ব্রাজিলের সম্ভাব্য কোচের দৌড়ে মরিনহো-জিদান

ব্রাজিলের সম্ভাব্য কোচের দৌড়ে মরিনহো-জিদান

সেই ২০০২ কোরিয়া-জাপান বিশ্বকাপে সর্বশেষ শিরোপা জিতেছিল ব্রাজিল। এরপর দীর্ঘ ২০ বছর কেটে গেলেও চ্যাম্পিয়ন তো দূরে থাক, ফাইনালেই উঠতে পারেনি রেকর্ড পাঁচবারের বিশ্বসেরা সেলেসাওরা। সবশেষ কাতার বিশ্বকাপেও শেষ আটেই হেক্সা জয়ের স্বপ্ন থেমে গেছে নেইমার-ভিনিসিয়াস জুনিয়রদের।

ব্রাজিলকে শিরোপা জেতাতে না পেরে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে পরাজয়ের পর পরই কোচের পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন কোচ তিতে। তার সরে দাঁড়ানোয় আগামী বিশ্বকাপকে সামনে রেখে নতুন কোচের সন্ধানে রয়েছে ব্রাজিলের ফুটবল ফেডারেশন (সিবিএফ)।

তাই ব্রাজিল দলের নতুন কোচ কে হবেন, এই নিয়ে গুঞ্জন চলছে গোটা ফুটবল দুনিয়ায়। লাতিন আমেরিকার দলটি যে পাঁচবার বিশ্বকাপ জিতেছে সেটি নিজ দেশের কোচের অধীনে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বকাপ ব্যর্থতার পর এবার সেই প্রথাটাই ভাঙতে চলেছে সেলেসাওরা। এজন্য ইউরোপের বিদেশি কোচের সন্ধান করছে ব্রাজিল, জানাচ্ছে স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম।

ব্রাজিল জাতীয় ফুটবল দলের ইতিহাসে বিদেশি কোচের অধীনে খেলেছে মাত্র তিন বার। ১৯২৫ সালে চার ম্যাচে দলটির কোচ ছিলেন উরুগুইয়ান কোচ র‍্যামন প্লাতেরো, ১৯৪০ এর দিকে দুটো প্রীতি ম্যাচে দলটির কোচ ছিলেন পর্তুগালের জোরেকা। আর সবশেষ ১৯৬৫ সালে আর্জেন্টাইন কোচ ফিলপো নুনিয়েজের অধীনে একটি প্রদর্শনী ম্যাচে খেলেছিল দলটি।

ফলে ব্রাজিলের কোচ হিসেবে যিনি আসন গ্রহণ করবেন, তার প্রতি দায়িত্ব কেমন হতে যাচ্ছে। এদিকে বিশ্বকাপের আগে থেকেই ব্রাজিলের কোচের তালিকায় পেপ গার্দিওলার নাম বেশি শোনা যাচ্ছিল। এরপর রিয়াল মাদ্রিদের কোচ কার্লো আনচেলত্তির নামও শোনা যাচ্ছিল বেশ জোরেসোরে। কিন্তু এই দুই কোচ তাদের ক্লাব ছেড়ে যোগ দেবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন।

এবার ব্রাজিলের সম্ভাব্য কোচের দৌড়ে উঠে এসেছে পর্তুগিজ কোচ জোসে মরিনহো ও ফ্রান্সের কিংবদন্তি ফুটবলার জিনেদিন জিদানের নাম। তারা ছাড়াও ব্রাজিলের সম্ভাব্য কোচের তালিকায় আছে আর্জেন্টাইন মার্সেলো গ্যালার্দো, মরিসিও পচেত্তিনো, জার্মান থমাস টুখেল, স্প্যানিশ রবার্তো মার্টিনেজ ও রাফায়েল বেনিতেজের নামও।

ইতালিয়ান সংবাদমাধ্যম লা রিপাবলিকার খবর, বড়দিন উদযাপন করতে পরিবারের সঙ্গে পর্তুগাল অবস্থান করছেন জোসে মরিনহো। পর্তুগিজ এই কোচকে পেতে চায় লাতিন জায়ান্টরা। এ জন্য দুই পক্ষের আলাপও নাকি শুরু হয়েছে। এ জন্য সাও পাওলো থেকে পর্তুগালের উদ্দেশে এক মধ্যস্থতাকারীকেও পাঠিয়েছে ব্রাজিল।

মধ্যস্থতাকারীর পক্ষ মরিনিওর এজেন্ট হোর্হে মেন্দেসের সঙ্গে বসে চুক্তির যাবতীয় বিষয় নিয়ে কাজ করবে। সব ঠিকঠাক হলে জানুয়ারির মধ্যে নতুন কোচ নিয়োগ দিতে চায় ব্রাজিল। জানা গেছে, রোমায় মরিনিও নিজেও পুরোপুরি খুশি নন। তাই উপযুক্ত প্রস্তাব পেলে তিনিও চান দল বদলাতে।

এদিকে ফরাসি সংবাদমাধ্যম লেকিপে ব্রাজিলের কোচ হওয়ার দৌড়ে জিনেদিন জিদানের নামও প্রকাশ করেছেন। কারণ, ব্রাজিল যে মানের কোচের সন্ধানে রয়েছে, তার সব যোগ্যতা রয়েছে ফ্রান্সের এই কিংবদন্তির। কারণ টানা তিন মৌসুমে রিয়াল মাদ্রিদকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতিয়েছেন তিনি। তাই জিদানের অভিজ্ঞতা নিয়ে ব্রাজিলের অভিযোগের কোনো সুযোগই নেই।

জিদানের সম্ভাবনা ছিল ফ্রান্সের কোচ হওয়ার। তবে ফরাসি ফুটবলের আভাস, বিশ্বকাপ জিততে না পারলেও কোচ দিদিয়ের দেশমকেই রেখে দেবে দুই বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। সে কারণে জিদানকে অন্য কোনো জাতীয় দলের কোচিংয়ে দেখা যেতে পারে বলে ধারণা ইউরোপীয় সংবাদ মাধ্যমের। লেকিপে এবার জানিয়ে দিল, ব্রাজিলই হতে পারে তার পরবর্তী গন্তব্য।

ফলে শেষমেশ ব্রাজিল তাদের নতুন কোচ হিসেবে কাকে নিয়োগ দেয়, তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে কিছু দিন।