পেশায় গৃহীনি। প্রতিবন্ধী ফারুকের দুই ভাই এক বোন। ফারুকই সংসারের বড় ছেলে। তার একমাত্র বাবার উপার্জনে কোনমতে চলে তাদের সংসার। ওমর ফারুক ৭ নং উত্তর কৃষ্ণনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেনীর ছাত্র। সে প্রতিদিন সকালে বাড়ি থেকে পায়ে হেটে অনেক কষ্ট করে স্কুলে যায়। আবার স্কুল ছুটি হলে পায়ে হেটেই বাড়ি আসতে হয় তার। অভাবের সংসার তাই গায়ে ভালো কোন জামাও নেই। ভালো খাবারও জোটে না তার ভাগ্যে। আবার ফারুকের বাবা একদিন কাজ করতে না পারলে তাদের অর্ধহারে দিন কাটাতে হয়। তবে ফারুকের স্বপ্ন সে লেখা পড়া শেষে সরকারি চাকুরীজীবি হয়ে তার বাবা মাকে সুখে রাখবে। তার প্রবোল ইচ্ছে রয়েছে পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়ার। কিন্তু বাবা গরীব হওয়ায় মাঝে মধ্যে পড়ালেখার প্রতি মন ভেঙ্গে যায় ফারুকের। তারপরও মনের জোরে প্রতিবন্ধকতা জয় করে পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছে ওমর ফারুক।

আজ সোমবার সকালে জানাগেছে, শিশু ওমর ফারুক জন্ম থেকে শারীরিক প্রতিবন্ধী। তার দুটি পা এবং দুটি হাত তার শরীরে ন্যায় অনেক ছোট। তার স্কুলে যাতায়াত করতে গিয়ে নিদারুন কষ্ট পোহাতে হয়। একজন স্বাভাবিক মানুষের ন্যায় তার পায়ে হেটে স্কুলে যেতে অনেক সময় লেগে যায়। অনেক সময় পথে বসেই স্কুলে ক্লাশ শুরু হয়ে যায়। একারনে সে লেখাপড়ায় অনেক পিছিয়ে পড়ছে। ফারুক যে প্রতিবন্ধী হিসেবে ভাতা পায় সে অর্থ দিয়ে কিছুই হয়ে না তার। তার এখন লেখাপড়া চালানো ও খেয়ে পরে বেচে থাকা কষ্টের কারন হয়ে দাড়িয়েছে।

প্রতিবন্ধী শিশু ওমর ফারুক জানায়, আমি লেখাপড়া করে অনেক বড় হতে চাই। আমি স্কুলে যাওয়ার পথে অনেকেই আমাকে নিয়ে হাসি ঠাট্টা করে। তারপরও আমি লাজলজ্জা মাটি চাপা দিয়ে লেখা পড়া চালিয়ে যেতে চাই। এক সময় সকল কষ্ট ঘুচে যাবে। কারন লেখাপড়া শিখে বড় হয়ে সকল হাসি ঠাট্টার জবাব দিতে চাই।

ওমর ফারুকে মা রহিমা বেগম জানান, আমার ছেলে তার নিজ ইচ্ছাই লেখাপড়া করতেছে। আমাদের স্বপ্ন যেন ফারুক পুরন করতে পারে সেটাই আমার আশা।

এব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বদিউজ্জামান জানান, ফারুককে সহযোগীতা