ধ্বংসস্তূপে জীবিত থাকলেও আর নেই বাঁচার সম্ভাবনা, তুরস্কে বন্ধ উদ্ধার অভিযান
ধ্বংসস্তূপের নিচে জীবিত থাকলেও আর উদ্ধারের সম্ভাবনা নেই। দুর্যোগের দু’সপ্তাহ পর আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্ধার অভিযান বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে তুর্কি সরকার। এতে স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে এসেছে তুরস্কের বাতাস। মরদেহ পাওয়ার আশাও বাদ দিচ্ছেন অনেকে। এরইমধ্যে, দুর্গত এলাকাগুলোর জন্য ১০০ মিলিয়ন ডলারের জরুরি তহবিল ঘোষণা করলো যুক্তরাষ্ট্র। ত্রাণ সহায়তার আশ্বাস ব্রিটেনেরও। খবর সিএনএন এর।
গত (৬ ফেব্রুয়ারি) ৭.৮ মাত্রার প্রলয়ঙ্কারী ভূমিকম্পে ধুলোয় মিশে গেছে ঐতিহ্যবাহী আনতাকিয়া শহর। প্রায় ২০০ বছরের প্রাচীন সব স্থাপনা বর্তমানে শুধুই ভগ্নস্তূপ। এরইমাঝে, স্বজনের সন্ধান চালাচ্ছেন বহু মানুষ। কারামানমারাশ ও হাতয় প্রদেশসহ ক্ষতিগ্রস্ত বাকি ৮ প্রদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে সন্ধান কার্যক্রমে ইতি টানলো এরদোগান সরকার। তাতে তুর্কিদের মাঝে বেড়েছে ক্ষোভ-হতাশা। প্রিয়জনের মরদেহ তো দূরের ব্যাপার, ছিন্নবিচ্ছিন্ন অংশও পাওয়ার আশা ছাড়তে হচ্ছে তাদের।
ভুক্তভোগী এক তুর্কি নাগরিক বলেন, মৃত্যু অনিবার্য। কেউ আগে, কেউবা পরে মারা যাবেন। হয়তো, ধ্বংসস্তূপে জীবিত আছেন কেউ-কেউ। কিন্তু বুলডোজারের মাধ্যমে সব তছনছ করে দেয়া হবে। প্রাণের ভিক্ষাটাও কেউ শুনতে পাবে না, ভাবলেই গা শিউরে উঠে। দু’সপ্তাহ পেরিয়ে গেলো দুর্যোগের। সরকার কেনো আর অপেক্ষা করবে?
দুর্যোগপূর্ণ এলাকাগুলো সফর করেছেন মার্কিন ও ব্রিটিশ সরকারের প্রতিনিধিরা। অতিরিক্ত তহবিল গঠনের আশ্বাসও দিয়েছেন তারা।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন বলেন, ভূমিকম্পের পরই ৮৫ বিলিয়ন ডলারের খাবার, সুপেয় পানি, ঔষধ ও বস্ত্রের সহযোগিতা দেয়া হয়েছে। সাথে ছিলেন উদ্ধারকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবীদের বিশাল দল। পরিস্থিতি বিবেচনায় আরও ১০০ মিলিয়ন ডলারের তহবিল গঠন করা হবে। শিগগিরই সেগুলো পাঠানো হবে ভুক্তভোগী মানুষদের হাতে।
ব্রিটেনের উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রী অ্যান্ড্রু মিশেল বলেন, সবচেয়ে প্রথম দেশ হিসেবে ৭৭ জনের একটি অনুসন্ধানী দল পাঠিয়েছিলো ব্রিটেন। তারা অসাধারণ দক্ষতা দেখাচ্ছেন। তাছাড়া ৮৫ মিলিয়ন পাউন্ডের ত্রাণ দেয়া হয়েছে তুরস্ক-সিরিয়ায়। জানি, সেসব যথেষ্ট নয়। বাজেট বৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়েছি সরকারকে। তিনটি সীমান্ত ক্রসিং যেনো তুরস্ক খোলা রাখে সে ব্যাপারেও নিয়মিত মধ্যস্থতা চালাচ্ছি আমরা।
আন্তর্জাতিক মহল থেকে অস্থায়ী তাবু ও কন্টেইনার সহযোগিতা মিললেও ১০ লাখের বেশি মানুষের আবাসের ব্যবস্থা করতে হিমশিম খাচ্ছে তুর্কি সরকার। এ দুর্যোগের দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব কাটাতে দেশটির চাই আরও সহযোগিতা।