গৌরনদীতে লিজ নেয়ার কথা বলে সরকারি খাল ভরাট

গৌরনদীতে লিজ নেয়ার কথা বলে সরকারি খাল ভরাট
প্রশাসনের নিস্ক্রিয়তার কারণে গত ১০ নভেম্বর থেকে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের ভূরঘাটা বাসস্ট্যান্ডের পশ্চিম পাশ ঘেঁষা প্রায় আট কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ও ৪০/৫০ ফুট প্রস্থের জনগুরুত্বপূর্ন খরস্রোতা সরকারী খালটি ড্রেজার দিয়ে বালু ভরাট করছে গিয়াস মুন্সী নামের এক  প্রভাবশালী।
 
এতে করে সেচ পানির সংকটের আশঙ্কায় রয়েছে ভূরঘাটা, ইল্লা, তাঁরাকুপি গ্রামের ১০টি ইরি বোরো ব্লকে চাষাবাদ। হতাশ হয়ে পড়েছে ৫ শতাধিক বোরো চাষী। স্থানীয়দের দাবী প্রভাবশালী হওয়ায় বিভিন্ন মহল ম্যানেজ করে নির্বিঘ্নে অবৈধভাবে বালু ভরাট করছে গিয়াস মুন্সী।
 
ভূরঘাটা গ্রামের মুন্সীবাড়ি ব্রিজ নামক খালের পশ্চিম পাড়ের জমির মালিক গিয়াস মুন্সী তার বিলাশ বহুল আল-মদিনা  হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট নির্মাণের জন্য ইতিমধ্যে ড্রেজার দিয়ে নিজের জমির ৬০ শতাংশ এবং ওই জমির পূর্ব পাশে ব্রিজের প্রায় ১০ফুট উত্তরে ও ১৫০ ফুট দক্ষিণে ২টি বাঁধ দিয়ে, পানি নিস্কাশনের জন্য প্রায় ১৬০ ফুট সিমেন্টের পাইপ বসিয়ে অবৈধভাবে বালু ভরাট করছে। 
 
স্থানীয় ব্লক ম্যনেজার আ’লীগ নেতা  আরজ আলী সরদার, গাইনেরপাড় এলাকার ব্লক ম্যানেজার গোলাম মোস্তফা,  ইল্লা গ্রামের ব্লক ম্যানেজার জালাল ঘরামী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মহাসড়ক ঘেঁষা ভূরঘাটা- ভায়া ইল্লা- তাঁরাকুপি খালের   আওতায় ইল্লা, বার্থী, তাঁরাকুপি, গাইনেরপাড় ও ভূরঘাটা  এলাকায় ১০টি ইরি-বোরো ব্লক রয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের নিস্ক্রিয়তার কারণে গিয়াস মুন্সী সরকারি  খাল অবৈধ ভাবে দখল করে ব্রিজসহ খালে প্রায় ১৬০ ফুটের মধ্যে ২টি বাঁধ দিয়ে অনেকগুলো সিমেন্টের পাইপ বসিয়ে   বালু ভরাট কাজ নিবিঘ্নে চালিয়ে যাচ্ছে।  খাল ভরাট করা হলে সেচ পানির সংকটে  আমাদের ইরি বোরো ব্লকের চাষাবাদ ব্যাহত হবে। বোরো মৌসুমে সেচ পানির অভাবে আমরা ব্লক করতে পারব না। ফলে ৫ শতাধিক বোরো চাষি  হতাশ হয়ে পড়ছে। এ খালের আওতার ১০টি  ব্লকে ইরি-বোরো   চাষাবাদ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।  খালটি দখল মুক্ত করার জন্য সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানান তারা। 
 
খাল দখলের অভিযোগ অস্বীকার করে  গিয়াস মুন্সী বলেন, মরা ও পরিত্যক্ত খালের মধ্যে পাইপ  বসিয়ে বাঁধ দিয়ে অনেকেই বাড়িতে প্রবেশের পথ বানাইছে। বৈধভাবে লিজ পাওয়ায় জন্য আমার আবেদনের প্রেক্ষিতে বরিশাল সড়ক ও জনপথ বিভাগ জমি সার্ভে করেছে। এরপর সওজ কতৃপক্ষ প্রায় ১১ শতাংশ জমি আমাকে লিজ দেওয়ার জন্য প্রাক্কলন প্রস্তুত করেছে।  ওই জমি লিজ আনার পরই  জমি ভরাট করে    প্রবেশের পথ করা হবে।
 
এ ব্যাপারে গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু আবদুল্লাহ্ খান জানান,   খবর পেয়ে  এসিল্যান্ডকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়ে খাল ভরাট কাজ বন্ধ  করে দেওয়া হয়েছে। নির্দেশ অমান্য করে খাল ভরাট কাজ চালালে আইনি ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।
 
এ ব্যাপারে বরিশাল সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদ মাহামুদ সুমন বলেন,  প্রবাহমান খাল বরাদ্দ দেওয়ার প্রশ্নই আসে না।  প্রবেশের পথের জন্য ভূরঘাটা গ্রামের গিয়াস মুন্সীর আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রাথমিক প্রাক্কলন প্রস্তুতের পর তা যাচাই বাছাই করা হচ্ছে।  গিয়াস মুন্সীকে  সওজের জায়গা  এখনও লিজ দেওয়া হয়নি।