কালকিনিতে আমন ধানের বাম্পার ফলন ॥ কৃষকের মুখে হাসি

কালকিনিতে আমন ধানের বাম্পার ফলন ॥ কৃষকের মুখে হাসি

মো. জাফরুল হাসান, কালকিনি

মাদারীপুরের কালকিনিতে সংশয় ছাপিয়ে চলতি মৌসুমে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলে কৃষকদের মনে আনন্দ বিরাজ করছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং সঠিক পরিচর্যার ফলে আশানুরূপ ফলন হয়েছে। তবে চলতি আমন মৌসুমের শুরুতে অনাবৃষ্টি ও অতিবর্ষণের ফলে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে সংশয়ে ছিলেন উপজেলার কৃষকেরা। কিন্তু সব শঙ্কা ছাপিয়ে এবার আমনের ভালো ফলন পেয়ে কৃষকদের মধ্যে আশার সঞ্চার হয়েছে। একই সঙ্গে বাজারে দাম ভালো হওয়ায় কৃষকেরা খুশি। আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার এনায়েতনগর গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে এমন চিত্র। এদিকে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মিল্টন বিশ^াস কৃষকদের সাথে মাঠে গিয়ে ধান কাটার মধ্যেদিয়ে নবান্ন উৎসব করেছেন। 

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন অর্ধিদপ্ত সুত্রে জানা গেছে, চলতী বছরে কৃষি বিভাগের আওতায় উপজেলায় প্রায় ৮ হাজার ৪শত হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ করা হয়েছে। এতে লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪১৮৭৫ মেট্রিক টন, আশাকরি আমাদের লক্ষ্য মাত্রার চেয়েও অধিক ফসল উৎপাদন হবে। চলতী বছরে ধানের জাতের মধ্যে রয়েছে বি.আর-১১, বিনা-৭, বিনা-১৭, ব্রিধান-৫১, ব্রিধান-৪১, ব্রিধান-৫২, ব্রিধান-৭৫, ব্রিধান-৮৭, ব্রিধান-৯১, ব্রিধান-৮০, বিনা-২০ ও ১৭ জাতের ধান। তবে আমরা এই জাতের ধান চাষ ছরিয়ে দিতে পারলে আমাদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাবে। ইতি মধ্যে ধান কাটার মধ্যেদিয়ে আমাদের নবান্ন উৎসব শুরু হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার ১৫ টি ইউনিয়নে কৃষি জমিতে আমন ধানের ফলন ভালো হয়েছে। মাঠে মাঠে চলছে ধান কাটার মহোৎসব। ধানের রোগবালাই খুব কম থাকায় ফলন এই বছরটা আশার চেয়ে বেশি হয়েছে। সাধারণত অগ্রহায়ণ মাসের দিকে আমন ধান কাটা হয়। এবার অনেক মাঠেই এক মাস আগেই এই ধান পাকতে শুরু করেছে। সব খরচ বাদ দিয়ে এবার লাভবান হবেন বলে আশা করছেন কৃষকরা।

এনায়েতনগর এলাকার কৃষক রফিক হাওলাদার জানান, আমন মৌসুমের শুরুতে খরা ও অনাবৃষ্টি-অতিবর্ষণের ফলে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে সংশয়ে ছিলাম কিন্তু পরবর্তীতে আবহাওয়া অনুকূলে আসে। তাই আমাদের আমন ধান চাষে তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি।

উপজেলার উপসহকারী কৃষি কমকর্তা সঞ্জয় বাড়ৈ বলেন, এ বছর 'ব্রি ধান ৮৭ ও বিনা ধান ৭৫ চাষ করে কৃষকরা অনেক ভালো ফলন পেয়েছে।  

উপজেলা কৃষি কমকর্তা মিল্টন বিশ্বাস বলেন, আমন মৌসুমে কম সময়ে অধিক ফলন হয় এমন জাতের ধানের আবাদ বৃদ্ধির জন্য আমরা কাজ করছি। চলতি আমন মৌসুমে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যের বীজ ধান ও সার বিতরণ করেছি। নতুন জাতগুলোর প্রায় শতাধিক প্রদর্শনী দেওয়া হয়েছে।