পবিত্র কুরআনের সপ্তম পারার সারাংশ
★আল্লাহতায়ালা হালাল ও বৈধ রিজিক ভক্ষণ করতে বলেছেন
সুরা মায়েদার ৮৮ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন, আর আল্লাহ তোমাদের যা দান করেছেন, তন্মধ্যে হালাল ও পবিত্র বস্তুগুলো আহার কর এবং আল্লাহকে ভয় কর, যার প্রতি তোমরা বিশ্বাসী।
★ প্রথমে নিজের হেদায়েতের কথা ভাবা উচিত
একই সুরার ১০৫ নম্বর আয়াতে আল্লাহতায়ালা বলেন, হে মুমিনগণ! তোমাদের (সংশোধন করার) দায়িত্ব তোমাদের, যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে তারা তোমাদের কোনো ক্ষতি করতে পারবে না, যদি তোমরা দ্বীনের পথে চল; তোমরা সবাই আল্লাহরই সমীপে প্রত্যাবর্তিত হবে, অতঃপর তোমরা যা কিছু করছিলে সে সম্পর্কে তিনি তোমাদের অবহিত করবেন।
★আল্লাহর সন্তুষ্টি সবচেয়ে বড় সফলতা
১১৯ ও ১২০ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন, আল্লাহ বলবেনঃ এটি সেই দিন যেদিন সত্যবাদীদের সত্যবাদিতা কাজে আসবে, তারা উদ্যানপ্রাপ্ত হবে, যার তলদেশে নহরসমূহ বইতে থাকবে, আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন এবং তারাও আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট; এটাই হচ্ছে মহাসফলতা। আল্লাহরই জন্য অধিপত্য রয়েছে নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডল এবং ওই সব কিছুর যা এতদুভয়ের মাঝে বিদ্যমান; আর তিনি সকল বিষয়ে পূর্ণ ক্ষমতাবান।
★ কে কতদিন বাঁচবে তা আল্লাহ নির্ধারণ করে রেখেছেন
সুরা আনআমের ২ নম্বর আয়াতে আল্লাহতায়ালা বলেন, অথচ তিনি তোমাদের মাটি হতে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তোমাদের জীবনের জন্য একটি নির্দিষ্ট মেয়াদ নির্ধারণ করেছেন। এ ছাড়া আরও একটি নির্দিষ্ট মেয়াদ তার নিকট নির্ধারিত রয়েছে, কিন্তু এর পরও তোমরা সন্দেহ করে থাক।
★ মানুষ আল্লাহ থেকে কিছুই গোপন করতে পারে না
এই সুরার ৩ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন, আকাশসমূহ ও পৃথিবীতে ওই এক আল্লাহই রয়েছেন, তোমাদের অপ্রকাশ্য ও প্রকাশ্য সব অবস্থাই তিনি জানেন, আর তোমরা যা কিছু কর তাও তিনি পূর্ণরূপে অবগত আছেন।
★ গুনাহ থেকে বাঁচলে জান্নাতে হবে প্রাসাদ
সুরা আনআমের ৩২ নম্বর আয়াতে আল্লাহতায়ালা বলেন, এই পার্থিব জীবন খেল-তামাশা ও আমোদপ্রমোদের ব্যাপার ছাড়া আর কিছুই নয়, যারা তাকওয়া অবলম্বন করে, পরকালের জীবনই হবে তাদের জন্য উৎকৃষ্টতর। তোমরা কি চিন্তাভাবনা করবে না?
★ সব ধরনের জ্ঞান কেবল মহান আল্লাহরই আছে
৫৯ ও ৬০ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন, অদৃশ্য জগতের চাবিকাঠি তারই নিকট রয়েছে; তিনি ছাড়া আর কেহই তা জ্ঞাত নয়। পৃথিবীতে ও সমুদ্রের সব কিছুই তিনি অবগত আছেন, তার অবগতি ব্যতীত বৃক্ষ হতে একটি পাতাও ঝরে পড়ে না এবং ভূ-পৃষ্ঠের অন্ধকারের মধ্যে একটি দানাও পতিত হয় না, এমনিভাবে কোনো সরস ও নিরস বস্তুও পতিত হয় না; সব কিছুই সুস্পষ্ট কিতাবে লিপিবদ্ধ রয়েছে।
আর সেই মহান সত্তা রাতে নিদ্রারূপে তোমাদের এক প্রকার মৃত্যু ঘটিয়ে থাকেন, আর দিনের বেলা তোমরা যে পরিশ্রম কর তিনি সেটিও সম্যক পরিজ্ঞাত; অতঃপর তিনি নির্দিষ্ট সময়কাল পূরণের নিমিত্ত তোমাদের নিদ্রা থেকে জাগিয়ে থাকেন, পরিশেষে তার কাছেই তোমাদের ফিরে যেতে হবে, তখন তিনি তোমাদের তোমাদের কৃতকর্ম সম্পর্কে অবহিত করবেন।
★ নামাজে গুরুত্ব দাও ও আল্লাহকে ভয় কর
সুরা আনআমের ৭২ ও ৭৩ নম্বর আয়াতে আল্লাহতায়ালা বলেন, আর তুমি নিয়মিতভাবে সালাত কায়েম কর এবং সেই রবকে ভয় করে চলো, যার নিকট তোমাদের সবাইকে সমবেত করা হবে। সেই সত্তা আকাশমণ্ডল ও ভূমণ্ডলকে যথাযথভাবে সৃষ্টি করেছেন। যেদিন তিনি বলবেন, ‘হাশর হও‘, সেদিন হাশর হয়ে যাবে। তার কথা খুবই যথার্থ বাস্তবানুগ। যেদিন শিঙ্গায় ফুঁৎকার দেওয়া হবে, সেদিন একমাত্র তারই হবে বাদশাহী ও রাজত্ব। গোপন ও প্রকাশ্য সব কিছু তার জ্ঞানায়ত্তে। তিনি হচ্ছেন প্রজ্ঞাময়, সর্ববিদিত।
★ অন্য ধর্মের উপাস্যদের গালমন্দ করা অনুচিত
মহান আল্লাহতায়ালা সুরা আনআমের ১০৮ নম্বর আয়াতে বলেন, এরা আল্লাহকে বাদ দিয়ে যাদের এবাদাত (পূজা-অর্চনা) করে তোমরা তাদের গালাগালি কর না, তা হলে তারা অজ্ঞতাবশত বৈরীভাবে আল্লাহকেই গালাগালি দিতে শুরু করবে। আমি তো এ রূপেই প্রতিটি জনগোষ্ঠীর জন্য তাদের ‘আমলকে চাকচিক্যময় করে দিয়েছি। শেষ পর্যন্ত তাদেরকে তাদের রবের কাছে ফিরে যেতে হবে, তখন তারা কী কী কাজ করেছিল তা তিনি তাদের জানিয়ে দেবেন।
দ্বীনিয়াত বাংলাদেশের গবেষণা বিভাগ থেকে অনূদিত