যেভাবে সালাত মুমিনের মেরাজ
অত্যাবশ্যকীয় ইবাদত হিসেবে একজন মুসলমানকে প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করতে হয়। ইমান আনার পর নামাজ আদায় মুমিনের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ আমল।
ঘরে-বাইরে, পথে-ঘাটে, দেশে-বিদেশে, সাগরে-মহাকাশে যেখানেই অবস্থান করুক না কেন, মুমিনকে নামাজ আদায় করতেই হবে।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, নির্ধারিত সময়ে সালাত আদায় করা মুমিনদের জন্য আবশ্যক। (সুরা নিসা: ১০৩)
হজরত মুহাম্মদ (স.) বলেন, যার মধ্যে সালাত নেই, তার ভেতর দীনের কোনো অংশ নেই। (মুসনাদে বাজ্জার: ৮৫৩৯)
রাসুল (স.) বলেছেন, কোনো মুমিন ব্যক্তি এবং শিরক ও কুফরের মধ্যে পার্থক্য হলো সালাত ত্যাগ করা। (মুসলিম)
অন্য একটি হাদিসে হজরত মুহাম্মদ (স.) বলেছেন, আমাদের ও তাদের মধ্যে পার্থক্য হলো সালাত। যে তা পরিত্যাগ করল সে কাফের হয়ে গেল। (মুসনাদে আহমাদ)
‘সালাত মুমিনের জন্য মেরাজস্বরূপ’ একটি বহুল প্রচলিত উক্তি। আরবিতে বলা হয় আসসালাতু মিরাজুল মুমিনিন। অনেকে এটিকে হাদিস হিসেবে উল্লেখ করলেও হাদিসের প্রসিদ্ধ কোনো গ্রন্থে এর সত্যতা পাওয়া যায় না। তবে একাধিক বিশুদ্ধ হাদিস দ্বারা কথাটির মর্মার্থ প্রমাণিত। তাই বাক্যটিকে সরাসরি হাদিস না বলে বলা উচিত- বাক্যটি হাদিস দ্বারা সমর্থিত।
নিম্নোক্ত হাদিস দুটিতে ‘সালাত মুমিনের জন্য মিরাজস্বরূপ’ বাক্যটির সমর্থন পাওয়া যায়।
হাদিসে ‘সালাত মুমিনের জন্য মিরাজস্বরূপ’ বাক্যটির সমর্থন- আনাস ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, মুমিন যখন সালাতে থাকে সে তার প্রতিপালকের সঙ্গে নিভৃতে কথা বলে। (সহিহ বুখারি: ৪১৩)
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, তোমাদের কেউ সালাতে দাঁড়ালে সে তার সামনের দিকে থুথু ফেলবে না। কেননা, সে যতক্ষণ তার জায়নামাজে থাকে, ততক্ষণ মহান আল্লাহর সঙ্গে চুপে চুপে কথা বলে। (সহিহ বুখারি: ৪১৬)
সুতরাং ‘সালাত মুমিনের জন্য মেরাজস্বরূপ’ কথাটি সরাসরি হাদিস বলা যাবে না। তবে এ কথা সত্য যে, সালাতের সঙ্গে মেরাজের একটা সম্পর্ক আছে। কেননা পাঁচ ওয়াক্ত সালাত মেরাজের রাতে ফরজ হয়েছিল। (বুখারি: ৩৮৮৭; মুসলিম: ১৬২, ১৬৪)
আল্লাহ মুসলিম উম্মাহকে প্রত্যেক দিন যথাযথভাবে পাঁচবার সালাত আদায় করার তাওফিক দান করুন। সেই সঙ্গে হাদিস প্রচারের ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করার তাওফিক দিন। আমিন।