বৃদ্ধা মার কাছ থেকে কৌশলে সম্পত্তি লিখে নিলেন দুই ছেলে, আদালতে

বৃদ্ধা মার কাছ থেকে কৌশলে সম্পত্তি লিখে নিলেন দুই ছেলে, আদালতে

কৌশলে সম্পত্তি লিখে নেওয়ার অভিযোগে দুই ছেলের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন হামেসা বেগম (৮৫) নামের এক বৃদ্ধা। বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমলি আদালতে ছেলে আলিম উদ্দীন ও আব্দুর রাকিবের নামে মামলা করেন তিনি।

পরে আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. হুমায়ুন কবীর সদর মডেল থানা পুলিশের ওসিকে মামলাটি এফআইআর হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার বিষয়ে হামেসা বেগম বলেন, আমার স্বামী ও আমার প্রায় ৭৬ লাখ টাকা মূল্যের জায়গা-জমি কৌশলে লিখে নিয়েছে আমার দুই ছেলে। আত্মসাতের উদ্দেশ্যে জালিয়াতি ও প্রতারণার মাধ্যমে স্থাবর-অস্থাবর সব সম্পত্তি নিজেদের নামে লিখে নিয়েছে তারা। এতে বঞ্চিত হয়েছে আমার আরও দুই ছেলে ও দুই মেয়ে।

অভিযোগে আরও জানা যায়, বৃদ্ধা হামেসা বেগম ও তার স্বামী ফহিমুদ্দিন চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার বিভিন্ন মৌজায় ৫৪ দশমিক ৬৬ শতক সম্পত্তি দীর্ঘদিন ধরে ভোগ দখল করে আসছিলেন। সেই জমির কিছু অংশ সরকার অধিগ্রহণ করেছে জানিয়ে ক্ষতিপূরণের টাকা নেওয়ার কথা বলে বৃদ্ধ বাবা-মাকে সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে নিয়ে যায় দুই ছেলে আলিম উদ্দীন ও আব্দুর রাকিব। সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে নিয়ে নতুন দলিল তৈরি করে প্রতারণার মাধ্যমে তাদের স্থাবর-অস্থাবর সব সম্পত্তি লিখে নেয় তারা। গত বছরের ২৩ নভেম্বর এই দলিল সম্পাদিত হয়। পরে দুই ছেলের প্রতারণার বিষয়টি জানতে পারেন ওই বৃদ্ধা। কিন্তু জমির বিষয় নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করলে বৃদ্ধ বাবা-মাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয় তারা।

বৃদ্ধা হামেসা বেগম বলেন, আমার দুই সন্তান আলিম উদ্দীন ও আব্দুর রাকিব প্রতারণা করে আমাদের ৫৪ শতাংশ জমি রেজিস্ট্রি করে নিয়েছে। আমাদের থাকার জায়গাটুকুও নেই। আমরা এখন রাস্তার ফকির। বৃদ্ধ বয়সে থাকার একটু জমিও রাখেনি ওই দুই ছেলে। থানায় অভিযোগ দিয়েও সুরাহা হয়নি, তাই আদালতে মামলা করেছি।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে আলিম উদ্দিন বলেন, আমার বাবা-মা শেষ বয়সে আমাদের কাছে থাকতে চেয়েছিলেন। এজন্য স্বেচ্ছায় আমাদের দুই ভাইয়ের নামে জমি লিখে দিয়েছে। জোর করে জমি লিখে নেননি বলে দাবি করেন তিনি।

হামেসা বেগমের আইনজীবী ড. তসিকুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, বৃদ্ধা তার দুই ছেলের বিরুদ্ধে ৭৬ লাখ টাকা মূল্যের জমি প্রতারণা করে লিখে নেওয়ার অভিযোগে বিজ্ঞ আমলি আদালতে মামলা করেছেন। আদালত মামলাটি এফআইআর হিসেবে গ্রহণের জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানা পুলিশের ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।