গয়েশ্বরকে খাওয়ানো নিয়ে যা বললেন ওবায়দুল কাদের

রাজধানীর ধোলাইখালে প্রবেশমুখে বিএনপির অবস্থান কর্মসূচিতে পুলিশের মারধরের শিকার হয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। ওইদিন মারধরের পর তাকে গাড়িতে তুলে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) কার্যালয়ে তুলে নিয়ে যায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সেখানে গিয়ে গয়েশ্বর গোয়েন্দা পুলিশ প্রধান হারুন অর রশিদের আপ্যায়ন গ্রহণ করেন। পরে আপ্যায়নের সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। আপ্যায়ন করে সেই ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন গয়েশ্বর রায়। বলেছেন, এটি নিম্ন রুচির পরিচয়। 

গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে নিয়ে গয়েশ্বরকে খাওয়ানোর পর সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেওয়ায় দোষের কিছু দেখছেন না আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তার ভাষায়, গোয়েন্দাদের কাজই এরকম। 

তিনি উল্টো গয়েশ্বরকে প্রশ্ন রেখে বলেন, গয়েশ্বর গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে গিয়ে ‘কেন খেলেন’। 

সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে সোমবার তিনি বলেন, ‘উনি কেন খাইলেন এটা জিজ্ঞেস করেন। এত ক্ষুধা রাজনীতিক নেতার? কিসের রাজনীতিক? তিন দিনও খাইনি আমরা একসাথে।’ 

নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি তুলে এক দফার আন্দোলনে নামা বিএনপি গত শনিবার ঢাকার প্রবেশমুখগুলোতে অবস্থানের কর্মসূচি দিয়েছিল। 

নয়া বাজারে সেই কর্মসূচি পালনে নেতৃত্ব দেওয়ার কথা ছিল গয়েশ্বর রায়ের। পুলিশ ও আওয়ামী লীগ সমর্থকদের বাধায় নয়া বাজারে দাঁড়াতে না পারার পর ধোলাইখালে তারা সড়কে নামলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাঁধে। 

সংঘর্ষে আহত অবস্থায় গয়েশ্বরকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। চার ঘণ্টা পর তাকে নয়াপল্টনে দিয়ে আসে পুলিশ। 

এর মধ্যেই ডিবি কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হারুন-অর রশীদের সঙ্গে গয়েশ্বরের মধ্যাহ্ন ভোজের একটি ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। 

এ বিষয়ে গয়েশ্বর বলেন, ‘ডিবি প্রধানের (অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ) অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে এবং সৌজন্যতা রক্ষায় হারুনের জন্য বাসা থেকে নিয়ে আসা খাবার থেকে ভাতসহ হালকা সবজি ও রুই মাছের একটি টুকরা গ্রহণ করি।’বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আরও বলেন, ‘ডিবি প্রধান আমাকে অনুরোধ করেছেন, রুই মাছটি তার গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জ থেকে নিয়ে আসা হয়েছে। আর যেহেতু ডিবি প্রধান নিজেই খাবারটি খাচ্ছেন, তখন আমার মনে হলো, এটা যদি গ্রহণ করি, তাহলে সমস্যা হবে না।’ তখনকার পরিস্থিতিতে খাবার না খেয়ে উপায় ছিল না জানিয়ে তিনি বলেন, ডিবি অফিস বিষ দিলে বিষও খেতে হয়।

ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার নিন্দা জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘যারা এ কাজটি করেছে, এটি অত্যন্ত নিম্ন রুচির পরিচায়ক। এক ধরনের তামাশাপূর্ণ নাটক। এতে কি সরকার প্রমাণ করতে চায় যে, আমরা হা-ভাতে? ভিক্ষা করে খাই? গ্রামের ভাষায় বলা হয় ‘খাইয়ে খোঁটা দেওয়া।’ডিবি অফিসে আমার সঙ্গে যা করা হলো তা ওই রকমই। আমার বাড়িতে তো বিভিন্ন সময় অনেক লোক খায়। এটা আমার জন্য অত্যন্ত সম্মানের। কিন্তু এই খাবারের ছবি উঠিয়ে কি আমি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেব? এটা কি আমার জন্য ভালো হবে।’