রূপচর্চায় ফুলের অবদান

রূপচর্চায় ফুলের অবদান

রূপচর্চায় ফুলের ব্যবহার চলে আসছে আদিকাল থেকেই। ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সঙ্গে চুলের যত্নে নানাভাবে ভেষজ এ উপকরণ ব্যবহার করতেন অন্দরমহলের নারীরা। 

কখনো গোসলের পানিতে ফুলের পাপড়ি আবার কখনো মুলতানি মাটির সঙ্গে ফুলের ভিন্ন অংশের উপাদান মিশিয়ে তৈরি করা হতো ত্বক উজ্জ্বল করার জন্য উপটান কিংবা ঘরোয়া প্যাক। সময় পালটালেও ত্বকের যত্নে ফুলের সেই উপকারিতা আছে আগের মতোই। 

তাই ঋতু পরিবর্তনে শীতের এ সময়ে ত্বকের আর চুলের যত্নে কীভাবে ফুল ব্যবহার করতে পারবেন ঘরোয়া উপকরণের সঙ্গেই তা জানিয়েছেন হার্বস আয়ুর্বেদিক স্কিন কেয়ার ক্লিনিকের স্বত্বাধিকারী শাহিনা আফরিন মৌসুমী।

শীতের এ সময়ে সবচেয়ে ভালো কাজ করে গাঁদা ফুল। এতে থাকা নির্যাস ব্রণ সারাতে পাশাপাশি ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সহায়তা করে। এ ক্ষেত্রে গাঁদা ফুল ব্যবহারের আগে ভালো করে পাপড়িগুলো ধুয়ে নিতে হবে। পরের ধাপে এর থেকে নির্যাস বের করে নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে একটি গাঁদা ফুল ব্যবহার করে মোট তিনটি উপকরণ তৈরি করা যাবে। এ ক্ষেত্রে গাঁদা ফুল পেস্ট করে তাতে বেসন আর শসার রস মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে নিতে পারেন। 

অন্যদিকে যেহেতু গাঁদা ফুল যে কোনো ত্বকে ব্যবহার করা যায় তাই শীতের এ পরিবর্তনের সময় গাঁদা ফুল সবচেয়ে ভালো একটি মাধ্যম হতে পারে ত্বকের যত্নে। অন্যদিকে গাঁদা ফুলের রস বের করে তাতে পুদিনা পাতার রস আর মুলতানি মাটি মিশিয়ে পেস্ট করে তা ব্রণের জায়গাগুলোতে লাগালে বেশ ভালো ফল পাওয়া যায়। এছাড়া আরও একটি উপকারী উপাদান হচ্ছে গাঁদা ফুলের তেল। এ উপকরণটি তৈরি করতে গাঁদা ফুলের পাপড়ি ভালো করে শুকিয়ে নিতে হবে। 

অবশ্যই স্বাভাবিক তাপমাত্রায় শুকিয়ে নিতে হবে। এর পরের ধাপে চার কাপ শুকনো গাঁদা ফুল আর দুই কাপ নারিকেল কিংবা অলিভ ওয়েল মিশিয়ে ভালো করে দশ মিনিট জ্বাল দিতে হবে। মিশ্রণটি ঠান্ডা হয়ে এলে কাচের বোতলে গ্লিসারিন আর গোলাপ জল মিশিয়ে রেখে দেওয়া যাবে বেশ কয়েকদিন। এ মিশ্রণটি রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে হাতে-মুখে স্প্রে করে ময়েশ্চারাইজারের মতো ব্যবহার করা যাবে। 

এটি মূলত যাদের ত্বকে র‌্যাশ কিংবা বেশ রুক্ষ হয়ে থাকে তাদের জন্য খুব ভালোভাবে কাজ করে থাকে। তবে লক্ষ রাখতে হবে যাতে এ মিশ্রণ কেবল রাতেই ব্যবহার করা হয়।

ত্বকের পাশাপাশি চুলেরও যত্ন প্রয়োজন ঋতু পরিবর্তনের এ সময়ে। বসন্তের আগমনের আগে আগে চুলে প্রায়শই খুশকির সমস্যা কম-বেশি সবারই চোখে পড়ে। 

এ ক্ষেত্রে এক কাপ গাঁদা ফুলের রসের সঙ্গে এক টেবিল চামচ মেথি এবং মৌরি ভিজিয়ে রাখতে হবে সারা রাত। পরের দিন তা পেস্ট করে স্কাল্পে লাগিয়ে রাখলেই খুশকির সমস্যা থেকে খুব সহজেই মিলবে ঘরোয়া সমাধান। এছাড়া আরও আছে জবা ফুল। চুল পাকা রোধে ছয়টি জবা ফুল, এক কাপ আমলকী আর চার কাপ পানি মিসিয়ে জ্বাল দিতে হবে। যখন মিশ্রণটি এক কাপে ঘন হয়ে আসবে তখন নামিয়ে ঠান্ডা করে নিতে হবে। 

গোসলের আগে শ্যাম্পু করা পরিষ্কার স্কাল্পে এ তরল মিশ্রণটি ব্যবহারে গোসল করে শ্যাম্পু করে নিলেই চুলে ফিরে পাবেন আগের সেই উজ্জ্বলতা।