শেখ কামালের জন্মদিন আজ
উত্তরাধিকার সূত্রে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নানা মানবিক ও নেতৃত্বের গুণাবলি পেয়েছিলেন শেখ কামাল। এর সঙ্গে শাণিত হয়েছিল সংস্কৃতিবোধ ও ক্রীড়া-দর্শন। ছিল দেশ ও মানুষের প্রতি অনুপম দরদ এবং দায়িত্ববোধ। খেলার মাঠ থেকে নাটকের মঞ্চ, সংগীতের ভুবন থেকে রাজনীতির ময়দান সর্বত্র ছিল তার উজ্জ্বল উপস্থিতি। ছিলেন বন্ধু ও সতীর্থদের মধ্যমণি। ১৯৪৯ সালে আগস্টের এই দিনে তার জন্ম।
সত্তরের দশকে বিশ্বের তরুণ প্রজন্ম যখন মাদকের দিকে ঝুঁকছিল, তখন শেখ কামাল যুব সমাজকে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড আর খেলাধুলার মাধ্যমে তাদেরকে দেশ গড়ার কাজে নিয়োজিত করেছিলেন। স্বাধীন দেশে সুস্থ সাংস্কৃতিক আন্দোলনই ছিল তার মূল উদ্দেশ্য।
দেশ স্বাধীনের পর শেখ কামালের ধ্যান আর জ্ঞান ছিল খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক অঙ্গন ঘিরে। আবাহনী ক্রীড়া চক্র প্রতিষ্ঠা কিংবা স্পন্দন শিল্পী গোষ্ঠী সব কিছুরই শুরু শেখ কামালের হাত ধরে। বাংলাদেশের নাট্য-আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ছিলেন এই যুবক। ছিলেন ঢাকা থিয়েটারের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা।
পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধু পুত্রকে নিয়ে হয়েছিল নানা অপপ্রচার। তবে শেখ কামালের সান্নিধ্য যারা পেয়েছিলেন, তাদের মতে, স্বাধীন বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের আইডল ছিলেন প্রিয় শেখ কামাল।
নাট্যকর্মী ডলি জহুর বলেন, কখনো তার মধ্যে আমি অহংকার দেখিনি। এখনকার নতুন জেনারেশন বাবা-মায়ের পয়সায় যেমন ফুটানি করে; সে প্রেসিডেন্ট বা প্রধানমন্ত্রীর সন্তান হয়েও তা করেনি। বাসায় গেলে দেখতাম, সাদামাটা খাবার-দাবার।
সরকারপ্রধানের সন্তান হলেও সব সময়ই ক্ষমতার বলয়ের বাইরে থাকতে পছন্দ করতেন তিনি। রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক কাজকর্মে যুক্ত থাকলেও ক্ষমতার প্রতি তার কোনো মোহই ছিল না। একজন ছাত্র সংগঠক হিসেবে তিনি কখনও নেতৃত্বের শীর্ষে আসতে চাননি।
বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামালের অসাধারণ নেতৃত্বের ক্ষমতা ও বহুমুখী গুণাবলির কারণে তার মৃত্যুর পরও খুনিচক্র তাকে নিয়ে বেশ চিন্তিত ছিল। সে কারণেই এই চক্র ও তাদের সুবিধাভোগীরা বহু বছর এই প্রতিভাবান নেতার বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও মিথ্যাচার করেছিল। তবে স্বাধীনতা বিরোধীদের অপপ্রচার শত চেষ্টার পরও সফল হয়নি। দেশ স্বাধীনের ৫২ বছর পর বাংলাদেশের সুস্থ সাংস্কৃতিক ধারাই তার বড়ো প্রমাণ।