আজ পহেলা ফাল্গুন, বিশ্ব ভালোবাসা দিবস

আজ পহেলা ফাল্গুন, বিশ্ব ভালোবাসা দিবস

আজ (১৪ ফেব্রুয়ারি) ফাল্গুনের প্রথম দিন, সেই সঙ্গে বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। সংস্কৃতিমনা নানা বয়সী শ্রেণি-পেশার মানুষ মেতে উঠছে বসন্ত বরণ উৎসবে। ঋতুরাজ বসন্ত বাঙালীর মনে নিয়ে এসেছে উৎসব-উদ্দীপনা।

শীতের রুক্ষতা শেষে পত্রপল্লবে ফিরছে সজীবতা; বাতাসে আমের মুকুলের মিষ্টিঘ্রান। দখিনা হাওয়ায় উতাল মনোজগতও। বাংলা বর্ষপঞ্জির হিসেবে ফাল্গুন- চৈত্র দুথমাস বসন্ত কাল। শীতের বিদায় আর গ্রীস্মের আগমনের সন্ধিক্ষণের এই সময় বাঙালীর কাছে পরিচিত ঋতুরাজ হিসেবে। শীতের রুক্ষতা পেছনে ফেলে বসন্তের উতাল হাওয়ায় নবপ্রাণের ছোঁয়া সবখানে, মহাসমারোহে প্রকৃতি খুলে দিয়েছে সৌন্দর্যের দুয়ার। কৃষ্ণচূড়া আর শিমুলের দেখা এখনো না মিললেও পলাশের ডালে ডালে আলোর নাচন আর পাখিদের কলতান জানান দিচ্ছে- ঋতুরাজ বসন্ত এসেছে। শীতের ঝরা পাতা বিদায় দিয়ে ফাগুনের হাওয়া বইছে বনে বনে। গাছে গাছে কচি পাতা, নানা রঙের ফুল আর আমের মুকুলের ঘ্রাণে সুবাসিত চারপাশ। বসন্তের হাওয়া দোলা দিচ্ছে বাঙালীর মনোজগতেও।

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাই তো বসন্তে গেয়ে উঠেন- ‘বসন্তের ফুল গাঁথলো ও আমার জয়ের মালাথ। আবার বসন্তকে পেয়ে সুর তুলেছেন, ‘আজি এ বসন্তে এত ফুল ফোটে, এত পাখি গায়থ।

আর প্রেমের কবি নির্মলেন্দু গুণ লিখেছেন, ‘তোমার হাতের মৃদু কড়া-নাড়ার শব্দ শুনবার জন্য/দরোজার সঙ্গে চুম্বকখণ্ডের মতো আমার কর্ণযুগলকে/গেঁথে রেখেছিলাম। কোনো নির্জন মধ্যরাতে তুমি এসে/ডেকে বলবে : এই যে ওঠো, আমি এসেছি, আ-মি।

আজ ১৪ ফেব্রুয়ারি, বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। পাশ্চাত্যের ‘ভ্যালেন্টাইন ডেথ নামের এ দিবসের উৎপত্তি নিয়ে নানা জনের নানা মত। তবে ৪৯৬ খ্রিস্টাব্দে এ দিনের উদ্ভব হলেও এটি বিশ্বব্যাপী প্রথমদিকে তেমন প্রচার বা প্রসার লাভ করেনি। বর্তমানে এ দিবসের কদর প্রবলভাবে বেড়েছে। পাশ্চাত্যে উৎসব-মহাসমারোহে উদযাপন করা হয় দিবসটি। ভালোবাসা দিবসের জন্য মানুষ কার্ড, ফুল, চকোলেট ও অন্যান্য উপহার কেনে। প্রিয় মানুষকে উপহার দেয়।

বসন্ত বরণকে কেন্দ্র করে সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করছে।

সোমবার থেকেই রাজধানীসহ দেশের নানা জায়গায় শুরু হয়েছে বসন্তের আবহ। বিশেষ করে কিশোর-কিশোরী আর তরুণ-তরুণীরা বসন্তের সাজে রাঙাতে শুরু করেছে রাজপথ। আজ হবে প্রকৃত অর্থেই পহেলা ফাল্গুন ও ভ্যালেন্টাইনস ডের উদযাপন। রাজধানীসহ সারা দেশ মেতে উঠবে ফাল্গুনী আমেজে। তরুণীরা বাসন্তী রঙের শাড়িতে খোঁপায় হলুদ গাঁদা আর মাথায় ফুলের টায়রার সুষমায় সাজাবে নিজেদের। তাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তরুণরাও ধরা দেবে হলুদ পাঞ্জাবিসমেত একরাশ ফাল্গুনী সাজে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ, টিএসসি, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, রবীন্দ্র সরোবর, হাতিরঝিল, রমনা পার্ক, চন্দ্রিমা উদ্যান-সর্বত্রই তারুণ্যের জোয়ারে ভাসবে। ঢাকার বাইরে জেলা শহর ও নানা জায়গায় বিশেষ করে ক্যাম্পাস ও বিনোদনকেন্দ্রগুলো থাকবে তরুণদের দখলে। বসন্ত আর ভালোবাসার দিনটিকে বরণ করে নিতে ফুলের দোকান আর মার্কেটের শাড়ি-পাঞ্জাবির দোকানগুলোয় কয়েকদিন ধরেই বেশ ভিড়।