রেকর্ড তাপে পুড়ছে চুয়াডাঙ্গা, ঘরে থাকার পরামর্শ
চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে প্রথমে মৃদু ও মাঝারি তাপদাহ বয়ে যাওয়ার পর বর্তমানে তীব্র দাবদাহ চলছে। শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলিসয়াস রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়। এ সময় বাতাসের আদ্রতা ছিল ১৪ শতাংশ।
এতে করে জেলা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। আরো এক সপ্তাহ এমন তাপদাহ থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস। এ নিয় টানা ১৩ দিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় রেকর্ড করা হলো চুয়াডাঙ্গায়। প্রচণ্ড তাপদাহে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। তীব্র দাবদাহে জেলার খেটে খাওয়া মানুষ ও রোজাদাররা সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন। তীব্র গরম ও রোদের তাপের কারণে মানুষের হাঁসফাঁস অবস্থা।
এ অবস্থায় গতরাতে ও আজ শুক্রবার দুপুরে দামুড়হুদায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা দিয়েছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছে না। বিদ্যুৎ না থাকায় মানুষ ঘরে দাড়াতে পারছে না। তীব্র গরম ও রোদের তাপের কারণে শ্রমিক, দিনমজুর, ভ্যান-রিকশা চালকরা কাজ করতে না পেরে অলস সময়ও পার করছেন। একটু প্রশান্তির খোঁজে গাছের ছায়া ও ঠাণ্ডা পরিবেশে স্বস্তি খুঁজছে স্বল্প আয়ের মানুষরা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাস্তা ঘাটে লোকজনের চলাচল সীমিত হয়ে পড়ছে। আবার অনেকে জরুরি প্রয়োজন ও জীবন-জীবিকার তাগিদে প্রচণ্ড দাবদাহ উপেক্ষা করে কাজে বের হচ্ছেন। অতিরিক্ত গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন অনেকে।
শুক্রবার বেলা ৩টায় জেলা আবহাওয়া অফিস সূত্রে এ তাপমাত্রার রেকর্ড পাওয়া যায়। এটি চলতি মৌসুমের জেলা ও দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বলে জানিয়েছে চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস। চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস জানায়, শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) পর্যন্ত টানা ১৩ দিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে চুয়াডঙ্গায়। গত ২ এপ্রিল থেকে এক টানা ১৩ দিন চুয়াডাঙ্গার সর্বোচ্চ তাপমাত্র মাত্রা হলো রবিবার (২ এপ্রিল) ৩৩ দশমিক ৪ ডিগ্রি, সোমবার ৩৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি, মঙ্গলবার ৩৭ ডিগ্রি, বুধবার ৩৭ ডিগ্রি, বৃহস্পতিবার ৩৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি, শুক্রবার ৩৮ ডিগ্রি, শনিবার ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি, রবিবার ৩৯ ডিগ্রি, সোমবার ৩৯ দশমিক ২ ডিগ্রি, মঙ্গলবার ৩৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি, বুধবার ৩৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি, বৃহস্পতিবার ৪১ ডিগ্রি এবং সর্বশেষ আজ শুক্রবার ৪১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা জামিনুর রহমান জানান, চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে প্রথমে মৃদু তারপর মাঝারি তাপদাহ বয়ে যাওয়ার পর বর্তমানে তা তীব্র তাপপ্রবাহে রূপ নিয়েছে। এ ধারা আরো কিছুদিন অব্যাহত থাকবে। গরমের মৌসুমে একটানা এতদিন ধরে এক জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হওয়া বিরল।
তিনি আরো জানান, গত বছর জানুয়ারি মাস থেকেই বৃষ্টি শুরু হয়েছিল। কিন্তু এবার এখন পর্যন্ত বৃষ্টি হওয়ার সম্ভবনা দেখা যাচ্ছে না। বৃষ্টি না থাকার কারণে বাতাসে আদ্রতার পরিমাণ কমে গেছে। আবার আদ্রতা কম থাকার কারণে মেঘ তৈরি কম হচ্ছে। যার ফলে হঠাৎ কালবৈশাখি ঝড় ছাড়া সাধারণ বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আপাতত নেই।