ফেরি করে পান বিক্রির টাকায় জীবন-জীবিকা চলে অসহায় মিলনের
নলছিটি (ঝালকাঠি) প্রতিনিধিঃ
প্রতিদিন সকালের আলো ফোঁটা ভোরে পানের বাক্স গলায় ঝুলিয়ে বিক্রির উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন মিলন তালুকদার (৪০)। অভাবের সংসারে পেটের দায়ে সকাল থেকে রাত পানের বাক্স নিয়ে উপজেলার বিভিন্ন হাটে বাজারে ছুটে চলেন তিনি।ফেরি করে পান বিক্রির সামান্য উপজনের টাকায় তার সংসার ও ছেলের পড়াশোনার খরচ যোগাতে হয়।
জীবন যুদ্ধো হার না মানা যুবক মিলন তালুকদার ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার কুলকাঠি ইউনিয়নের আখরপাড়া গ্রামের মৃত শাহজাহান তালুকদারের ছেলে। তিনি স্ত্রী ও তিন ছেলেকে নিয়ে কারো কাছে হাত না পেতে দারিদ্রতার সাথে লড়াই করে সততার সাথে সংসার চালায়।
সোমবার সকালে নলছিটি লঞ্চঘাট বাজারে পান বিক্রির সময় কথা হয় মিলন তালুকদারের সাথে।
তিনি বলেন,গত চারবছর ধরে পান বিক্রির টাকায় তার অভাবের সংসার চলে। প্রতিদিন পাঁচ শতাধিক টাকার পান,৭০ টাকার জর্দা, কাঁচা-শুকনো সুপারি ও চুন নিয়ে বাড়ি থেকে বিভিন্ন বাজারের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়েন।এ উপজেলার মানুষ পানের সাথে জাফরানি, ঢাকা, হেনাপাতি,হাকিমপূরী ও মিষ্টি জর্দা দিয়ে খায়। পায়ে হেঁটে হেঁটে প্রতিখিলি পান ৫ টাকাতে বিক্রি করেন।এতে তার সামান্য লাভ হয়। এ থেকে কোনদিন ৩ শত টাকা আবার কোনদিন ৪ শত টাকা আয় করে সেই টাকায় বাজার নিয়ে বাড়িতে ফিরেন।
তিনি আরও বলেন, আমার ক্ষুদ্র ইনকামে সংসদ চালাতে কষ্ট হচ্ছে।তাই বড় ছেলেটাকে ঢাকার একটি ওয়ার্কশপে পেটে ভাতে কাজে পাঠিয়েছি। মেজো ছেলেটাকে মাদ্রাসায় পড়ানোর ইচ্ছে ছিল। কিন্তু সামান্য আয়ে তা আর পারছি না। আর ছোট ছেলেটা একেবারেই ছোট।তবে আমার আয় সামন্য হলেও ভালো লাগে যে টাকাটা তার হালাল রোজগার।
শহরের ব্যবসায়ী কামরুল ইসলাম বলেন,নলছিটিতে সপ্তাহে রোববার ও বুধবার এই দুইদিন হাট বসে। আর হাটের দিনে মিলন ভাইকে ঘুরে ঘুরে পান বিক্রি করতে দেখি।তার পান বিক্রি করে যা আয় হয় তা দিয়ে বাজার করে বাড়ি ফিরেন।
শহরের হাডওয়ার ব্যবসায়ী জামাল হোসেন বলেন, বাজারের দু'দিন তার কাছ থেকে পানের খিলি কিনি। মানুষটি একেবারেই সহজ সরল। তিনি প্রতিদিন কয়েক কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে হেঁটে পান বিক্রি করে থাকেন।
মোঃ মিজানুর রহমান