১৩০ রানের টার্গেট দিয়েই টপার গুজরাটকে হারাল দিল্লী
মাত্র ১৩০ রানের পুঁজি নিয়ে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন গুজরাট টাইটানসকে হারিয়ে দিলে দিল্লি ক্যাপিটালস। লিগ টেবিলের শীর্ষে থাকা দলকে তাদের ঘরের মাঠে পরাজিত করেন পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে থাকা ডেভিড ওয়ার্নাররা। সেদিক থেকে বলা যায় যে, আহমেদাবাদে ফার্স্টবয়কে টেক্কা দেয় লাস্টবয়।
টস জিতে শুরুতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন দিল্লি দলনায়ক ডেভিড ওয়ার্নার। যদিও সবার ধারণা ছিল টস জিতে এই পিচে শুরুতে বল করাই শ্রেয়। তাছাড়া আকাশে হালকা মেঘ থাকায় সুইং বোলারদের অল্প-বিস্তর সাহায্য পাওয়ার সম্ভাবনা ছিল।
ওয়ার্নারের সিদ্ধান্ত কতটা সঠিক, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। কেননা ম্য়াচের একেবারে প্রথম বল থেকে উইকেট হারাতে থাকে দিল্লি। শামির প্রথম বলেই ডেভিড মিলারের হাতে ধরা পড়েন দিল্লির ওপেনার ফিল সল্ট। গোল্ডেন ডাকে সাজঘরে ফেরেন সল্ট।
দ্বিতীয় ওভারে রান-আউট হয়ে মাঠ ছাড়েন ওয়ার্নার। তিনি ২ বলে ২ রান করেন। রিলি রসউ ৮, মণীশ পান্ডে ১ ও প্রিয়ম গর্গ ১০ রান করে মাঠ ছাড়েন। পাওয়ার প্লে-র ৬ ওভারে দিল্লি ২৮ রান তুলতেই ৫ উইকেট হারিয়ে বসে। শামি একাই পাওয়ার প্লে-তে ৪টি উইকেট তুলে নেন।
সেখান থেকে দিল্লিকে লড়াইয়ে ফেরান অক্ষর প্যাটেল ও আমন খান জুটি। অক্ষর ৩০ বলে ২৭ রান করে মাঠ ছাড়েন। হাফ-সেঞ্চুরি করেন আমন। তিনি ৩টি চার ও ৩টি ছক্কার সাহায্যে ৪৪ বলে ৫১ রান করে সাজঘরে ফেরেন। ১৩ বলে ২৩ রানের আগ্রাসী ইনিংস খেলেন রিপল প্যাটেল। ব্যক্তিগত ৩ রানে নট-আউট থাকেন এনরিখ নরকিয়া। একসময় ১০০ রানের গণ্ডি টপকানো নিয়ে সংশয়ে থাকা দিল্লি নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটের বিনিময়ে ১৩০ রান তুলে লড়াইয়ের রসদ সংগ্রহ করে নেয়।
গুজরাটের হয়ে ৪ ওভারে মাত্র ১১ রান খরচ করে ৪ উইকেট তুলে নেন মহম্মদ শামি। ৩৩ রানে ২টি উইকেট তুলে নেন মোহিত শর্মা। ৪ ওভারে ২৮ রান খরচ করে ১টি উইকেট নেন রশিদ খান।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে গুজরাটও শুরু থেকেই উইকেট হারাতে থাকে। ইনিংসের প্রথম ওভারেই ঋদ্ধিমান সাহাকে (০) আউট করেন খলিল আহমেদ। প্রথম ওভারের শেষ বলে ফিল সল্টের দস্তানায় ধরা পড়েন সাহা। ৩.১ ওভারে এনরিখ নরকিয়া ফিরিয়ে দেন শুভমন গিলকে (৬)। মণীশ পান্ডের হাতে ধরা পড়েন শুভমন। পঞ্চম ওভারের শেষ বলে বিজয় শঙ্করকে ফিরিয়ে গুজরাট শিবিরে মোক্ষম আঘাত হানেন ইশান্ত। ১১৯ কিলোমিটার গতির স্লো নাকল-বলে বোল্ড হন বিজয় (৬)।
গুজরাট পাওয়ার প্লে-র ৬ ওভারে ৩১ রান তুলতেই ৩টি উইকেট হারিয়ে বসে। পাওয়ার প্লে-র ঠিক পরেই সাজঘরে ফেরেন ডেভিড মিলার। তিনি খাতা খুলতে পারেননি। ৩২ রানে ৪ উইকেট হারানো গুজরাটকে নির্ভরতা দেন ক্যাপ্টেন হার্দিক পান্ডিয়া।
অভিনব মনোহরকে সঙ্গে নিয়ে পঞ্চম উইকেটের জুটিতে ৬২ রান যোগ করেন হার্দিক। মনোহর ৩৩ বলে ২৬ রান করে মাঠ ছাড়েন। রাহুল তেওয়াটিয়া ক্রিজে এসেই ঝড় তোলেন।
শেষ ২ ওভারে জয়ের জন্য ৩৩ রান দরকার ছিল গুজরাটের। ১৯তম ওভারে নরকিয়ার শেষ ৩টি বলে পরপর ৩টি ছক্কা মারেন তেওয়াটিয়া। ওভারে ২১ রান ওঠে। শেষ ওভারে জয়ের জন্য ১২ রান দরকার ছিল টাইটানসের। ইশান্ত শর্মা শেষ ওভারে মাত্র ৬ রান খরচ করেন এবং রাহুল তেওয়াটিয়ার উইকেট তুলে নেন। গুজরাট ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১২৫ রানে আটকে যায়। ৫ রানের সংক্ষিপ্ত ব্যবধানে ম্য়াচ জেতে দিল্লি।
তেওয়াটিয়া ৭ বলে ২০ রান করে আউট হন। হার্দিক ৭টি বাউন্ডারির সাহায্যে ৫৩ বলে ৫৯ রান করে অপরাজিত থাকেন। ইশান্ত ৪ ওভারে ২৩ রানের বিনিময়ে ২টি উইকেট তুলে নেন। ২৪ রান খরচ করে ২টি উইকেট দখল করেন খলিল আহমেদ। ১টি করে উইকেট নেন নরকিয়া ও কুলদীপ। গুজরাট হারলেও ম্যাচের সেরা ক্রিকেটার নির্বাচিত হন শামি।