দুর্নীতি ও অপকর্মের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদেরকে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে বললেন রাষ্ট্রপতির

দুর্নীতি ও অপকর্মের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদেরকে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে বললেন রাষ্ট্রপতির

অসাধু ব্যবসায়ীদের দুর্নীতি ও অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। তিনি বলেন, ‘আপনাদেরকে দুর্নীতি এবং অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে . . . যে কোনো পরিস্থিতিতে সরকার সবসময় আপনাদের পাশে থাকবে - উৎসাহ যোগাবে।’

মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে এ আহ্বান জানান তিনি।

রাষ্ট্রপতি বলেন, দেশের শিল্পোন্নয়নে বিদ্যমান সকল সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে সকলের সম্মিলিত প্রয়াসের মাধ্যমে ২০৪১ সালের মধ্যেই ‘উন্নত বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে সক্ষমতা অর্জন করা সম্ভব।

দেশে ব্যবসা ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ বিদ্যমান- উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, শিল্প খাতের দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য সরকার ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলেছে।

তিনি উল্লেখ করেন, ‘কিন্তু এক শ্রেণির অসাধু-ব্যবসায়ীর অতি মুনাফালোভী মনোভাব ও রাতারাতি বড়লোক হওয়ার স্বপ্ন দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে বিরূপ প্রভাব ফেলছে এবং এতে জনগণের ভোগান্তি বাড়ছে।’

রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন বলেন, অল্পকিছু লোকের অপকর্মের দায়ভার গোটা ব্যবসায়ী সমাজের হতে পারে না।  

শ্রমিকদের কল্যাণের পাশাপাশি দুস্থ মানবতার সেবায় দেশের ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার প্রশংসা করেন তিনি।

শ্রমিকদের নিয়ে আন্তর্জাতিক রাজনীতি হচ্ছে উল্লেখ করে, রাষ্ট্রপতি বলেন, কিছু দুষ্টচক্র দু-একজনকে বেছে নেয় এবং এদেরকে মানবাধিকারের কথা বলে দেশ-বিরোধী চক্রান্ত করায়।

তিনি শিল্প-কারখানায় শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা ও অধিকার প্রদানকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিবেচনা করারও অনুরোধ জানান সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ইতিমধ্যে শিল্প মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমে সনাতনী থেকে ডিজিটাল কর্মসূচিতে পদার্পণের ছোঁয়া পরিলক্ষিত হয়েছে এবং ডিজিটাল থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট কর্মসূচিতে পদার্পণে বেশি সময় লাগবে না।

শ্রমিক কল্যাণের পাশাপাশি দুঃস্থ মানবতার সেবায় ভূমিকা রাখতেও ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান মো. সাহাবুদ্দিন। অনুষ্ঠানে দেশের শিল্পখাতে অবদানের জন্য বৃহৎ, মাঝারি, ক্ষুদ্র, মাইক্রো, কুটির ও হাই-টেক শিল্প— এই ছয় বিভাগে ১২টি শিল্প প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কার দেয়া হয়। এ বছর হস্ত ও কারু শিল্প বিভাগে কোনো প্রতিষ্ঠান মনোনীত হয়নি।

যেসব শিল্প প্রতিষ্ঠান পুরুস্কার পেলো:

বৃহৎ শিল্প বিভাগে প্রথম হয়েছে রানার অটোমোবাইলস, দ্বিতীয় হয়েছে জাবের অ্যান্ড জোবায়ের ফেব্রিক্স এবং তৃতীয় হয়েছে বিএসআরএম স্টিলস্।

মাঝারি শিল্প বিভাগে প্রথম হয়েছে নিতা কোম্পানি, দ্বিতীয় হয়েছে নোমান টেরি টাওয়াল মিলস্। ক্ষুদ্র শিল্প বিভাগে প্রথম হয়েছে হযরত আমানত শাহ স্পিনিং মিলস্, দ্বিতীয় হয়েছে বসুমতি ডিস্ট্রিবিউশন এবং তৃতীয় হয়েছে টেকনো মিডিয়া।

মাইক্রো শিল্প বিভাগে শুধু একটি প্রতিষ্ঠান পুরস্কার পেয়েছে, গ্রিন জেনেসিস ইঞ্জিনিয়ারিং। কুটির শিল্প বিভাগেও একটি প্রতিষ্ঠান পুরস্কার পেয়েছে, সামসুন্নাহার টেক্সটাইল মিলস্। হাইটেক শিল্প ক্যাটাগরিতে প্রথম হয়েছে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ এবং দ্বিতীয় হয়েছে সুপার স্টার ইলেক্ট্রিক্যাল এক্সেসরিজ।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মরণে এবং শিল্প উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠানকে শিল্প খাতের অবদানের স্বীকৃতি প্রদান, প্রণোদনা সৃষ্টি ও সৃজনশীলতাকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে শিল্প মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দ্বিতীয়বারের মতো এই পুরস্কার প্রদান করা হলো।