আদালতে আইনজীবী-পুলিশ সংঘর্ষ: এডিসি-ওসিসহ আহত ১৬
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে পদযাত্রা ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা। এসময় আইনজীবী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। চার পুলিশ ও ১২ আইনজীবী আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে ঢাকার আইনজীবী সমিতির সামনে থেকে এ মিছিল শুরু হয়। এরপর মিছিলটি আদালতের সামনের প্রধান সড়ক আসলে পুলিশ বাধা দেয়। পরে আইনজীবীরা রাস্তায় বসে পড়লে পুলিশ তাদের সরিয়ে দিতে চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। এসময় দুপক্ষের সংঘর্ষে প্রায় ১৬ জন আহত হন। পরে পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে তারা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের প্রধান ফটকে অবস্থান নেন।
আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন- কোতোয়ালি জোনের এডিসি মুহিত কবির সেরনিয়াবাত, কোতোয়ালি থানার ওসি শাহীনুর রহমান, এএসআই বশির, কনস্টেবল হারুন।
আহত আইনজীবীরা হলেন- মাহবুবুর রহমান খান, দেওয়ান রিপন, মোজাহিদুল ইসলাম সায়েম, কে এম মিরাজ হোসেন, সাইদুর রহমান সোহাগ, কে এম বরকত সবুজ, মাহবুব আলম আক্তার, শফিকুল ইসলাম, জহিরুল ইসলাম, হাজী মো. মহসীন, কাজী পনির, এস এম হুমায়ূন কবির।
বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা বলেন, আমরা সুশৃঙ্খল পদযাত্রা করছিলাম। এরপর পুলিশ এসে আমাদের ওপর লাঠিচার্জ করে। এসময় আমাদের ১২ জন আইনজীবী আহত হয়েছেন।
এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনুর বলেন, বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা রাস্তায় অবস্থান নিলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় তাদের সরে যেতে বলা হয়। কিন্তু তারা জোর করে মিছিল নিয়ে এগিয়ে যান। এ সময় তাদের হামলায় আমাদের আট থেকে ৯ জন আহত হয়েছেন। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
কোতোয়ালি জোনের এডিসি মুহিত কবির সেরনিয়াবাত বলেন, বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা পরিকল্পিতভাবে আমাদের ওপর হামলা করে। আমরা ফেরাতে গেলে তারা আমাদের ওপর হামলা করে। আমিসহ আমাদের আট থেকে ৯ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে।
বিএনপি যুগ্ম-মহাসচিব ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, আজ আমাদের প্রোগাম ছিল শান্তিপূর্ণ পথযাত্রা। কোর্ট থেকে বের হলে পুলিশ জঙ্গির মতো ঝাঁপিয়ে পড়লো। আইনে তো জঙ্গির ডেফিনেশন নেই। আজ পুলিশের আক্রমণ জঙ্গির মতো আচরণ। নির্বিচারে তারা আইনজীবীদের পেটালো। তা জঙ্গিদেরও হার মানিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, তারা আমাদের আইনজীবী বোনদের টর্চার করেছে। গায়ে হাত দিয়েছে। সবাই এডিসি হারুন হতে চায়। এখন পুলিশের দুই রকম বিচার। এডিসি হারুন ছাত্রদের মারলো। তারপর সুপ্রিম কোর্টে আইনজীবীদের ওপর হামলা করেছে। বিচার হয়নি। অথচ দুই ছাত্রলীগকর্মীকে মেরে রবখাস্ত হয়েছে। সরকারি দলের দুই জন আহত হওয়ায় এডিসি হারুনকে বরখাস্ত করা হয়। অথচ হাজারও মানুষের ওপর হামলা করেছে, তার কোনও বিচার নেই।
পুলিশের লালবাগ জোনের ডিসি জাফর হোসেন বলেন, আইনজীবী আমাদের পুলিশের ওপর হামলা করেছে। পুলিশ ধৈর্যশীলতার পরিচয় দিয়েছে। আমাদের চার জন পুলিশ আহত হয়েছে। এ বিষয় আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।