মা-ছেলের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় মামলা, একজন জেলে
গাজীপুরের শ্রীপুরে মা-ছেলের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। মরদেহে হত্যার প্রাথমিক আলামত পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে চিকিৎসকরা। সোমবার (৯ জানুয়ারি) ওই মামলায় সন্দেহজনকভাবে গ্রেপ্তার হওয়া গৃহকর্তা ঝুমন মিয়াকে আদালতের মাধ্যমে জেলে পাঠানো হয়েছে।
নিহত রুবিনা আক্তার (২২) শ্রীপুর পৌরসভার কেওয়া পশ্চিমখণ্ড এলাকার সিরাজ মিয়া শিরুর মেয়ে এবং মুন্সীগঞ্জের বিক্রমপুর উপজেলার কুদ্দুসের ছেলে ঝুমন মিয়ার স্ত্রী। রুবিনার মরদেহের পাশ থেকে ছেলে জিহাদের (৪) মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহতের স্বামী ঝুমন মাওনা এলাকায় ভাড়া থেকে রঙিলাবাজারে একটি ওয়ার্কশপে কাজ করতেন।
মামলার বিবরণ ও নিহত রুবিনার বাবা বাদী সিরাজ মিয়া শিরুর ভাষ্যমতে, ঝুমন ও তার বাবা-মাসহ আত্মীয়-স্বজনরা শ্রীপুরের মাওনা এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছে। পাঁচ বছর আগে ঝুমন রুবিনাকে বিয়ে করে। বিয়ের পর থেকে রুবিনা তার স্বামীকে নিয়ে বাবার বাড়িতে বসবাস করে আসছে। রুবিনার সঙ্গে বিভিন্ন সময় তার স্বামীর পারিবারিক কলহ হতো।
গত ৩ জানুয়ারি থেকে রুবিনা ও তার চার বছর বয়সী ছেলে নিখোঁজ হয়। মা-ছেলে নিখোঁজের সপ্তাহখানেক আগেও স্বামী-স্ত্রীর মাঝে ঝগড়া হয়। বাড়ির গেট তালাবদ্ধ দেখতে পেয়ে স্বজনেরা ধারণা করে রুবিনা ছেলেকে নিয়ে কোথাও বেড়াতে গেছে। শনিবার (৭ জানুয়ারি) বিকেলে রুবিনার ঘর থেকে দুর্গন্ধ বের হলে ঘরের তালা ভেঙে প্রবেশ করে মা ও ছেলের গলিত মরদেহ পাওয়া যায়।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান জানান, এ ঘটনায় নিহত রুবিনার বাবা সিরাজ মিয়া শিরু অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের অভিযুক্ত করে রোববার (৮ জানুয়ারি) রাতে মামলা দায়ের করেছেন। গলাটিপে ও শ্বাসরোধের মাধ্যমে তাদের হত্যা করা হয়েছে বলে মামলার বিবরণে উল্লেখ করা হয়েছে। ঘটনার সংশ্লিষ্টতার সন্দেহে নিহত রুবিনার স্বামী ঝুমনকে গ্রেপ্তার করে সোমবার আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারী) সাতদিনের রিমান্ড চেয়ে অবেদন করা হবে। তদন্তের স্বার্থে কিছু বিষয় এ মুহূর্তে প্রকাশ করা যাচ্ছে না বলে জানান ওসি মনিরুজ্জামান।
গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের ডা. শাফী মোহাইমেন জানান, হত্যার কিছু আলামত প্রাথমিকভাবে পাওয়া গেছে। প্রকৃত কারণ নির্ণনয়ে মরদেহের অংশবিশেষ রাসায়নিক পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে। রাসয়নিক পরীক্ষার প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত নিশ্চিত করে কিছু বলা সম্ভব হচ্ছে না।