ভোটে আসছে ছোট ছোট দল
সরকার পতন চেয়ে আন্দোলনরত দলগুলোর অনেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে বেশি আগ্রহী।এত দিন বিএনপির সঙ্গে হরতাল-অবরোধ কর্মসূচিতে থাকা মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমের কল্যাণ পার্টির নেতৃত্বে তিন দলের জোট ‘যুক্তফ্রন্ট’ বুধবার নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
আরো কয়েকটি দলকে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় যুক্ত করার চেষ্টা চলছে। আন্দোলনের এই পর্যায়ে সরকারবিরোধী হিসেবে পরিচিত দলগুলোর নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণায় রাজনৈতিক দৃশ্যপটে বেশ পরিবর্তন আসতে শুরু করেছে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ভোটে আসতে পারে ছোট দলগুলোর মধ্যে ইসলামপন্থী একাধিক দলের নাম রয়েছে। দলগুলো শিগগিরই নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দিতে পারে। তবে বিএনপির আলোচিত ও পরিচিত নেতাসহ অনেকেই দল ছেড়ে নতুন দুটি দলে (তৃণমূল বিএনপি ও বিএনএম) যুক্ত হয়ে নির্বাচনে অংশ নেবেন বলে যে আলোচনা ছিল, তাতে এখন পর্যন্ত উল্লেখ করার মতো ফল আসেনি। এ নিয়ে সরকারের উচ্চপর্যায়ে অসন্তুষ্টি রয়েছে। তাই শেষ মুহূর্তে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার তারিখ একটু পিছিয়ে হলেও বিএনপির আরও কিছু নেতা, আরও কিছু দলকে নির্বাচনে আনার কথা ভাবা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
আগামীকাল শুক্রবার খেলাফত মজলিস (দেয়ালঘড়ি প্রতীক) ও পরদিন শনিবার বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের (বটগাছ প্রতীক) কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরার সভা আছে। দল দুটির পৃথক ওই শুরার সভায় ৭ জানুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যাওয়া না-যাওয়ার বিষয়ে দলীয় সিদ্ধান্ত হবে বলে জানা গেছে। নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত এই দল দুটি পাঁচ–দলীয় জোট ‘সমমনা ইসলামি দলসমূহ’-এর শরিক।
আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্র জানিয়েছে, এখন তাদের লক্ষ্য চরমোনাই পীরের দল ইসলামী আন্দোলন, ড. কামাল হোসেনের গণফোরাম, নুরুল হকের নেতৃত্বাধীন গণ অধিকার পরিষদকে নির্বাচনে আনা। গণফোরাম আগামী শনিবার নির্বাচন প্রশ্নে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এর বাইরে অলি আহমদের নেতৃত্বাধীন এলডিপিও আওয়ামী লীগের নজরে আছে।
সমমনা দলগুলোর শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা জানান, রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বদল ও নির্বাচনে জিতে আসার সম্ভাবনা থাকায় তারা মত পাল্টেছেন। এত দিন ধরে ৩৬টি রাজনৈতিক দল নিয়ে যুগপৎ আন্দোলন করছিল বিএনপি।
এখন কয়েকজন রাজনৈতিক নেতা আন্দোলনের মাঠে অনুপস্থিত, কারো কারো হঠাত্ আড়াল হয়ে যাওয়ার বিষয়টিও নানা আলোচনার জন্ম দিচ্ছে।
আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী সূত্র জানায়, দলটি আগামী কয়েক দিনের মধ্যে নিজেদের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করবে। তবে ৩০০ আসনের নয়, ভেঙে ভেঙে প্রার্থী ঘোষণা করা হতে পারে। অর্থাৎ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের শরিক, জাতীয় পার্টি ও বিএনপি ছেড়ে আসতে পারেন—এমন সম্ভাব্য নেতাদের জন্য ৭০টির মতো আসন বাদ রেখে প্রার্থী ঘোষণা হবে।
অন্য দল ও নেতাদের ভোটে আনার ক্ষেত্রে এখনো ঘাটতি থাকায় মনোনয়নপত্র দাখিলের সময়সীমা কিছুটা পেছানোর কথাও ভাবা হচ্ছে বলে জানা গেছে। তবে ভোটের তারিখ কোনোভাবেই পেছানোর পক্ষে নয় আওয়ামী লীগ।