হাথুরুসিংহের না, কপাল খুলছে শ্রীধরন শ্রীরামের!
বাংলাদেশ ক্রিকেটে কোচ রাসেল ডমিঙ্গোর বিদায়ের পর সাকিব-তামিমদের প্রধান কোচ হিসেবে নিয়োগে সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত হচ্ছিল চণ্ডিকা হাথুরুসিংহের নাম। টাইগার সাবেক কোচ হাথুরুসিংহের সঙ্গে প্রায় সবকিছুই চূড়ান্ত করে ফেলেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। কিন্তু জাতীয় দলের দায়িত্ব নেওয়ার আগেই বিসিবিকে না করে দিয়েছেন শ্রীলঙ্কান এই কোচ।
জানা গেছে, লঙ্কান কোচ হাথুরুর সঙ্গে চুক্তির বিষয়ে দুইপক্ষ সম্মতও হয়েছিল। শুধু চুক্তিপত্রে সই ও আনুষ্ঠানিক ঘোষণাই বাকি ছিল। কিন্তু নিজে থেকেই আগ্রহ প্রকাশ করার পর এখন বিসিবির চাকরিতে যোগ না দিয়ে অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস ক্রিকেট একাডেমির পদেই থেকে যাচ্ছেন তিনি।
হাথুরুসিংহের অসম্মতি প্রকাশের পর আবারও প্রধান কোচের সন্ধানে নেমেছে নাজমুল হাসান পাপনের নেতৃত্বাধীন বোর্ড। তাই গুঞ্জন উঠছে গত টী-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে টাইগার দলের টেকনিক্যাল কনসালটেন্ট হিসেবে কাজ করা শ্রীধরন শ্রীরামের নাম। অনেকেই মনে করছেন, ভাগ্য খুলতে পারে ভারতীয় এই কোচের।
এদিকে হাথুরুসিংহে না আসার বিষয়ে বিসিবির নাম প্রকাশে একজন পরিচালক বলেন, ‘বিসিবির সঙ্গে ইউটার্ন নিয়ে হাথুরুসিংহে না করে দিয়েছেন। যতদূর সম্ভব হাথুরুসিংহেকে পাওয়া যাচ্ছে না। এই বিষয়টি নিয়ে হাথুরুর সঙ্গে ফোনে ও হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করা হলেও তেমন সাড়া দিচ্ছেন না তিনি।’
বিসিবির ওই কর্মকর্তারা ধারণা, হাথুরুসিংহের বর্তমান কর্মস্থল নিউ সাউথ ওয়েলস ক্রিকেট একাডেমি থেকে সুযোগ-সুবিধা বাড়িয়ে নিয়েছেন তিনি। এজন্য বাংলাদেশ দলের দায়িত্ব নিচ্ছেন না ৫৪ বছর বয়সী এই কোচ।
ওই কর্মকর্তা আরও জানিয়েছেন, ‘বিসিবির চাকরির প্রস্তাবের ফায়দা নিয়েছেন হাথুরু। আমাদের ধারণা, সুযোগের অপেক্ষায় ছিলেন তিনি। বিসিবির চাকরি নিশ্চিত করে তিনি বর্তমান কর্মস্থলের সঙ্গে সুযোগ-সুবিধা নিয়ে দরকষাকাষি করেছেন।’
কোচ নিয়োগ প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত একজন কর্মকর্তা বলেছেন, ‘সম্ভবত হাথুরুসিংহে না করে দিয়েছেন। এই না করে দেওয়ায় বিসিবি কর্মকর্তারা হতাশা হয়েছেন। এছাড়া এ মুহূর্তে ভালো কোচ পাওয়াটাও চ্যালেঞ্জিং। হাথুরু পিছু হটায় শ্রীধরন শ্রীরামের কপাল খুলে যেতে পারে। সাদা বলের ক্রিকেটের প্রধান কোচ হতে পারেন তিনি।
এর আগে গত বছর ১৯ আগস্ট এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপের জন্য বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি দলের দায়িত্ব দেওয়া হয় শ্রীরামকে। সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপে তার অধীনে ২ ম্যাচে মাঠে নেমে দুটিতেই পরাজয় বরণ করে বাংলাদেশ।
এরপর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সুপার টুয়েলভে দুটি ম্যাচে জয় পায় টাইগাররা। সব মিলিয়ে ১১টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে বাংলাদেশ জিতেছে চার ম্যাচে। ফলের দিকে নজর না দিয়ে প্রক্রিয়া ঠিক রাখার কথা বেশ কয়েকবার বলেন শ্রীরাম। পাশাপাশি পরিস্থিতি অনুযায়ী কার্যকর অবদান রাখার দিকেই বেশি মনোযোগ দিয়েছেন তিনি।
তখন থেকেই শ্রীরামকে বাংলাদেশ দলের কোচ হিসেবে নজরে রাখে বিসিবি। বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসানও সাবেক এই ভারতীয় অলরাউন্ডারকে লম্বা সময় দলের সঙ্গে চেয়েছিলেন। শ্রীরাম দায়িত্ব নেওয়ার পর পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দেখা গেছে।
উদ্বোধনী জুটি নিয়ে নানান পরীক্ষা নিরীক্ষার পরেও বেশিরভাগ ম্যাচে প্রথম ৬ ওভারে ৪০ এর বেশি রান করেছে বাংলাদেশ। বোলিং-ফিল্ডিংয়েও আগের চেয়ে নিখুঁত দেখা যাচ্ছে দলকে। ফলে সাদা বলের ক্রিকেটে শ্রীরাম যদি দায়িত্ব নেন তাহলে খুব একটা মন্দ হবে না সাবেক অস্ট্রেলিয়ান এই সহকারী কোচ।