বিয়ের পরে নব দম্পতির বেড়াতে যাওয়াকে কেন ‘হানিমুন’ বলে?

বিয়ের পরে নব দম্পতির বেড়াতে যাওয়াকে কেন ‘হানিমুন’ বলে?

বিয়ের পর বেশিরভাগ মানুষই তাদের পছন্দের হিল স্টেশন বা অন্য কোনো জায়গায় বেড়াতে যান। বিয়ের পরে যুগলে এই প্রথম বেড়াতে যাওয়া আমাদের কাছে পরিচিত হানিমুন নামে। কিন্তু, নব বিবাহিত দম্পতির এই একসঙ্গে ঘুরতে যাওয়াকে হানিমুন বলে কেন? এর সঙ্গে কি চাঁদ অথবা মধুর কোনও সম্পর্ক আছে?

আপনি কি জানেন ‘মধুচন্দ্রিমা’ শব্দের উৎপত্তির গল্প? কোথা থেকে এসেছে এই শব্দ? প্রথমত, এই শব্দের সঙ্গে ভারতের কোনও সম্পর্ক নেই৷ হানিমুন শব্দটি প্রাচীন ইংরেজি শব্দ Hony and Moone থেকে এসেছে।

হানিমুন শব্দে Hony মানে নতুন বিয়ের মাধুর্য ও সুখ। তাই বিয়ের পরপরই অনুভূত সুখ এই শব্দের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। এছাড়া, ইউরোপে বিয়ের সময় নবদম্পতিকে মধু ও জল দিয়ে তৈরি মদ পরিবেশন করা হয়। তাই বিয়ের পরের সময়টা মধুর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে।

হানিমুনে মুন শব্দটি শারীরিক চক্রকে বোঝায়। এটি এমন একটি সময়, যখন মানব শরীরে বেশ কিছু পরিবর্তন ঘটে। আসলে, সময় গণনা করা হয়েছে শুধুমাত্র চাঁদের ভিত্তিতে। এখন উভয় শব্দের মিশ্রণে তৈরি মধুচন্দ্রিমায় Hony মানে সুখ আর Moone মানে সময়। সহজ কথায়, বিয়ের পরের সময়টা আনন্দের।

বিয়ে ও দাম্পত্য জীবনের পরের সুখী সময়কে হানিমুন পিরিয়ডও বলা হয়। সাধারণভাবে বলতে গেলে, যখনই কোনও দম্পতি বিয়ের পরে উপভোগ করেন, তখনই তাকে হানিমুন বলা হয়। যাইহোক, এর অর্থ এই নয় যে দম্পতি বিয়ের পরে বেড়াতে যায়। নবদম্পতি বেড়াতে যান বা না যান, বিয়ের কয়েকদিন পরের সময়কে হানিমুন বলা হয়।

বিয়ের পরের পক্ষকালকে হানিমুন বলা হয়। ফরাসি ভাষায় একে বলা হয় lune de miel. জার্মান ভাষায় একে বলা হয় flitterwhochen. হানিমুন শব্দটি ফ্রান্সে ১৮ শতক থেকে ব্যবহৃত হয়। যাইহোক, ১৯ শতকে, এই শব্দটি প্রচুর ব্যবহৃত হতে শুরু করে। বিভিন্ন দেশ এবং সংস্কৃতির মধুচন্দ্রিমা সময় কাটানোর বিভিন্ন ঐতিহ্য রয়েছে।

ওয়ার্ল্ডওয়াইড ওয়ার্ডস ওয়েবসাইটের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হানিমুন শব্দটি ১৬ শতকে রিচার্ড হুলট নামে একজন ব্যক্তি প্রথম ব্যবহার করেছিলেন। কিছু লোক বিশ্বাস করে যে মধুচন্দ্রিমা শব্দটি প্রথম ব্যাবিলনে ব্যবহৃত হয়েছিল। এটি প্রায় ৪০০০ বছর ধরে ব্যবহৃত হচ্ছে। আসলে, ব্যাবিলনে বিয়ের পরে কনের বাবা বিয়ের এক মাস পরে বরকে উপহার হিসেবে মধু দিয়ে তৈরি ওয়াইন পাঠাতেন। এটি চান্দ্র ক্যালেন্ডার অনুসারে দেওয়া হত। এই মাসটিকে ব্যাবিলনে মধু মাস বলা হত। ধীরে ধীরে সেটাই মধুচন্দ্রিমা নামে পরিণত হয়।