সমীকরণের হিসেবেই আটকে থাকবে বাংলাদেশ?

সমীকরণের হিসেবেই আটকে থাকবে বাংলাদেশ?

এশিয়া কাপের নবম আসরের পর্দা নামতে আর মাত্র চারটি ম্যাচ বাকি। সবগুলো ম্যাচই হবে বৃষ্টিপ্রবণ কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে। বাংলাদেশ ছাড়া বাকি তিন দল সুপার ফোরে এখন পর্যন্ত একটি করে জয় পেয়েছে। ফলে যুক্তির বিচারে বাংলাদেশের ফাইনালের সমীকরণ মেলানোটা কিছুটা হাস্যকরই মনে হতে পারে। কিন্তু হাস্যকর মনে হলেও এটিই এখন বাংলাদেশ দলের বাস্তবতা। এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলতে যেখানে এত সমীকরণ কষতে হচ্ছে, তখন বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন দেখাটা কি আরও বেশি হাস্যকর নয়?

সমীকরণটা অনেকটা প্রথম রাউন্ডের মতো, যেখানে আফগানিস্তানকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে টাইগাররা পা রেখেছিল সুপার ফোরে।ব্যাটিং বিপর্যয়ে এশিয়া কাপের সুপার ফোরে টানা দুই হার দেখেছে সাকিব আল হাসানের দল। যা চলমান এই টুর্নামেন্ট থেকে কার্যত বাংলাদেশের বিদায়ঘণ্টা বাজিয়ে দিয়েছে। তবে কাগজে-কলমে এখনও টিকে আছে টাইগাররা। সুপার ফোরে বাংলাদেশ-পাকিস্তানের একটি করে এবং ভারত-শ্রীলঙ্কার দুটি ম্যাচ বাকি রয়েছে। দুটি বড় হার নিয়ে নেট রানরেটে বেশ পিছিয়ে আছেন সাকিবরা। সে কারণে ভারতের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে তাদের বড় ব্যবধানে জিততে হবে। একইসঙ্গে বাকি তিনদলের দিকেও তাকিয়ে থাকতে হবে টিম টাইগার্সকে।

তবে সুপার ফোরের লড়াইটা তার চেয়েও কঠিন। এজন্য বাংলাদেশ মেলাতে হবে ‘যদি-কিন্তু’র হিসাব। সেক্ষেত্রে শ্রীলঙ্কাকে হারাতে হবে ভারত-পাকিস্তান দুই দলকেই। তখন শেষ ম্যাচে বাংলাদেশ বড় ব্যবধানে জিতলে ফাইনাল খেলার সম্ভাবনা তৈরি হবে। ওই সময় বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও ভারতের সমান একটি করে জয় থাকবে। এরপর দেখা হবে নেট রানরেট। তবে বৃষ্টির কারণে কোন ম্যাচ ভেস্তে গেলে শেষ হয়ে যাবে বাংলাদেশের ফাইনাল খেলার সম্ভাবনা।

কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে এসব সমীকরণ আর ‘যদি-কিন্তু’র হিসাবে আর কতদিন আটকে থাকবে বাংলাদেশ? আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশ এখন আর তরুণ কোনো দল নয়। এছাড়া, বিভিন্ন সময়ে বড় বড় টুর্নামেন্টে বড় বড় দলের সাথে জয়ের ঘটনাগুলোও কে এখন আর ‘দুর্ঘটনা’ বলে আখ্যায়িত করে না ক্রিকেট বিশ্ব। বাংলাদেশ এখন যে কোনো দলকে হারানোর ক্ষমতা রাখে। এটি কোনো ক্রিকেট বোদ্ধাই এখন আর অস্বীকার করেন না। তবুও এমন হতাশার পুনরাবৃত্তি মেনে নেয়া কষ্টকরই বটে।

পরিণত একটি দল হয়ে ওঠার যে ইঙ্গিত বাংলাদেশ দিয়ে আসছিলো তার বাস্তব প্রতিফলন এখনও অধরাই মনে হচ্ছে অনেকের কাছে। তাহলে কি এসব সমীকরণের হিসেবেই আজীবন খুশি থাকতে হবে টাইগার ভক্তদের?