ফ্রি-ফায়ার গেমসের আইডি ও পাসওয়ার্ড ফেরত চাওয়া দ্বন্দ্বে শিশু সিফাতকে হত্যা

ফ্রি-ফায়ার গেমসের আইডি ও পাসওয়ার্ড ফেরত চাওয়া দ্বন্দ্বে শিশু সিফাতকে হত্যা

বগুড়ার শিবগঞ্জে স্কুলছাত্র মো. সিফাত (১৩) হত্যা রহস্য উন্মোচিত হয়েছে। পুলিশ দাবি করেছে- ‘ফ্রি ফায়ার গেমসের’ আইডি ও পাসওয়ার্ড ফেরত চাওয়া নিয়ে বিরোধে প্রতিবেশী শিশু বন্ধু (১৩) তাকে শিবগঞ্জের বাঁশঝাড়ে ডেকে নিয়ে গলা এবং হাতের রগ কেটে হত্যা করে।

পুলিশ মঙ্গলবার ঢাকার মনিপুরীপাড়া থেকে ওই শিশু বন্ধুকে গ্রেফতার এবং হত্যায় ব্যবহৃত চাপাতি উদ্ধার করেছে।

বুধবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী এ তথ্য দিয়েছেন। বিকালে তাকে বগুড়ার শিশু আদালতে হাজির করা হলে সন্ধ্যায় শুনানি শেষে তাকে যশোরের শিশু-কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।

প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, নিহত শিশু মো. সিফাত বগুড়া শহরের নিশিন্দারা খাঁপাড়া এলাকার রিকশা-ভ্যান মেকানিক্স শাহ আলমের ছেলে। সে এবার শহরের নুরানি মোড় এলাকায় প্রতিভা স্কুল থেকে সপ্তম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা দেয়। সিফাত ফ্রি-ফায়ার গেমসে আসক্ত হয়ে পড়ে। প্রতিবেশী এক বন্ধু কৌশলে তার কাছ থেকে গেমসের আইডি ও পাসওয়ার্ড হাতিয়ে নেয়। সে বারবার ফেরত চাইলে বন্ধু দিতে অস্বীকৃতি জানায়।

পরবর্তীতে সিফাত ও তার কয়েকজন বন্ধু চাপ দিয়ে আইডি ও পাসওয়ার্ড ফেরত দিতে বাধ্য করে। এ নিয়ে বন্ধুর সঙ্গে সিফাতের সম্পর্কের অবনতি ঘটে এবং তাদের মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। বন্ধু এ ঘটনায় প্রতিশোধ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

এদিকে গত ২৫ ডিসেম্বর বিকাল ৪টার দিকে সিফাত তার বোনের নষ্ট মোবাইল ফোন মেরামতের জন্য বাড়ি থেকে বের হয়। পথিমধ্যে প্রতিবেশী ওই বন্ধুর সঙ্গে দেখা হলে সে তাকে কৌশলে দাদার বাড়ি শিবগঞ্জের নিশ্চিন্তপুরে যাওয়ার প্রস্তাব দেয়। এতে সিফাত রাজি হয়ে তার সঙ্গে নিশ্চিন্তপুর গ্রামে বেড়াতে যায়। সেখানে একটি বাঁশঝাড়ে ফ্রি-ফায়ার গেমস খেলার কথা বলে দুজন আড্ডা দেয়।

সন্ধ্যা ৭টার দিকে সিফাত বাড়ি যেতে চাইলে ওই বন্ধু কাছে রাখা চাপাতি দিয়ে তার গলায় আঘাত করে। আঘাতে সিফাত মাটিতে পড়ে গেলে শিশু বন্ধু মুখ চেপে ধরে গলা ও বাম হাতের রগ কেটে দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই সিফাতের মৃত্যু হয়। হত্যার পর বন্ধু মরদেহ ফেলে আত্মগোপনের জন্য ঢাকায় পালিয়ে যায়। তদন্তে পুলিশ সিফাত হত্যারহস্য উন্মোচিত ও ঘাতককে শনাক্ত করে।

শিবগঞ্জ থানার ওসি মঞ্জুরুল আলম জানান, শিশু আদালত শুনানি শেষে ওই শিশুকে যশোরের পুলেরহাটে শিশু-কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। এর আগে নিহত শিশুর বাবা শাহ আলম শিবগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেছেন।