আয়ারল্যান্ডকে হারিয়ে ইতিহাস বদলাতে পারবে বাংলাদেশ?

আয়ারল্যান্ডকে হারিয়ে ইতিহাস বদলাতে পারবে বাংলাদেশ?

বাংলাদেশের টেস্টের রেকর্ড এমনিতেই খারাপ। তারওপর একটি পরিসংখ্যান আছে চরম খারাপ। তাহলো, ২০০০ সালে অভিষেক টেস্টে ভারতের কাছে হারের পর সব দেশের সাথে প্রথম টেস্টে পরাজয় সঙ্গী হয়েছে টিম বাংলাদেশের। এমনকি আফগানিস্তানের সাথেও প্রথম টেস্ট হারের রেকর্ড আছে।

২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আফগানিস্তানদের সঙ্গে প্রথম টেস্ট খেলতে নেমেছিল টাইগাররা। ওই টেস্টে লড়াইটাও করতে পারেনি। আফগানরা টেস্টটি জিতে নেয় ২২৪ রানের বড় ব্যবধানে।

এবার আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথমবার টেস্ট খেলতে নামার পালা। আগামীকাল ৪ এপ্রিল মিরপুর শেরে বাংলায় শুরু একমাত্র টেস্ট। এবার কি করবে সাকিব আল হাসানের দল? আইরিশদের বিপক্ষে কি ইতিহাস বদল হবে?

এমনিতে এ টেস্ট নিয়ে ভক্ত ও সমর্থকদের তেমন কোনো উৎসাহ-উদ্দীপনা নেই। তবে যেহেতু ইতিহাস-পরিসংখ্যান বিপক্ষে, তাই এই টেস্টকেও একেবারে হালকাভাবে নেওয়ার উপায় নেই।

এই টেস্টে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এবং প্রধান লক্ষ্য থাকবে, ইতিহাস বদলানো। আইরিশবধের মধ্যে দিয়ে যেন ছেদ ঘটে সব টেস্ট খেলুড়ে দেশের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে হারের বিব্রতকর রেকর্ডের।

শক্তি, সামর্থ্য ও অভিজ্ঞতায় বাংলাদেশকে এই টেস্টে ফেবারিটই বলতে হবে। সেই তুলনায় আইরিশরা অনেকটা পিছিয়ে।

ইদানীং পেস বোলিংয়ের বিপ্লব ঘটলেও দেশের মাটিতে টেস্টে এখনও বাংলাদেশের মূল শক্তি স্পিন। সেক্ষেত্রে সাকিব, তাইজুল ও মিরাজ তিন স্পিনার হতে পারেন বাংলাদেশের বোলিংয়ে ট্রাম্পকার্ড। তাদের মানের স্পিনার নেই আয়ারল্যান্ডে।

গত ডিসেম্বরে ভারতের সাথে টেস্ট সিরিজেও তাইজুল ও মিরাজ সামর্থ্যের পরিচয় দিয়েছেন। বাংলাদেশ ২-০‘তে সিরিজ হারলেও তিন স্পিনার মিরাজ (১০টি), তাইজুল (৯টি) এবং সাকিব (৬টি) ২ টেস্টে ২৫ উইকেটের পতন ঘটিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন, দেশের মাটিতে স্পিনই টাইগারদের বড় শক্তি।

এবার শেরে বাংলায় আইরিশদের বিপক্ষে এই তিন স্পিনারই হবেন বাংংলাদেশের প্রধান অস্ত্র। সাথে পেসার খালেদ হোসেন ও এবাদত হোসেনকে হয়তো দেখা যাবে। চমক জাগিয়ে অভিষেক হতে পারে রেজাউর রহমান রাজারও।

সাইড স্ট্রেইনের কারণে এ টেস্ট থেকে সরে দাঁড়াতে হয়েছে ফর্মে থাকা ফাস্টবোলার তাসকিন আহমেদকে। আর ইনজুরির কারণে দলেই নেই ভারতের সাথে টেস্ট অভিষেকে শতরান করা জাকির হাসান। এদিকে ছেলের অসুস্থতার জন্য অস্বস্তিতে তামিম ইকবাল।

তামিম শেষ পর্যন্ত না খেললে হয়তো ওপেনিং জুটিতে পরিবর্তন আসবে। সেক্ষেত্রে সাদমান ইসলাম না হয় মাহমুদুল হাসান জয়ের যে কোনো একজন খেলবেন। বাকি পজিশনগুলোয় নাজমুল হোসেন শান্ত, মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম ও অধিনায়ক সাকিব আল হাসান অটো চয়েজ।

এদিকে আয়ারল্যান্ড এখন পর্যন্ত টেস্টই খেলেছে মোটে তিনটি। এটা হবে হবে আইরিশদের ৪ নম্বর টেস্ট। আগের ৩ টেস্টে পাকিস্তানের কাছে ৫ উইকেটে , আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৭ উইকেটে আর সবশেষ ২০১৯ সালের জুলাইতে লর্ডসে ইংল্যান্ডের কাছে ১৪৩ রানে হেরেছে আইরিশরা।

আয়ারল্যান্ডের কয়েকজন ক্রিকেটারের কাল (মঙ্গলবার) টেস্ট অভিষেক ঘটবে। এই দলটির একটা উল্লেখযোগ্য অংশ নবীন। সবচেয়ে বড় কথা, আইরিশদের হাতে রশিদ খানের মত বড় ও অতি কার্যকর অস্ত্র নেই, যা দিয়ে বাংলাদেশের কন্ডিশনে টাইগারদের বধ করা সম্ভব।

কাজেই বাংলাদেশ দল ভারতের সাথে শেষ ২ ম্যাচের টেস্ট সিরিজে যে ক্রিকেট খেলেছে, তাও যদি খেলতে পারে, আইরিশরা কুলিয়ে উঠতে পারার কথা নয়। তারপরও অনিশ্চয়তার খেলায় আগেভাগে কিছু বলে দেওয়া যায় না।