ইমরান খানের গ্রেপ্তারকে ‌‘অভ্যন্তরীণ বিষয়’ বলল যুক্তরাষ্ট্র

ইমরান খানের গ্রেপ্তারকে ‌‘অভ্যন্তরীণ বিষয়’ বলল যুক্তরাষ্ট্র

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) পার্টির চেয়ারম্যান ইমরান খানকে গ্রেপ্তার ও অন্যান্য রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে মামলাগুলোকে ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়’ বলে অভিহিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, ইমরান খান এবং পাকিস্তানের অন্যান্য রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে মামলাগুলো দেশটির অভ্যন্তরীণ বিষয়। আমরা বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো পাকিস্তানের প্রতিও গণতান্ত্রিক নীতি ও আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার আহ্বান জানাই।

তোশাখানা দুর্নীতি মামলায় গতকাল শনিবার ইসলামাবাদের আদালত ইমরান খানের বিরুদ্ধে তিন বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেন। এ রায়ের কিছুক্ষণের মধ্যেই লাহোর থেকে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

ইমরান খানের সমর্থকেরা বলছেন, চলতি বছরের শেষের দিকে পাকিস্তানে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। সেই নির্বাচনে দাঁড়ানো থেকে ইমরান খানকে বাধা দিতেই সরকার এমন পদক্ষেপ নিয়েছে।

যদি কেউ ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হন, তবে তিনি নিয়ম অনুযায়ী পাকিস্তানে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার অযোগ্য বলে বিবেচিত হন।

গতকাল মামলার রায় ঘোষণার সময় বিচারক হুমায়ুন দিলাওয়ার বলেন, তাঁর (ইমরানের) অসততা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। তিনি প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন উপহার গ্রহণ করেছিলেন এবং ইচ্ছাকৃতভাবে জাতীয় কোষাগার থেকে অর্জিত সুবিধাগুলো গোপন করে দুর্নীতির চর্চা করেছেন।

গতকাল পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার আগে এক ধারণকৃত ভিডিও বার্তায় ইমরান খান তাঁর সমর্থকদের প্রতি বিক্ষোভের আহ্বান জানিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে পোস্ট করা ওই ভিডিওতে ইমরান বলেন, ‌‘আপনারা যখন এই ভিডিও দেখবেন, তখন হয়ত আমি কারাগারে থাকব। আপনাদের কাছে অনুরোধ, চুপ করে ঘরে বসে থাকবেন না। এটি ন্যায়ের জন্য, আপনার অধিকারের জন্য, আপনার স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ... শৃঙ্খল শুধু ছিঁড়লেই হবে না, সেগুলো ভেঙে ফেলতে হবে। আপনার অধিকার না পাওয়া পর্যন্ত আপনাকে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ চালিয়ে যেতে হবে।’

গত বছর সংসদের অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হন ৭০ বছর বয়সী ইমরান খান। এরপর একের পর এক মামলার মুখোমুখি হন তিনি। ইমরান খান ও তাঁর সমর্থকেরা বরাবরাই বলে এসেছেন, এসব মামলা ভিত্তিহীন এবং রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

গতকাল শনিবার সাজা দেওয়ার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন না ইমরান খান। বিচারক তাঁকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়ার পাশাপাশি ১ লাখ পাকিস্তানি রুপি জরিমানাও করেছেন।

এই রায়ের পরপরই লাহোরের বাসভবন থেকে ইমরানকে গ্রেপ্তার করা হয়। গতকাল রাত তিনি ইসলামাবাদ থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূরের অ্যাটক শহরের কারাগারে কাটিয়েছেন।