সড়ক নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার, দূর্ভোগে স্থানীয়রা

সড়ক নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার, দূর্ভোগে স্থানীয়রা

টাঙ্গাইলে নিম্নমানের খোয়া দিয়ে ৬৪ লাখ টাকার নতুন সড়ক কার্পেটিংয়ের কাজ করার অভিযোগ উঠেছে এক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। স্থানীয়রা দফায় দফায় মানসম্মত কাজের দাবি জানালেও, মানছে না ঠিকাদার। এদিকে দীর্ঘ সময়ে কাজ শেষ না হওয়ায়, চরম দূর্ভোগে স্থানীয়রা।

জানা যায়, ২০১৯-২০ অর্থবছরের টাঙ্গাইল সদর উপজেলার ছিলিমপুর ইউনিয়নের ১ ও ২ নম্বর ওয়ার্ডের চরপাড়া থেকে বরুহা উত্তরপাড়া গালর্স স্কুল পর্যন্ত নতুন সড়ক কার্পেটিংয়ের টেন্ডার দেয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। ৫ শতাংশ কম দরে ৬৪ লাখ টাকা ব্যয়ের ৭০০ মিটারের ওই সড়ক নির্মাণের কাজটি পায় মেসার্স মনির কন্সট্রাকশন নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

বরুহা উত্তরপাড়ার মো. খালেদ খান বলেন, নিম্নমানের খোয়া বা পোড়া মাটি দিয়ে সড়কটি নির্মাণ করা হচ্ছে। এই খোয়া ব্যবহারে নিষেধ করা সত্ত্বেও সেগুলোই ব্যবহার করা হচ্ছে। ঠিকাদারের সঙ্গে স্থানীয় সরকার দলীয় নেতার আতাত রয়েছে। এ কারণেই তিনি কাজটি এভাবে শেষ করছেন। আমি কখনও এ কাজ দেখাশুনার জন্যও কোনো প্রকৌশলীকে দেখিনি।

ওই গ্রামের সাইফুল ইসলাম বলেন, নতুনভাবে সড়কটি নির্মাণ করা হলেও কাজ হচ্ছে নিম্নমানের। রাতের আধারে কাজটি শেষ করছেন। প্রায় এক কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের কাজ একইরকম বলে দাবি করেছেন তিনি।

ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মনিরুল ইসলাম খান বলেন, সড়কে পানি বেধে থাকার কারণে সদর আসনের সংসদ সদস্য কাজটি দিয়েছেন। তবে ঠিকাদার কাজটি করছেন নিম্নমানের খোয়া ব্যবহার করে। কাজের অনিয়মে অফিস সংশ্লিষ্ট বলে ধারণা করছেন তিনি।

মেসার্স মনির কন্সট্রাকশনের স্বত্তাধিকারী মনির হোসেন বলেন, তিনি একটি ইট ভাটা থেকে আদলা ইট কিনে রেখেছিলেন। অনেকদিন হওয়ায় ওই ইটে ময়লা জমে গেছে বলে ওই খোয়াকে নিম্নমানের মনে হচ্ছে। এরপরও বেশ কিছু খোয়া নতুন ফেলা হয়েছে। স্থানীয়রা পানি দিতে সহযোগিতা না করায় কাজটি পরিচালনা করা, তার জন্য অসম্ভব হয়ে উঠেছে।

এছাড়াও মালামালের দাম বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে কাজটিতে তার ক্ষতি হবে। এটি তার প্রথম কাজ, এ কারণে কিছু ত্রুটি থাকতে পারে স্বীকার করে কাজটি শেষ করতে সকলের সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।

কাজটি দেখভালের দায়িত্বরত প্রকৌশলী সদর উপজেলা এলজিইডির উপসহকারি ফেরদৌস বলেন, নিম্নমানের হওয়ায় কাজটি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। প্রাক্কলনে ধার্যকৃত খোয়া আনার পর ঠিকাদারকে কাজটি শুরু করতে বলা হয়েছে।

ছিলিমপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সুজায়েত হোসেন বলেন, সড়ক নির্মাণের কাজ নিম্নমানের হওয়ায় আমি ঠিকাদারকে কাজটি করতে বারণ করাসহ এলজিইডি কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবগত করেছি।

এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর টাঙ্গাইলের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ঠিকাদারের কাজ বন্ধ করে রোলার ফিরিয়ে আনা হয়েছে।