লাগামহীন নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য

লাগামহীন নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য

বছরজুড়েই নিত্যপণ্যের দাম নিয়ে হাহাকার লেগে থাকে। গরু, মুরগি, খাসি সবকিছুর দাম আগে থেকেই বাড়তি। বাজারে এখন কম দামে কোনো মাছও পাওয়া যাচ্ছে না। সব ধরনের মাছের দাম বাড়তি। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি পোহাতে হয় নিম্ন ও নিম্নমধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের। অবস্থার পরিবর্তন হয় না রমজান মাসেও। রোজার দিনগুলোতেও বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য থাকে লাগামহীন।

অথচ প্রতিবারই রমজান এলে সরকারের সংশ্লিষ্টরা সাধারণ মানুষকে আশ্বস্ত করেন। বলা হয়, রমজানে পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে কঠোরভাবে বাজার পর্যবেক্ষণ করা হবে। বলা হয়, রমজানে দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখা হবে। কিন্তু বাস্তবতা তথৈবচ। আদতে হয় না এসবের কোনোকিছুই। ঘটে না আশ্বাসের প্রতিফলনও।

এবারও দুয়ারে কড়া নাড়ছে সিয়াম সাধনার মাস পবিত্র মাহে রমজান। এরই মধ্যে বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামও একটু একটু করে আরও বাড়তে শুরু করেছে। শেষ পর্যন্ত আকাশছোঁয়া এ দাম কোথায় গিয়ে থামে, তা নিয়েই এখন দরিদ্র ও নিম্নবিত্তের মানুষের যত চিন্তা। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বাজারে সরবরাহ ঘাটতি না থাকা সত্ত্বেও ব্রয়লার মুরগি ও সবজিসহ প্রায় সবকিছুর দামই ঊর্ধ্বমুখী। শুধু একদিনের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিপ্রতি বেড়েছে ২০ টাকা।

শুক্রবার (১০ মার্চ) সকালে রাজধানীর কাওরানবাজারে গিয়ে দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি বেড়েছে বয়লার মুরগির দাম। ২৩৫ থেকে ২৪০ টাকা কেজির ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ২৬০ টাকায়। গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা আর খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১১০০ টাকা কেজি।

মুরগি বিক্রেতারা অভিযোগ করেন, বৃহস্পতিবার জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরে মুরগির ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকের পরেই পাইকারি বিক্রেতারা ব্রয়লার মুরগির দাম বাড়িয়েছেন কেজিপ্রতি ২০ টাকা।

কাওরানবাজারের এক মুরগি বিক্রেতা বলেন, পাইকাররা বলছেন খামারে আজকে মুরগির দর বেশি। সেজন্য তারা কেজিপ্রতি ২০ টাকা বাড়িয়েছে। গতকাল মিটিং হয়েছে, অথচ আজকেই তারা ৫ টাকা বা ৭ টাকা নয়, এক লাফে ২০ টাকা দাম বাড়িয়েছে দিয়েছে। আমি একজন খুচরা বিক্রেতা। দাম বেশি চাইতে গেলে ক্রেতাদের সঙ্গে আমাদের হট্টগোল হয়।

এদিকে রমজানের আগে সবজি বাজারে প্রতিটি সবজি বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। ফুলকপি ও বাঁধাকপি ৩০ টাকা, বেগুন ৫০ টাকা, টমেটো ২০-২৫ টাকা, লাউ ও শিম ৪০ এবং কড়লা ১১০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এদিকে বাজারে গত এক মাসে ছোলার দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা। মাসখানেক আগে প্রতি কেজি ছোলা বিক্রি হয়েছে ৮০-৮৫ টাকা দরে, যা এখন ৯৫-১০০ টাকা। ছোলার সঙ্গে ছোলাবুটের দামও বেড়েছে ৫-১০ টাকা। বাজারে প্রতি কেজি ছোলাবুট বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ৯৫ টাকায়।

এছাড়া অ্যাংকর ডাল কেজিতে ১০ টাকার মতো বেড়ে ৭০-৮০ টাকা এবং একইভাবে বেসনের দাম বেড়ে ১০০ থেকে ১০৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। দাম বাড়ায় ক্ষোভ জানিয়েছেন ক্রেতারা। সবকিছুর দাম কমানোর দাবি জানিয়েছেন তারা। বাজারে মনিটরিং ব্যবস্থা না থাকায় এমন অবস্থা তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ ক্রেতাদের।