নরসিংদীর জোড়া খুন চালিয়ে দেওয়া হয় দুর্ঘটনা সাজিয়ে : পিবিআই

নরসিংদীর জোড়া খুন চালিয়ে দেওয়া হয় দুর্ঘটনা সাজিয়ে : পিবিআই

নরসিংদীতে প্রতিপক্ষের দীর্ঘ পরিকল্পনায় হত্যার শিকার হন বিপ্লব ও তার বডিগার্ড মনির। তাদের হত্যার পর সড়ক দুর্ঘটনার নাটক সাজিয়ে চালিয়ে দেন অভিযুক্ত ডিস ব্যবসায়ী মামুন। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) তদন্তে বেরিয়ে আসে হত্যার এ রহস্য।

এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে চারজনকে গ্রেপ্তারের পর এসব তথ্য জানিয়েছে পিবিআই। গ্রেপ্তার হওয়া অভিযুক্তরা হলেন, মো. মাসুম মিয়া, সোহাগ মিয়া, মাসুদ মিয়া ও মামুন মিয়া।

বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে পিবিআই সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পিবিআই প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি বনজ কুমার মজুমদার।

তিনি বলেন, ২০২১ সালের ১২ আগস্ট রাত ৭টা ৫৫ মিনিটে নরসিংদী জেলার শিবপুরে মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ হয়। এতে শাহান শাহ আলম বিপ্লব ও মো. মনির হোসেন নিহত হন। পরে নিহত বিপ্লবের ভাই সোহাগ মিয়া এ ঘটনায় আদালতে একটি সিআর মামলা দায়ের করেন এবং হাইওয়ে পুলিশ কর্তৃক অভিযোগপত্রের বিষয়ে নারাজি দেন। এরই প্রেক্ষিতে আদালত সিআর মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন।

পিবিআই প্রধান বলেন, মামলার তদন্তের পর দেখা যায়, ২০১৯ সালে দুলাল গাজীকে রায়পুরা লোচনপুর বাজারে প্রকাশ্যে কুপিয়ে ও জবাই করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার প্রধান আসামি ছিলেন নিহত বিপ্লব। ঘটনাটি বাজারের মধ্যে প্রকাশ্যে সংঘটিত হলেও বিপ্লব গংদের ভয়ে সেই সময় কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়নি।

তদন্তে আরও জানা যায়, বিপ্লবের বিরুদ্ধে চারটি হত্যাসহ ১০টি মামলা ও ১১টি ওয়ারেন্ট রয়েছে। কিন্তু বিপ্লব ধরা-ছোঁয়ার বাইরে ছিলেন এবং তার ভয়ে কেউ সাক্ষ্য দিতে চায়নি। এমন পরিস্থিতিতে পিবিআই বিপ্লবকে গ্রেপ্তার করে। বিপ্লব জেল খেটে যেদিন বের হয়ে আসেন ওই দিন সাক্ষীদের দুজন জুয়েল (২২) ও নাঈমকে (২৩) এলাকায় ডাকাত সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। বনজ কুমার মজুমদার আরও বলেন, বিপ্লব ও তার সহকর্মীদের এমন কর্মকাণ্ডে এলাকার অনেকে ক্ষিপ্ত ছিলেন। এর মধ্যে এক সময় বিপ্লবের সঙ্গে ডিসের ব্যবসা করা মামুন মিয়া তার সহযোগীদের নিয়ে বিপ্লবকে হত্যার পরিকল্পনা করে। এ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সড়ক দুর্ঘটনার নামে বিপ্লব ও মনিরকে হত্যা করে তারা।

তিনি বলেন, এ ঘটনায় ৯ জনের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। এর মধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি পাঁচজনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। হত্যাকাণ্ডের পেছনে অর্থ দাতা হিসেবে ওমর ফারুক মোল্লা নামে এক প্রবাসীর নাম উঠে এসেছে। তার সম্পৃক্ততার বিষয়টি অনুসন্ধান চলছে। জড়িত ৯ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট জমা দেওয়া হবে আগামী সপ্তাহে ।