মহাকাশে মৃত্যু হলে শেষকৃত্য কীভাবে হবে

মহাকাশে মৃত্যু হলে শেষকৃত্য কীভাবে হবে

১৯৭১ সালের ৩০ জুনের ঘটনা। মহাকাশ স্টেশন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পৃথিবীতে ফিরে আসছিল রুশ মহাকাশ যান সয়ুজ-১১। এ সময় এক দুর্ঘটনায় মারা যান তিন রুশ নভোচারী। এটি মহাকাশে শেষ মৃত্যুর ঘটনা নয়। মানুষের মহাকাশ যাত্রার বয়স ৬০ বছরের বেশি। এর মধ্যে মহাকাশে ২০ জন মারা গেছেন, যাদের ভেতর ১৪ জনই ছিল মার্কিন গবেষণা সংস্থা নাসার নভোচারী।

সংস্থাটি জানিয়েছে, ২০২৫ সালে তারা চাঁদে মানুষ পাঠাবে। আর কয়েক দশকের মধ্যে মঙ্গলেও মানুষ পাঠাবে বলে জানিয়েছে নাসা। আর এখান থেকেই প্রশ্ন আসে এসব অভিযানে মানুষের মৃত্যু হলে কীভাবে শেষকৃত্য হবে। 

যদি কেউ আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে মারা যান তাহলে কয়েকদিনের মধ্যে তাঁকে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনা সম্ভব। চাঁদের ক্ষেত্রেও বিষয়টি এমন। আর এ নিয়ে নাসার নির্দিষ্ট প্রটোকল রয়েছে। তবে মঙ্গলযাত্রায় মৃত্যু হলে বিষয়টি এমন নাও হতে পারে। কারণ পৃথিবী থেকে মঙ্গলের দূরত্ব ৩০ কোটি মাইল। আর এজন্য পৃথিবীতে কারও মরদেহ নিয়ে ফিরে আসতে লাগতে পারে কয়েক বছর। কারণ দূরত্বের কারণে এ গ্রহ থেকে মিশন শেষ করে আসা অসম্ভব। হয়ত এ সময় মরদেহগুলো বিশেষ ব্যাগ বা আলাদা চেম্বার ব্যবহার করে মরদেহ সংরক্ষণ করা যেতে পারে। তবে এসবই হবে যদি কেউ স্পেস স্টেশন বা মহাকাশযানের ভেতর মারা যান।

পৃথিবীতে মাটিতে উপস্থিত জীবাণু শরীরকে নির্মূল করতে সাহায্য করে। কিন্তু মহাকাশে এমনটা হয় না।  মঙ্গল গ্রহে কেউ মারা গেলে তার দেহ গলবে  না। পচে যাবে না, কিন্তু দ্রুত গতির বাতাস এবং পাথরে ঘষা লাগলে  শরীর নষ্ট হয়ে যাবে। হাড় ভেঙে যেতে পারে। চাঁদের তাপমাত্রা মাইনাস ১২০ থেকে ১৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত থাকে, এই ক্ষেত্রে শরীর হিম হয়ে যাবে। পাথর হয়ে যাবে। এটি ভেতরের দিকে কিছুটা পচে যেতে পারে, তবে বাইরের দিকে এটি পচে যাওয়া কঠিন।

তবে চাঁদে বা মঙ্গলে কারও মৃত্যু হলে কীভাবে শেষকৃত্য হবে তা এখনও অস্পষ্ট। শুধু মরদেহগুলো কী হবে সেটি প্রশ্ন নয়। তাঁর সঙ্গে থাকা অন্যান্য ক্রু সদস্য ও পৃথিবীতে থাকা পরিবারের সদস্যদের ওপর কেমন প্রভাব পড়বে সেটিও একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। আর এ নিয়ে নাসার স্পষ্ট পরিকল্পনা প্রয়োজন।