টিভি-স্মার্টফোন কাছ থেকে দেখলে যে ব্যাধি হয়
বর্তমানে কমবেশি সব শিশুরাই ইলেক্টনিক্স ডিভাইসে আসক্ত। বিশেষ করে স্মার্টফোন বা কম্পিউটারে কার্টুন দেখা কিংবা গেইম খেলা’সহ টিভি দেখা তো আছেই। শিশুর ঘণ্টার পর ঘণ্টা টিভি দেখা বা স্ক্রিনের সামনে থাকার কারণে প্রায়ই অভিভাবকদের মনে প্রশ্ন জাগে যে টিভি বা কম্পিউটারের খুব কাছাকাছি বসে থাকার কারণে শিশুর চোখের ক্ষতি হবে না তো!
এ বিষয়ে ভারতের গাজিয়াবাদের সাই আই কেয়ার অ্যান্ড মেডিকেল সেন্টার ফ্যাকো ও রিফ্র্যাক্টিভ সার্জন ডা. ললিত সিংগাল জানান, অতিরিক্ত স্ক্রিনের সামনে থাকার কারণে শিশুর চোখে মায়োপিয়া বা অদূরদর্শিতা হতে পারে।
এই বিশেষজ্ঞের মতে, শিশুদের চোখ নরম ও তাদের চোখের কর্নিয়ার কোলাজেন খুব নরম। যখনই শিশুরা এই গ্যাজেটগুলো ব্যবহার করে, তারা তাদের চোখ ঠিকমতো পলক ফেলে না। প্রতিসরণ সূচক কম থাকা সত্ত্বেও তারা দীর্ঘক্ষণ টিভি বা স্ক্রিন দেখার জন্য তাদের চোখকে চাপ দেয়।
এই শিশুদের যখন একজন চক্ষু বিশেষজ্ঞের কাছে দেখানো হয়, তখন এই শিশুদের মাঝারি থেকে উচ্চ মায়োপিয়া বা অ্যাস্টিগমেটিজম বা উভয়ই ধরা পড়ে।
প্রাথমিকভাবে এই পরিবর্তনগুলো সংশোধন করা যেতে পারে, তবে এটি প্রতিটি ক্ষেত্রে সম্ভব নয়। যদি শিশুটি ছোট পর্দায় ঘনিষ্ঠভাবে দেখে, তবে এই প্রতিসরণ ত্রুটির ঝুঁকি বেশি।
আমেরিকান অপটোমেট্রিক অ্যাসোসিয়েশনের মতে, দীর্ঘদিন ধরে কম্পিউটার, ট্যাবলেট, মোবাইল বা স্ক্রিন ব্যবহার করলে চোখের ওপর চাপ পড়ে এবং চোখ ও চোখ সংক্রান্ত সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা থাকে। একে কম্পিউটার ভিশন সিন্ড্রোম বলা হয়।
তবে মন্ট্রিল চিলড্রেন'স হসপিটাল বলছে, টিভি বন্ধ করে দেখা চোখের ক্ষতি করে এমন কোনো প্রমাণ নেই। তবে এটি অবশ্যই কিছু সময়ের জন্য চোখের উপর চাপ দেয়।
যদি আপনার শিশু টিভি, কম্পিউটার বা স্ক্রিনের দিকে বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকে, তাহলে সে হয়তো কম পলক ফেলবে। শিশুকে এ বিষয়ে সতর্ক করুন ও তাকে দূর থেকে টিভি ইত্যাদি দেখতে বলুন।
কীভাবে শিশুকে মোবাইল থেকে দূরে রাখবেন?
আসলে প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায়, শিশুরা আরও ঘনিষ্ঠভাবে ফোকাস করতে সক্ষম হয় ও তাদের চোখের উপর খুব বেশি চাপ পড়ে না। তবে কোনো অবস্থাতেই খুব কাছ থেকে পর্দার দিকে তাকানো ঠিক নয়।
আপনার সন্তান যদি অতিরিক্ত স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকে, তবে তার এরই মধ্যেই দৃষ্টিশক্তি দুর্বল হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে অবিলম্বে চক্ষু বিশেষজ্ঞের কাছে যেতে হবে।
দীর্ঘক্ষণ ধরে টিভি দেখার ফলে শুধু মায়োপিয়া বা চোখের সমস্যাই হতে পারে না, শিশুর স্থূলতার ঝুঁকিও বেড়ে যেতে পারে। তাই অভিভাবকের উচিত শিশুর দিকে খেয়াল রাখা।