কিউবার আয়রনম্যান: সহ্য করতে পারেন যেকোনো হাতুড়ির আঘাত

কিউবার আয়রনম্যান: সহ্য করতে পারেন যেকোনো হাতুড়ির আঘাত

এক, দুটি নয়; ৩২ বছরের এই জীবনে সহ্য করেছেন ৭০ লাখের বেশি হাতুড়ির আঘাত। এতটাই শক্তিশালী কিউবার লিনো টমাসেন নামের এক ব্যক্তি। দেশজুড়ে তার পরিচিতি আয়রন ম্যান নামে। বর্তমানে হাতুড়ির আঘাত খেয়ে মানুষকে খানিকটা বিনোদন দিয়ে দু-পয়সা রোজগারই তার পেশা। খেলেছেন বক্সিং-ও। তবে, ঘুষিতে এক প্রতিপক্ষের মৃত্যুর পর থেকে ছেড়েছেন খেলা। খবর রয়টার্সের।

মূলত, শৈশব থেকেই অন্যদের তুলনায় বেশ শক্তিশালী এই যুবক। মাত্র সাত বছর বয়স থেকে হাতুড়ির আঘাত সহ্য করতে পারেন। ব্যতিক্রমী এই প্রতিভার কারণে ৩২ বয়সী লিনো কিউবাজুড়ে পরিচিত আয়রন ম্যান হিসেবে।

লিনো টমাসেন বলেন, আমার বয়স যখন চার, তখন আমি জিনিসপত্র ভাঙতে শুরু করি। সাত বছর বয়সে আমি হাতুড়ি কিনে নিজেকে তা দিয়ে মারতে শুরু করি।

আর একটি হাতুড়ি দেখিয়ে তিনি বলছিলেন, এটি যখন কিনি তখন আমার বয়স ১৫। এখন পর্যন্ত এটিই ব্যবহার করেছি। এ পর্যন্ত পুরো শরীরে ৭০ লাখ আঘাত করেছি।

ওই হাতুড়ি ও তার সম্পর্কে একজন প্রতক্ষ্যদর্শী বলেন, হাতুড়িটি খুবই শক্ত। আমি হাতুড়িটি হাতে নিয়ে দেখেছি, এটির ওজন প্রায় ২০ পাউন্ড হবে। সে তার হাত দিয়ে একটি নারকেলও ভেঙেছে। আমি তাকে আশীর্বাদ করি।

লিনো টমাসেনের অবশ্য স্বপ্ন ছিল মাইক টাইসনের মতো বক্সার হওয়ার। বক্সিং রিংয়ে শুরুটাও ছিল দুর্দান্ত। একের পর এক লড়াইয়ে জিতে স্বপ্নপূরণে যখন দূর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছিলেন, তখনই ঘটে অনাকাঙ্ক্ষিত এক ঘটনা। একবার তার ঘুষির আঘাত এতটাই তীব্র ছিল, রিংয়েই প্রাণ হারায় প্রতিপক্ষ। এরপর অনুশোচনা থেকে আর কখনও বক্সিং খেলেননি তিনি।

লিনো টমাসেন বলেন, আমি ২৭টি লড়াই নকআউটে জিতেছি। শেষবার, দুর্ভাগ্যবশত প্রতিপক্ষের মাথার খুলি ফেটে যায়, সে তাৎক্ষণিক মারা যায়। এই ঘটনায় আমি মানসিকভাবে খুবই ভেঙে করি। ফাইট করে যা আয় করেছিলাম, পুরোটাই তার পরিবারকে দান করে দেই এবং প্রতিজ্ঞা করি আর কখনও বক্সিং খেলবো না।

বক্সিং ছেড়ে এখন রাস্তাঘাটে, সমুদ্রপাড়ে পর্যটকদের নিজের অদ্ভুত প্রতিভা দেখানোকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন কিউবার এই আয়রন ম্যান। মানুষ খুশি হয়ে যা দেয়, তা দিয়েই জীবিকা নির্বাহ করেন তিনি।