এক উপজেলায় ৭৮ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেই প্রধান শিক্ষক

এক উপজেলায় ৭৮ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেই প্রধান শিক্ষক

খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার ২১৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে প্রধান শিক্ষকের ৭৮টি পদই শূন্য রয়েছে। এ কারণে ওই সব বিদ্যালয়ের পড়ালেখা ও প্রশাসনিক কাজে নানা ধরনের বিরূপ প্রভাব পড়ছে। উপজেলা শিক্ষা অফিস, বিভিন্ন বিদ্যালয় ও অভিভাবকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার ২১৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক হাজার ২৭০ জন শিক্ষকের মধ্যে ১১৯টি পদ শূন্য। তার মধ্যে ৬২টি বিদ্যালয়ে আন-অফিসিয়ালিভাবে একজন সিনিয়র ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। আর ১৬টি বিদ্যালয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসের অনুমোদনে প্রধান শিক্ষকের চলতি দায়িত্বে আছেন।

প্রধান শিক্ষকের পদটি শূন্য থাকায় ওই সব বিদ্যালয়ে এমনিতেই শিক্ষক একজন কম। তার ওপর শিক্ষকদের মধ্যে যিনি প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব নিয়ে অফিস সামলাচ্ছেন, তিনিও ক্লাসে পাঠদান করতে পারছেন না। এতে করে ওই বিদ্যালয়ের বেশির ভাগ শিক্ষকই তখন গা-ছাড়া অবস্থায় পাঠদান করতে থাকেন। এ ছাড়া, বিগত করোনার কারণে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে পড়ালেখা তেমন একটা হয়নি। তাদেরকে অটো-প্রমোশন দেয়ায় শিক্ষার্থীদের মাঝে এমনিতেই শিক্ষার একটা ঘাটতি রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে শরাফপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থী জিহান শেখের মা আরিফা বেগম বলেন, স্কুলে প্রধান শিক্ষক না থাকায় অন্য স্যারেরা সুষ্ঠুভাবে পাঁচটি ক্লাস নিতে পারেন না। বাচ্চারা সময় মতো ক্লাসগুলো কমপ্লিট করতে না পারায় ভালো সাবজেক্টগুলো সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণাই পায় না। খর্ণিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক জি এম ফারুক আহমেদ বলেন, গত মার্চ মাস থেকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন তিনি। হেডমাস্টার না থাকায় ছেলেমেয়েরা ক্লাসে লেখা পড়ায় বিঘ্ন হচ্ছে। খাতাপত্রের কাজ-কর্মও ঠিক মতো হয় না।

বয়ারসিং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক জগদীশ চন্দ্র সরকার বলেন, শিক্ষকদের কেউ ট্রেনিংয়ে যান, আবার হেডের দায়িত্বে থাকা শিক্ষক অফিসের কাজে যান। এসব কারণে প্রায়ই ক্লাস কম হওয়ায় বাধ্য হয়ে আমি নিজেই স্কুলে ক্লাস নিয়ে থাকি।

ডুমুরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান তথা উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি গাজী এজাজ আহমেদ বলেন, প্রধান শিক্ষক না থাকায় বিদ্যালয়ে শিক্ষার সঙ্কট নিয়ে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো।

খুলনা জেলা শিক্ষা অফিসার অহিদুল আলম বলেন, প্রধান শিক্ষকদের পদোন্নতির জন্য ইতোমধ্যে চিঠি তৈরি ও স্বাক্ষর করেছি। কিন্তু কিছু শিক্ষক আদালতে মামলা করেছেন। তাই তাদের সাথে প্রয়োজনীয় কথা বলে সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।