৩৩ বছর পর পরিবার ফিরে পেলেন বৃদ্ধ
হারিয়ে যাওয়ার ৩৩ বছর পর পরিবারের কাছে ফিরলেন হারেজ আলী নামের এক বৃদ্ধ (৫৮)। পরিবারের সাথে অভিমান করে বাড়ি থেকে বের হয়ে গিয়েছিলেন তিনি।
হারেজ আলী মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বালিয়াখোড়া ইউনিয়নের সাইংজুরি গ্রামের মৃত চেনু খাঁর ছেলে। দীর্ঘদিন পর তাকে ফিরে পেয়ে খুশি পরিবারের সদস্যরা। হারেজের ফেরার খবর শুনে তাকে একনজর দেখতে ভীড় করছেন আশপাশের গ্রামের মানুষ।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯০ সালে হারেজ পরিবারের সাথে অভিমান করে বাড়ি থেকে বের হন। তখন তিনি ২৫ বছরের টগবগে যুবক। কিন্তু এরপর আর ফিরে আসেননি।ছবি সম্বলিত পোস্টার, মাইকিংসহ নানাভাবে তার খোঁজ করা হলেও, কোথাও তার সন্ধান মেলেনি।
ছেলে ফেরার অপেক্ষার প্রহর গুনতে গুনতে মারা গেছেন তার বাবা। পরিবারে বৃদ্ধ মা, বোন আর বোন জামাই আছে। কিছুটা মানসিকভারসাম্যহীন হারেজের ফেরার অপেক্ষা ছেড়েই দিয়েছিলেন পরিবার। অনেকেই ধারণা করেছিলেন হয়তো তিনি আর বেঁচে নেই।
কিন্তু ৩৩ বছর পর চুয়াডাঙ্গা জেলা থেকে হারেজ আলীর পরিবারের সন্ধান চেয়ে একটি ফোন আসে ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে। পরে পুলিশের সহযোগিতায় মেলে তার সন্ধান।
হারেজের ছোট বোন নূরজাহান বেগম জানান, তার ভাই কিছুটা মানসিকভারসাম্যহীন এবং অসুস্থ। আগে থেকেই কথাবার্তা কম বলেন। দীর্ঘ ৩৩ বছর পর একমাত্র ভাইকে ফিরে পেয়ে সবাই খুবই আনন্দিত।
স্থানীয় বাসিন্দা মালেক দেওয়ান জানান, পরিবারের সাথে হারেজকে আনতে তিনিও চুয়াডাঙ্গা গিয়েছিলেন। চুয়াডাঙ্গায় মতিয়ার রহমান নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে তাকে লালন পালন করা হয়। তারা অনেক ভালো মানুষ। এতদিন হারেজ কথাবার্তা বলতে না বলতে পারায় ঠিকানা বের করতে পারেননি। কিন্তু কিছুদিন আগে হঠাৎ হারেজ ভাঙা ভাঙা কন্ঠে তার বাড়ির ঠিকানা বলেন। এর সূত্র ধরেই মতিয়ার রহমান মানিকগঞ্জে হারেজের ঠিকানা বের করার চেষ্টা চালান।
ঘিওর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আমিনুর রহমান জানান, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার হোগলডাঙ্গা গ্রামের মতিয়ার রহমানের বাড়িতে থাকতেন হারেজ আলী। তিনিই বালিয়াখোড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল আওয়ালকে ফোন করে প্রথমে হারেজের পরিবারের সন্ধান চান। এরপর বিষয়টি আমি জানতে পেরে স্থানীয় থানায় যোগাযোগ করি।রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) পরিবারের সদস্যরা হারেজ আলীকে চুয়াডাঙ্গা থেকে বাড়িতে নিয়ে যান।