১০০ আসনে আওয়ামী লীগের শত্রু আওয়ামী লীগ
আওয়ামী লীগ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সারা দেশে নির্বাচনী আসন গুলোতে অনেকগুলো জরিপ পরিচালনা করেছে। এই জরিপে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা যেমন যাচাই করা হয়েছে তেমনি আওয়ামী লীগের চ্যালেঞ্জ গুলোর সম্পর্কেও তথ্য-উপাত্ত উঠে এসেছে। আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, অন্তত ৩ টি জরিপে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যাচ্ছে অন্তত ১০০ টি আসনে আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগই। এই আসন গুলোতে আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী রয়েছেন এবং তারা জনপ্রিয়তার দিক থেকে সমান সমান। এদের কারণে আওয়ামী লীগ বিভক্ত। এদের যেকোনো একজন প্রার্থী হলেই আওয়ামী লীগের জয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু তারা দুজন দুজনের ক্ষতি করছেন এবং এর ফলে তৃতীয় পক্ষ লাভবান হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এরকম ১০০ টি আসন চিহ্নিত করা হয়েছে এবং এই ১০০ টি আসনে অবিলম্বে অন্তঃকলহ এবং দলের বিরোধ বন্ধ করার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, যে সমস্ত আসন গুলো এতদিন ধরে আওয়ামী লীগের ভোট ব্যাঙ্ক হিসাবে পরিচিত ছিল এরকম আসনের মধ্যে অন্তত ৪০ টিতে অন্তঃকলহ তীব্র আকার ধারণ করেছে। যেখানে প্রতিনিয়ত একপক্ষের সঙ্গে অন্য পক্ষের বিরোধ লেগে আছে। এই বিরোধ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জন্য বড় ধরনের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে আওয়ামী লীগের নেতারা মনে করছেন।
জরিপের এই সমস্ত তথ্য-উপাত্ত গুলোর কথা স্বীকার করেছেন আওয়ামী লীগের একজন সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগের মতো একটি জনপ্রিয় দলে একাধিক প্রার্থী থাকবে এটাই স্বাভাবিক। তবে সমস্যা হলো যে এই ১০০ টি আসনে প্রার্থীরা একে অন্যের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি আক্রমণ করছেন। একে অন্যকে মাঠে দাঁড়াতে দিতে চাইছেন না। তাদের মধ্যে কাদা ছোড়াছুড়ি, সন্ত্রাস-সহিংসতা এখন নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। বর্তমান এমপি, সাবেক এমপি এবং এবার মনোনয়ন লাভে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের মধ্যে বিরোধ এখন আওয়ামী লীগের জন্য একটি বিষফোঁড়া হিসেবে দেখা দিয়েছে।
আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, অবিলম্বে যদি এই বিরোধ নিষ্পত্তি না করা যায় তাহলে এ নিয়ে ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগকে এক কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে এবং নির্বাচনে আওয়ামী লীগ চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়তে পারে।
আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, কুমিল্লার অন্তত ৩ টি আসন, চাঁদপুরের ২ টি আসন, কিশোরগঞ্জের ১ টি আসন, বগুড়ার ৩ টি আসন, রাজশাহীর ২ টি আসন, সিলেটের ২ টি আসন, বৃহত্তর বরিশালের ৮ টি আসন সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে এই ধরনের প্রার্থীদের বিরোধ আওয়ামী লীগের জন্য এখন বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে জরিপে দেখা যাচ্ছে, যে সমস্ত এলাকায় দুজন আওয়ামী লীগের প্রার্থী অনড় অবস্থানে রয়েছেন তারা দুজনই জনপ্রিয়। যে কেউ প্রার্থী হলেই জয়ী হবে। ফলে কে মনোনয়ন পাবেন—দ্রুত এই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। না হলে নির্বাচনের আগে আগে উভয়পক্ষ একে অন্যের ক্ষতি করার চেষ্টা করবে। এর ফলে নির্বাচনে লাভবান হবে তৃতীয় শক্তি। আওয়ামী লীগের জন্য এই ১০০ আসন 'ইয়েলো জোন' হিসেবে চিহ্নিত করা করা হয়েছে।