রাশিয়া সীমান্তে বেড়া নির্মাণ শুরু ফিনল্যান্ডের
ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন সমস্যা সৃষ্টি করেছে ইউরোপের অনেক দেশেই। আর তাই নিজেকে নিরাপদ রাখতে সেসব দেশ নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে। মূলত তেমনই কারণে রাশিয়ার সাথে সীমান্তে বেড়া নির্মাণ শুরু করেছে ফিনল্যান্ড।
নিরাপত্তা জোরদার করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করার পর দেশটি রুশ সীমান্তে ২০০ কিলোমিটার (১২৪ মাইল) বেড়া নির্মাণ শুরু করেছে। বুধবার (১ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রুশ সীমান্তে নির্মাণ শুরু করা এই বেড়া ৩ মিটার (১০ ফুট) লম্বা হবে এবং এর ওপরে কাঁটাতারের বেড়া থাকবে বলে ফিনল্যান্ডের বর্ডার গার্ড জানিয়েছে।
বিবিসি বলছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর মধ্যে রাশিয়ার সাথে দীর্ঘতম সীমান্ত রয়েছে ফিনল্যান্ডের। এর দৈর্ঘ্য ১ হাজার ৩৪০ কিলোমিটার (৮৩২ মাইল)। বর্তমানে, রুশ সীমান্তে ফিনল্যান্ডের সীমানাগুলো প্রাথমিকভাবে হালকা কাঠের বেড়ার মাধ্যমে সুরক্ষিত।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ইউক্রেনে যুদ্ধ করার জন্য নিয়োগ পাওয়া থেকে বাঁচতে পালাতে চাওয়া রাশিয়ানদের সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে বেড়া নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ফিনল্যান্ড। এর পাশাপাশি নর্ডিক এই দেশটিও মঙ্গলবার সাসরিক জোট ন্যাটোতে যোগদানের বেশ কাছাকাছি চলে গেছে।
ফিনল্যান্ডের ইমাত্রা বর্ডার ক্রসিংয়ে বেড়া নির্মাণের কাজ মঙ্গলবার শুরু হয়েছে। এছাড়া সেখানে রাস্তা নির্মাণ এবং বেড়া স্থাপনের কাজ মার্চ মাসে শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে দেশটির। বেড়ার কিছু অংশে নাইট ভিশন ক্যামেরা, লাইট ও লাউডস্পিকার স্থাপন করা হবে।
ফিনল্যান্ডের বর্ডার গার্ড জানিয়েছে, ইমাত্রার ৩ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমানায় এই পাইলট প্রকল্প আগামী জুনের শেষের দিকে শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিবিসি বলছে, ফিনল্যান্ড শক্তিশালী বেড়া নির্মাণের জন্য গত বছরের জুলাই মাসে নিজেদের বর্ডার গার্ড আইনে নতুন সংশোধনী পাস করে। আর বর্তমানে কার্যকর থাকা কাঠের বেড়া মূলত গবাদি পশুর সীমান্ত অতিক্রম রোধ করার জন্য।
ইউক্রেনে রাশিয়ার পূর্ণ মাত্রায় আগ্রাসনের পর থেকে ফিনল্যান্ড তার পূর্ব সীমান্ত শক্তিশালী করার চেষ্টা করেছে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে যুদ্ধের জন্য আংশিক সৈন্য সমাবেশের ঘোষণার মাধ্যমে রিজার্ভ সেনাদের তলবের নির্দেশ দেওয়ার পর বিপুল সংখ্যক রাশিয়ান ফিনল্যান্ডে পালিয়ে যেতে শুরু করেন।
এছাড়া গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার আগ্রাসনের পর ফিনল্যান্ড এবং সুইডেন উভয়ই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ন্যাটোতে যোগ দিতে চায়। ইউরোপের এই দেশ দু’টি বছরের পর বছর ধরে নিরপেক্ষ অবস্থান ধরে রেখেছিল।