নরসিংদীর রায়পুরায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর চাল আত্মসাত করলেন ডিলার

নরসিংদীর রায়পুরায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর চাল আত্মসাত করলেন ডিলার

সাইফুল ইসলাম রুদ্র, নরসিংদী জেলা প্রতিনিধিঃ 

নরসিংদীর রায়পুরায় মাসুদুর রহমান মৃধা নামে এক ডিলারের বিরদ্ধে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় রোববার বিকেলে রায়পুরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।

মাসুদুর রহমান মৃধা আমিরগঞ্জ ইউনিয়নের হাসনাবাদ অঞ্চলের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১৫ টাকা কেজি দরের চাল হতদরিদ্র মানুষকে পরিমাণের চেয়ে কম দেয়া হয়। ৫০ জনের অধিক কার্ডধারীর কাছে বিক্রি না করে তা আত্মসাতের অভিযোগ উঠে। সরকার সেপ্টেম্বর-অক্টোবর দুই মাসের অগ্রিম ৩০ কেজির দুই বস্তা চাল একসঙ্গে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু ডিলার মাসুদুর রহমান মৃধা তা না করে অধিকাংশ উপকারভোগীকে ৪৫ থেকে ৫০ কেজি করে চাল বিতরণ করেন। চাল দেওয়ার সময় অনেকের কাছ থেকে সুকৌশলে কাগজে স্বাক্ষর টিপসই নিয়ে আর দেয়া হয়নি।

উপজেলা খাদ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়,  ডিলার মাসুদুর রহমান মৃধাকে ৬০৯ জন উপকারভোগীর মাঝে ১৫ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রির দায়িত্ব দেওয়া হয়। চাল বিতরণের পর অনেকে অফিসে এসে মৌখিকভাবে চাল না পাওয়ার অভিযোগ করেন।

ভুক্তভোগী সেতারা বেগম বলেন, চাল বিতরণের সময় গেলে টিপসই নিয়ে কার্ড নম্বর ৬৭১ ভুয়া বলে চাল না দিয়ে তাড়িয়ে দেন।

ভুক্তভোগী আনোয়ার ও ইউসুফ নামে দুই ব্যক্তি জানান, আমার মত অনেকে চাল পাননি। কয়েকবার তার সাথে যোগাযোগ করেও দেই দিচ্ছি বলে সময় পার করছেন। আমাদের চাল গেলো কই? এক তৃতীয়াংশ উপকারভোগী একমাসের বেশি সময় চলে গেলেও এখনো চাল পাননি। ভুক্তভোগীরা তার নিকট চাল চাইতে গেলে সদুত্তর না দিয়ে পরে দেখা করতে বলেন।

রমজান আলীর স্ত্রী, সুহেল রানা, বাবুল মোল্লাসহ অনেকের অভিযোগ, ডিলার মাসুদুর রহমান মৃধা অধিকাংশ উপকারভোগীকে চাল দেননি। চাল না পেয়ে অফিসে বলার পর ৫০ কেজি বলে বস্তা ভেঙে চাল বিতরণ করেন। ১০ কেজি করে কম দেন। বাড়িতে এসে ওজনে দেখি ৪৫-৪৮ কেজি।'

চাল বিতরণে তদারকির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফিরোজ মিয়ার মুঠোফোনে বার বার চেষ্টা করেও বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

অভিযুক্ত ডিলার মাসুদুর রহমান মৃধা মুঠোফোনে ' অনিয়মের কথা প্রথমে অস্বীকার করেন, পরে তা স্বীকার করে বলেন, ২০ জনের মত হবে ১০ কেজি করে কম দেয়া হয়েছে। তা অলিখিত হলেও জনপ্রতিনিধিদের পছন্দের মানুষকে দিতে হয়েছে। ৭ থেকে ৮ জন পায়নি তাদের দেয়া হবে।

উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা কামাল উদ্দিন বলেন, ডিলারের সাথে কথা বলে ভুক্তভোগীরা যাতে চাল পায় সে ব্যবস্থা করা হবে।'

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আজগর হোসেন বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।